সংক্ষিপ্ত
কয়েক দশক আগেও মনে করা হতো চাঁদ একেবার খটখটে শুকনো
তারপর মেরু অঞ্চলে কিছু জলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল
সোমবার কিন্তু দারুণ বড় আবিষ্কারের কথা জানালেন নাসার বিজ্ঞানীরা
যাতে করে চন্দ্রপৃষ্ঠে জলের উপস্থিতি নিয়ে ধারণাটাই পাল্টে গেল
চাঁদ নিয়ে ধারণাটাই প্রায় পাল্টে গেল। সোমবার বিকেলে এক দারুণ বড় আবিষ্কারের কথা জানালেন নাসার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন চাঁদের ছায়াঘেরা হিমশীতল গর্ত ও খাদগুলিতে অনেক অনেক জল রয়েছে। তবে সেই জল চাইলেই খাওয়া যাবে না, কারণ তা পৃথিবীর মতো তরল অবস্থায় নেই, আছে জমাট বাঁধা অবস্থায়। তবে আগে যত পরিমাম জল চাঁদে থাকতে পারে বলে মনে করা হতো, তার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে জল রয়েছে চাঁদের বুকে। কাজেই ভবিষ্যতে চন্দ্র অভিযানে গেলে নভোশ্চররা পানীয় জল থেকে রকেটের জ্বালানি সবই পেয়ে যেতে পারেন চাঁদের বুকেই।
কয়েক দশক আগে পর্যন্ত মনে করা হতো চন্দ্রপৃষ্ঠ একেবারেই শুখা। তারপর জানা গিয়েছিল, চাঁদের মেরু অঞ্চলের স্থায়ীভাবে ছায়াচ্ছন্ন খাতগুলিকয়েক মিলিয়ন টন বরফ জমে রয়েছে। তবে নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত একজোড়া গবেষণায় দাবি করা হয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠে জল একেবারে সহজলভ্য। কলোরাডোস ইউনিভার্সিটির পল হেইন-এর নেতৃত্বাধীন এক গবেষণা দলের দাবি, চন্দ্রপৃষ্ঠের ৪০,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় বরফের আকারে আটকে আছে জল। অর্থাৎ আগে যা অনুমান করা হতো তার থেকে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি এলাকায় জল রয়েছে।
এই বরফ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলি রয়েছে চাঁদের উত্তর ও দক্ষিণ মেরুগুলির কাছাকাছি এলাকাতেই। এইসব এলাকার তাপমাত্রা প্রায় হিমাঙ্কের ২৬১ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস-এরও কম। তাই এইসব জায়গায় কয়েক মিলিয়ন থেকে কয়েক বিলিয়ন বছর জল বরফ হয়ে জমে থাকতে পারে। নাসা-র লুনার রিকনেসনস অরবিটর-এর দেওয়া তথ্য ব্যবহার করে গবেষকরা এই কোল্ড ট্র্যাপগুলি চিহ্নিত করেছেন। তাঁদের মতে এগুলি মাত্র কয়েক মিটার দীর্ঘ এবং ৩০ কিলোমিটার বা তারও বেশি প্রশস্ত।
দ্বিতীয় গবেষণাটির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা মেরু অঞ্চলের ঠিক বাইরে, চাঁদের সূর্যালোকিত অংশে জলের অণু সনাক্ত করতে নাসার ইনফ্রারেড অবজারভেটরি সোফিয়া-কে ব্যবহার করেছেন। তাঁদের পাওয়া জলের অণুগুলির বেশিরভাগই চাঁদের ধূলিকণা এবং অন্যান্য কণার মধ্যের ফাঁকা অংশে সংরক্ষিত বা কাচের মতো আগ্নেয়গিরির অংশের ভিতর আচকে রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে চাঁদের পিঠে এই সমস্ত জলের অনু ধূমকেতু, গ্রহাণু, আন্তঃগ্রহ ধূলিকণা, সৌর বাতাস বা চাঁদের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে এসেছে। চন্দ্রপৃষ্ঠে নেমে বরফের নমুনাগুলি বিশ্লেষণ করতে পারলে তাদের উত্স সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা করা যাবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।