ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরির নতুন কৌশলে ফাঁসছেন অসংখ্য ব্যবহারকারী। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সংগঠিত এই প্রতারণা এখন পরিচিত ‘হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিন-শেয়ারিং প্রতারণা’ নামে।

ঘুম ভাঙতেই কাছের মানুষের মেসেজ, ‘১৫০০০ টাকা হবে? আগামিকাল সকালেই ফেরত দেব।’ স্বাভাবিকভাবেই আপনি কিছু না ভেবেই টাকা পাঠালেন। কিন্তু জানেন কি এই মেসেজেই লুকিয়ে বিপদ! ফাঁকা হতে পারে আপনার অ্যাকাউন্ট! কারণ, আদৌ আপনার প্রিয়জন পাঠাননি মেসেজটা। তাহলে কে পাঠালো??

'হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিন-শেয়ারিং প্রতারণা’ সম্পর্কে কি আপনি জানেন? ইদানিংকালে কৌশল পাল্টে প্রতারকরা বেছে নিয়েছে স্ক্রিন শেয়ারিং প্রতারণা। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরির নতুন কৌশলে ফাঁসছেন অসংখ্য ব্যবহারকারী। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সংগঠিত এই প্রতারণা এখন পরিচিত ‘হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিন-শেয়ারিং প্রতারণা’ নামে।

প্রতারণার ফাঁদ 

সহজ অথচ ভয়ঙ্কর এই কৌশলে ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাপ, ওটিপি ও ব্যক্তিগত তথ্যসহ পুরো ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে প্রতারকরা।

একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতারকরা নিজেদের ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা হঠাৎ কোনো জরুরি সমস্যা সমাধানের কথা বলে স্ক্রিন শেয়ার করতে বলেন। ব্যবহারকারী একবার অনুমতি দিলেই প্রতারকরা সহজেই দেখতে পায় তার ফোনে থাকা সবকিছু- ব্যাংক অ্যাপ্লিকেশন, লগইন তথ্য, ওটিপি, এমনকি মেসেজ ও টাইপ করা প্রতিটি অক্ষর পর্যন্ত।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতারকরা মানুষের বিশ্বাস ও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতাকে কাজে লাগায়। অনেকে না বুঝেই স্ক্রিন শেয়ার করে বসেন এবং সেখান থেকেই শুরু হয় বড় ধরনের ক্ষতি।

যদিও অনেক ব্যাংক অ্যাপে স্ক্রিন রেকর্ডিং বন্ধ রাখার সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে, তবে স্ক্রিন শেয়ারিং চালু হলে সেটিও কার্যকর থাকে। সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে কিছু চ্যাটের স্ক্রিনশট। সেখানে দেখা যায়, পরিচিত নম্বর থেকে মেসেজ পাঠানো হয়েছে। প্রতিক্ষেত্রেই বয়ান একটাই, “আমার একজনকে টাকা পাঠানোর কথা। কিন্তু ফোন বা অ্যাপের সমস্যার কারণে পাঠাতে পারছি না। তুমি কি ১৫০০০ টাকা পাঠাবে? আমি আগামিকাল সকালেই ফেরত দেব।” গোটা মেসেজটা আসছে ইংরাজিতে। অর্থাৎ যার সঙ্গে আপনি দিনরাত মাতৃভাষায় কথা বলেন, তিনি আচমকা কেন ইংরাজিতে ধার চাইবেন? মনে এই প্রশ্ন জাগলে বেঁচে গেলেন। আর সাত-পাঁচ না ভেবে টাকা পাঠালেই পড়বেন জালিয়াতদের খপ্পরে!