আগ্রার জোনাল পার্কে তৈরি হতে চলা ‘গীতা গোবিন্দ বাটিকা’ ব্রজের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয়কে পর্যটনের সাথে যুক্ত করার উদ্যোগ। থিম লাইটিং, লেজার শো, রাসলীলা মঞ্চায়ন এবং তুলসী বন এই প্রকল্পটিকে আগ্রাকে একটি ওভারনাইট ডেস্টিনেশন বানাতে সাহায্য করবে।

আগ্রা। যোগী সরকার ব্রজ অঞ্চলের পর্যটনকে শুধু ঐতিহাসিক সৌধের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, এটিকে ব্রজের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের সাথে যুক্ত করে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তুলছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তাজনগরী ফেজ-২-এর জোনাল পার্কের ১৯ একর জায়গায় ‘গীতা গোবিন্দ বাটিকা’ তৈরি করা হচ্ছে। এই বাটিকার মূল উদ্দেশ্য হলো তাজমহল এবং অন্যান্য সৌধ দেখতে আসা পর্যটকদের রাতে থাকার জন্য আকর্ষণ করা এবং তাদের ব্রজের ধর্মীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করানো।

সরকারি অংশীদারিত্বে তৈরি হচ্ছে ‘গীতা গোবিন্দ বাটিকা’

মুখ্যমন্ত্রী পর্যটন বিকাশ সহভাগিতা যোজনার অধীনে এই বাটিকাটি প্রায় ₹৪.২০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫০% খরচ রাজ্য সরকার এবং বাকি ৫০% খরচ আগ্রা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ADA) বহন করছে। এই তহবিল থিম লাইটিং এবং একটি জমকালো লেজার শো তৈরির জন্য ব্যবহার করা হবে, যা রাতে পর্যটকদের জন্য একটি নতুন আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।

আগ্রা পাচ্ছে সাংস্কৃতিক পর্যটনের নতুন রূপ

ADA-এর ভাইস-চেয়ারপার্সন এম. অরুণমোলি বলেছেন যে সরকারের লক্ষ্য আগ্রাকে শুধু একটি ঐতিহাসিক শহর হিসেবে নয়, সাংস্কৃতিক পর্যটনের একটি প্রধান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি জানান, ‘গীতা গোবিন্দ বাটিকা’ এই চিন্তাভাবনারই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এতদিন পর্যটকরা আগ্রায় শুধু দিনের বেলায় সৌধ দেখতেন, কিন্তু এই বাটিকা তাদের রাতে থাকার জন্য একটি সুন্দর ও সাংস্কৃতিক জায়গা দেবে। পর্যটকদের রাত্রিবাস বাড়লে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।

আস্থা, প্রকৃতি এবং ব্রজ সংস্কৃতির মিশেল

বাটিকার ভেতরে দুই একর জায়গায় একটি বড় মুক্তমঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে ভগবান কৃষ্ণের লীলা, রাসলীলা এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নিয়মিত আয়োজন করা হবে। ধর্মীয় ভাবাবেগ মাথায় রেখে এখানে কৃষ্ণযুগের গাছপালা লাগানো হচ্ছে। এর সাথে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গীতার উপদেশ আকর্ষণীয় তৈলচিত্র এবং শিলালিপিতে খোদাই করা হচ্ছে। এছাড়া, এক একর জমিতে একটি বিশেষ তুলসী বন তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে ১০০ প্রজাতির তুলসী গাছ থাকবে। দর্শনার্থীদের এই সমস্ত প্রজাতির ঔষধি গুণাবলী সম্পর্কেও जानकारी দেওয়া হবে।

পর্যটন শিল্পে প্রত্যাশা বাড়ছে

আগ্রা ট্যুরিজম গিল্ডের সভাপতি অমূল্য কক্কর এই প্রকল্পকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন যে এই পদক্ষেপ পর্যটন শিল্পের জন্য একটি বড় পরিবর্তন আনবে। তিনি বলেন, এতদিন আগ্রাকে ওয়ান-ডে ডেস্টিনেশন হিসেবে বিবেচনা করা হতো, কিন্তু ‘গীতা গোবিন্দ বাটিকা’ এটিকে ওভারনাইট ডেস্টিনেশন বানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রাতে আয়োজিত সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পর্যটকদের থাকতে উৎসাহিত করবে এবং এর ফলে হোটেল, রেস্তোরাঁ, গাইড পরিষেবা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সরাসরি উপকৃত হবেন। তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগ আগ্রাকে একটি নতুন পর্যটন অভিজ্ঞতা দেবে এবং যোগী সরকারের নীতির অধীনে ব্রজের সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী একটি শক্তিশালী পরিচয় দেবে।