সংক্ষিপ্ত

প্রয়াত  কিংবদন্তী (Legend) হকি প্লেয়ার (Hockey Player) চরণজিৎ সিং (Charanjit Singh)। দীর্ঘ রোগভোগে ভোগার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। জেনে নিন ভারতীয় হকিতে (Indian Hockey) তারঁ অবদান।
 

ভারতীয় হকি দলের (Indian Hockey Team) স্বর্ণ যুগের অন্যতম কাণ্ডারি। সাফল্যের ঝুলিতে রয়েছে সোনা সহ দুটি  অলিম্পিক্স (Olympics) মেডেল। এশিয়ান গেমসেও (Asian Games)জিতেছেন মেডেল। ভারতীয় দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। হকি স্টিক হাতে ভারতের বহু যদ্ধ জয়ের 'সেনাপতি' তিনি। এমনই এক নক্ষত্রের পতন হল ২৭ জানুয়ারি ২০২২। প্রয়াত হলেন ভারতীয় হকির (Indian Hockey) কিংবদন্তী (Legend) চরণজিৎ সিং (Charanjit Singh)। বয়স জনিত অসুস্থতার সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াইয়ের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। মৃত্যুকালে চরণজিৎ সিংয়ের বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। ৫ বছর আগে একবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়িছিলেন কিংবদন্তী হকি প্লেয়ার। তারপর থেকেই প্য়ারালাইসড ছিলেন তিনি।  শেষ কয়েক মাস তার শীরীরিক অবস্থার খুবই অবনতি হয়েছিল। অবশেষে তাঁর প্রয়াণের খবরে শোকস্তব্ধ ভারতীয় হকি থেকে ক্রীড়া মহল।

ব্রিটিশ শাসিত ভারত বর্ষে ১৯১৩১ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন চরণজিৎ সিং। ছোট বেলা থেকেই খেলাধুলা ও শাীরির শিক্ষার প্রতি খুবই মনোযোগ ছিল তাঁর। ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে গিয়েছেন খেলাধুলা। পড়াশোনা করেছেন দেরাদুনের কলোনেল ব্রাউন কেমব্রিজ স্কুলে। তখন থেকেই হকি খেলতেন তিনি। এরপর পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেরেছেন উচ্চশিক্ষা। চাকরি পেয়েছিলেন হিমাচল প্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরশিক্ষা বিভাগের ডিরেক্টর হিসেবে। কিন্তু হকির প্রতি অগাধ ভলোবাসা ও দুরন্ত দক্ষতা ছিল তার মধ্যে। ঘরোয়া হকিতে ভালো পারফরমেন্সের পর সুযোগ পান ভারতীয় দলে। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি চরণজিৎ সিংকে। অল্প সময়ের মধ্যেই ভারতীয় হকির স্টার ও কিংবদন্তী হয়ে ওঠেন তিনি।

১৯৬০ সালের রোম অলিম্পিকে ভারতীয় হকি দলের গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার ছিলেন চরণজিৎ সিং। সেবার ফাইনালে উঠেও পাকিস্তানের কাছে ১-০ গোলে হারতে হয়েছিল ভরতকে। সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল রুপো নিয়ে। গোটা প্রতিযোগিতায় দুরন্ত হকি খেললেও ফাইনালে চোটের কারণে খেলতে পারেননি চরণজিৎ সিং। রুপো জিতলেও সোনা অধরা থাকার  আফশোস থেকে গিয়েছিল চরণজিৎ সিংয়ের। সেই প্রতিশোধ নিয়েছিলেন ৪ বছর পর ১৯৬৪ টোকিও অলিম্পিক্সে। অধিনায়ক হিসেবে শুধু দলকে ফাইনালে তোলাই নয়, ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে জিতেছিলেন সোনা। এছাড়া ১৯৬২ সালে এশিয়ান গেমসে রুপো জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন চরণজিৎ সিং। একের পর এক সাফল্য তাকে ভারতীয় হকির কিংবদন্তী করে তোলে।

 

 

 

 

জানা গিয়েছে ৫ বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন চরণজিৎ সিং। তারপর থেকেই লাঠি ছাড়া চলাফেরা করতে পারতেন না। শেষের দিকে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে অবস্থা আরও শোচনীয় হয় কিংবদন্তী হকি প্লেয়ারের। অবশেষে হিমাচল প্রদেশের উনায় নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চরণজিৎ সিং। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গেলেন দুই পুত্র ও এক কন্যাকে। ১২ বছর আগে স্ত্রী প্রয়াত হন। পুত্র, কন্যারা আসার পর  বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় কিংবদন্তী হকি প্লেয়ারের। চরণজিৎ সিংয়ের মৃত্যুর সঙ্গে ভারতীয় হকিতে শেষ হল এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের।