সংক্ষিপ্ত

আত্মহত্যা করলেন কেরালার লিঙ্গ পরিবর্তনকারী বডিবিল্ডার প্রবীণ নাথ। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার জেরেই তিনি চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

বিয়ের পর ৩ মাসও কাটেনি, এরই মধ্যে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা শুরু হয়। এরই জেরে আত্মহত্যা করলেন কেরালার লিঙ্গ পরিবর্তনকারী বডিবিল্ডার প্রবীণ নাথ। তাঁর স্ত্রী রিশানা আইশুও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রবীণের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনার জেরে কয়েকদিন ধরেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে সরাসরি আক্রমণও করা হয়। এরই জেরে আত্মহত্যা করলেন এই বডিবিল্ডার। তিনি ফেসবুক পোস্টে বিবাহ বিচ্ছেদের কথা অস্বীকার করেন। কিন্তু তারপরেও আক্রমণের মুখে পড়ে আত্মহত্যা করলেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রবীণ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ত্রিসূর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন বৃহস্পতিবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই খবর পাওয়ার পর শুক্রবার আরশোলা মারার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রবীণের স্ত্রী আইশু। তিনি এখন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি। তাঁর চিকিৎসা চলছে। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন প্রবীণ ও আইশু। এর কিছুদিন পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। অনেকেই দাবি করতে থাকেন, প্রবীণ ও আইশুর বিবাহ বিচ্ছেদ হতে চলেছে। এর জেরে মানসিক সমস্যা শুরু হয় প্রবীণের। শেষপর্যন্ত চাপ নিতে না পেরে তিনি আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রবীণের আত্মহত্যার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণকেই দায়ী করেছেন কেরালার লিঙ্গ পরিবর্তনকারীরা। তাঁরা কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ও ডিজিপি অনিল কান্তের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছে কেরালার লিঙ্গ পরিবর্তনকারীদের সংগঠন।

২০২১ সালে লিঙ্গ পরিবর্তনকারী হিসেবে 'মিস্টার কেরালা' খেতাব জেতেন প্রবীণ। ২০২২ সালে তিনি একটি আন্তর্জাতিক বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যান। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাফল্য পাওয়ায় তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। কিন্তু তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলের শিকার হতে হল। 

প্রবীণ জানিয়েছিলেন, ১৫ বছর বয়সে তিনি প্রথম বুঝতে পারেন, তাঁর মধ্যে নারীসত্ত্বা নেই। বরং তিনি নিজেকে পুরুষ হিসেবেই দেখেন। সেই কারণেই তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। ২০১৮ সালে এর্নাকুলামের মহারাজা কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান প্রবীণ। তাঁর পাশাপাশি আরও ২ জন লিঙ্গ পরিবর্তনকারীও স্নাতক স্তরে পড়ার সুযোগ পান। কেরালা সরকার সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে লিঙ্গ পরিবর্তনকারীদের জন্য অতিরিক্ত আসনের ব্যবস্থা করে। এর ফলেই কলেজে পড়ার সুযোগ পান প্রবীণরা। 

আরও পড়ুন-

ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন অনুরাগ ঠাকুর, দাবি কুস্তিগীরদের

Wrestlers Protest: কুস্তিগীরদের সঙ্গে দেখা করলেন, সাহায্যের আশ্বাস পিটি ঊষার

জ্যাংড়া জাগৃতি সংঘে কোরিয়ান মার্শাল আর্ট হাপকিডো-র টেকনিক্যাল সেমিনার