সংক্ষিপ্ত
বিষাক্ত প্রাণীর বলতে মনে আসে সাপের কথা
এই প্রাণীটিও সাপের মতোই দেখতে
তবে সে ব্যাঙের আত্মীয়, উভচর
কিন্তু, তারও মুখের ভিতর বিষাক্ত গ্রন্থি পাওয়া গেল
বিষাক্ত প্রাণীর বলতে প্রথমেই মনে আয়ে সাপ, টিকটিকি, বা স্যালামান্ডার-এর মতো সরীসৃপদের কথা। কিন্তু, সম্প্রতি বিশাক্ত প্রাণীর ধারণাটা বদলে দিলেন ব্রাজিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের একটি দল। সম্প্রতি তাঁরা মুখে সাপের মতো বিষাক্ত গ্রন্থিয়ুক্ত এক নতুন প্রজাতির উভচর প্রাণী আবিষ্কার করলেন। উভচর প্রাণী অর্থাৎ যারা জলে ও ডাঙায় দুই জায়গাতেই বাঁচে, যেমন ব্যাঙ। গায়ে আঙটি বা রিং-এর মতো আঁশ থাকায় এর নাম দেওয়া হয়েছে 'রিংড ক্যাসিলিয়ান'।
এই নতুন প্রঝাতির উভচর প্রাণীটির সঙ্গে অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই সাপের দারুণ মিল রয়েছে। বিষাক্ত গ্রন্থি তো আছেই। সেই সঙ্গে সাপের মতো এদেরও হাত-পা থাকে না। দেখা যায় সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ুযুক্ত অঞ্চলে। আফ্রিকা, এশিয়া এবং আমেরিকা - তিন মহাদেশেই দেখা মেলে রিংড ক্যাসিলিয়ান-এর। আর বাস করে সাধারণত জলাশয়ে কিংবা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে। তবে এদের দৃষ্টিশক্তি প্রায় নেই বললেই চলে। আর চলাফেরার জন্য নির্ভর করে মুখ তেকে বের হওয়া দাঁড়া এবং শামুকের মতো দেহ নিঃসৃত আঠালো এক ধরণের পদার্থের উপর।
আইসায়েন্স জার্নালের জুলাই সংস্করণে এই বিষয়ক একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক তথা উটা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এডমন্ড ব্রডি (জুনিয়র) বলেছেন, সাধারণত ব্যাঙের মতো উভচর প্রাণীদের নিরীহ প্রকৃতির বলে মনে করা হয়। কিন্তু, উভচরদের মধ্যে অনেকেরই ত্বকে আত্মরক্ষার জন্য বিষাক্ত রাসায়নিক সঞ্চিত থাকে। গবেষণাপত্রটির আরেক লেখক তথা সাও পাওলো-র বুটানটান ইনস্টিটিউটের স্ট্রাকচারাল বায়োলজি ল্যাবের ডিরেক্টর কার্লোস জারেড জানিয়েছেন, ক্যাসিলিয়ানদের দেহে দুটি গ্রন্থি থাকে। তাদের লেজের দিকে থাকে একটি বিষের গ্রন্থি আর শ্লেষ্মার একটি গ্রন্থি থাকে মাথায়। রিঙড দের ক্ষেত্রে মুখের ভিতর একটি বিষথলি পাওয়া গিয়েছে।
তিনি আরও জানিয়েছেন ক্যাসিলিয়ান-দের নিয়ে গবেষণা এত কম হয়েছে, তাই জীববিজ্ঞানীদের এখনও চমকে দেয় তারা। এই নতুন প্রজাতি এবং তাদের দেহ সম্পর্কে আরও গবেষণার জন্য বিজ্ঞানী দলটি এখন তাদের গ্রন্থি থেকে পাওয়া তরলের প্রাথমিক বায়োকেমিক্যাল পরীক্ষা করছে। তবে জ্যারেড জানিয়েছেন, সাপেরা যেমন কামড় দিতে পারে, সেই ক্ষমতা এই উভচরদের নেই। হমলাকারীরা তাদের বিষদাঁতে চাপ দিলে তবেই বেরিয়ে আসে সেই বিষ।