সংক্ষিপ্ত
সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু প্রতিভা অনুযায়ী সাফল্য পেলেন না আগরতলার বাঙালি জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকার। নিষিদ্ধ বস্তু গ্রহণের দায়ে নির্বাসিত হওয়ার পর তাঁর কেরিয়ারই শেষ হতে চলেছে।
দেশজোড়া প্রচার, সংবর্ধনা, পুরস্কারে কি মাথা ঘুরে গিয়েছিল দীপা কর্মকারের? সেই কারণেই কি রিও অলিম্পিক্সে জিমন্যাস্টিকসে চতুর্থ হওয়ার পর থেকে আর তেমন কোনও সাফল্য পেলেন না আগরতলার এই বাঙালি জিমন্যাস্ট? নিষিদ্ধ বস্তু গ্রহণের অভিযোগে নির্বাসিত হয়েছেন তিনি। বয়স এখন ২৯ বছর। ফলে নির্বাসনের মেয়াদ কাটানোর পর ফিরে আসা খুব কঠিন। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কোনও বড়মাপের প্রতিযোগিতায় যোগ দিতেও দেখা যায়নি দীপাকে। তিনি অন্য সব কাজকর্মে নিজেকে ব্য়স্ত রেখেছেন। ফলে এই জিমন্যাস্টের কেরিয়ার প্রায় শেষ। রিও অলিম্পিক্সের পর দীপা বলেছিলেন, টোকিওতে সোনা জেতাই তাঁর লক্ষ্য। কিন্তু টোকিও অলিম্পিক্সের যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেননি তিনি। ২০২৪ সালে প্যারিস অলিম্পিক্সেও যোগ্যতা অর্জন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না। ফলে এক প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ যে সাফল্য পাবেন বলে আশা করা হচ্ছিল সেই সাফল্য না পেয়েই থেমে যাচ্ছেন।
২০১৪ সালে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে ভল্ট ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতে প্রথমবার দেশজোড়া প্রচার পান দীপা। এরপর ২০১৫ সালে হিরোশিমায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও ব্রোঞ্জ পান এই জিমন্যাস্ট। প্রথম ভারতীয় মহিলা জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সে ভল্ট ইভেন্টে যোগ্যতা অর্জন করেন দীপা। রিও অলিম্পিক্সে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখালেও, ফাইনালে সামান্য ভুল করে তিনি চতুর্থ হন। তারপরেও তাঁকে পদকজয়ীদের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। রিও থেকে দেশে ফিরে সংবর্ধনার জোয়ারে ভেসে যান দীপা। সরকারের পক্ষ থেকে যেমন সংবর্ধনা, চাকরি-সহ নানা সম্মান দেওয়া হয়, তেমনই বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও তাঁকে সম্মানিত করে। এসবেই হয়তো নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেননি দীপা।
রিও অলিম্পিক্সের পর দীপার সাফল্য বলতে ২০১৮ সালে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকস ওয়ার্ল্ড কাপে সোনা ও ব্রোঞ্জ। এরপর আর কোনও প্রতিযোগিতায় সাফল্য পাননি এই জিমন্যাস্ট। রিও অলিম্পিক্সের পর তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী জানিয়েছিলেন, তাঁরা নতুন একটি ভল্টের প্রচলন করতে চাইছেন। দীপাই প্রথম এই ভল্ট চালু করবেন। এই ভল্ট যাতে 'কর্মকার ভল্ট' নামে বিখ্যাত হয়ে ওঠে সেই চেষ্টা করবেন তাঁরা। কিন্তু সেটা আর হয়নি। চোট পাওয়ায় দীপার পক্ষে নতুন কিছু করা সম্ভব হয়নি। এবার তিনি নির্বাসিত হলেন। ফলে এক সম্ভাবনার সমাপ্তি ঘটল। দীপাকে হয়তো আর কোনও প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে দেখা যাবে না। তিনি খেলার বাইরে নানা কাজে ব্যস্ত থাকবেন।
আরও পড়ুন-
অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিন বাঙালি কন্যার সাফল্যে খুশির জোয়ার পরিবারে
কলকাতায় ফিরলেন তিতাস সাধু, হৃষিতা বসু, বিমানবন্দরে স্বাগত জানালেন সিএবি কর্তারা
টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের জন্য তিতাস, শেফালিদের সংবর্ধনা, ৫ কোটি টাকা পুরস্কার