সংক্ষিপ্ত
ইরানের সেনাপ্রধান জেনারেল সোলেমানিকে হত্যা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মুখ বাঁচাতে এখন তাঁর গায়ে সন্ত্রাসবাদীর তকমা আঁটা হচ্ছে। এরপর বিভিন্ন অংশ থেকে একই কায়দায় পাক সেনাপ্রধানকেও খতম করার দাবি উঠছে। জেনারেল বাজওয়া আরও স্পষ্টভাবে জঙ্গিদের মদতদাতা বলে দাবি তাঁদের।
একটি স্বাধীন দেশের সেনাপ্রধানকে আচমকা হামলায় হত্যা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারপর থেকে মুখ বাঁচাতে ইরানি জেনারেল কাশেম সোলেমানি-র গায়ে এখন ট্রাম্প প্রশাসন সন্ত্রাসবাদী থেকে যুদ্ধাপরাধী অনেক কিছুই তকমা এঁটে দিচ্ছে। কোনও দেশের কোনও তালিকাতেই জঙ্গি বা জঙ্গিদের মদতদাতা হিসেবে তাঁর নাম না থাকলেও বলা হচ্ছে, তাঁকে আরও আগে হত্যা করা উচিত ছিল। সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আমেরিকা জুড়ে সাধারণ মানুষের একাংশ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তবে আমেরিকায় এখন আরেকটি কথাও উঠছে, অনেকেই বলছেন, যদি আমেরিকার বিরুদ্ধে জঙ্গি মদতদাতা হিসেবে জেনারেল সোলেমানিকে হত্যা করা যায়, তাহলে এই বিষয়ে আরও স্পষ্ট মুখ পাক জেনারেল বাজওয়া-কে কেন হত্যা করবে না ট্রাম্প প্রশাসন?
সকলেই জানে ইরান শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। আর আমেরিকায় ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলা চালিয়েছিল সুন্নিপন্থীরা, যাঁদের বেশিরভাগই ছিল সৌদি আরবের নাগরিক, যাদের সঙ্গে প্রায় সাপে-নেউলে সম্পর্ক ইরানের। তারপরেও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স মুখরক্ষায় এখন ৯/১১ হামলার পিছনেও কাশেম সোলেমানির জেনে বুঝে বা অজান্তে হাত ছিল বলে দাবি করেছেন। আর তাঁদের এই যুক্তিহীন অস্বাভাবিক দাবির পরই বাজওয়াকেও একইভাবে খতম করার দাবি উঠছে মার্কিন মুলুকে।
আফগান বংশোদ্ভূত উদ্যোগপতি সাদ মোহসেনি বলেছেন, আমেরিকানরা কেন একইভাবে পাকিস্তানে তালিবানদের প্রভুদের মোকাবিলা করছে না? রাওয়ালপিন্ডিতে তাকা কর্তাব্যক্তিদের মদতেই তালিবানরা আফগানিস্তানে ৩৫০০ জন মার্কিন সেনা-কে হত্যা করেছে বলে তাঁর দাবি।
শুধু তিনিই নন, টুইটারে এক প্রাক্তন মার্কিন সেনা কর্তাও বলেছেন বিদেশী প্রক্সি গোষ্ঠীর দ্বারা নিহত আমেরিকানদের প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে, যখন এই কাজে ইরান জড়িত থাকছে। তবে যখন পাকিস্তানের মদতে আফগানিস্তানে তালিবান ও হক্কানি নেটওয়ার্ক আমেরিকানদের হত্যা করছে, তখন তাদের জন্য শান্তি চুক্তি করে এবং পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে কেন?
একাধিক মার্কিন সামরিক কমান্ডার এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তার অভিযোগ আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনাকর্মীদের হত্যার জন্য পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের তালিবানদের প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করেছে। জবাবে ওয়াশিংটন আর্থিক ও সামরিক সহায়তায় কাট-ছাঁট এবং সম্পর্কের অবনতি ঘটানো ছাড়া কিছুই করেনি বলে অভিযোগ।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে, মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মাইক পম্পেও টুইট করে জানান, পাকিস্তানের সেনাপ্ধান জেনারেল বাজওয়াকে তিনি ফোন করে কাশেম সোলেমানি-কে হত্যার বিষয়ে বিশদে জানিয়েছেন। পম্পেও-র ফোন, আসলে জেনারেল বাজওয়া এবং পাকিস্তানের জন্য সতর্কবার্তা ছিল কিনা সেই বিষয়টি অবশ্য পরিষ্কার নয়।