সংক্ষিপ্ত

নাম 'দ্য স্প্রিং দ্যাট ব্রেথস' অর্থাৎ 'সেই ঝর্ণা, যে শ্বাস নেয়'। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইমিংয়ের একটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ঝর্ণাটির প্রবাহ ১৫ মিনিট অন্তর বন্ধ হয়ে যায়। 
 

মানুষ এই গ্রহের সবথেকে বুদ্ধিমান প্রাণী। কিন্তু, প্রকৃতিতে এমন অনেক রহস্য রয়েছে, এমন অনেক ম্যাজিক রয়েছে, যা এই একবিংশ শতকে এসেও মানুষকে বিস্মিত করে। এরকমই এক ম্যাজিকাল জায়গা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইমিংয়ের একটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা। নাম 'দ্য স্প্রিং দ্যাট ব্রেথস' (The Spring That Breathes), বাংলা করলে দাড়ায়, 'সেই ঝর্ণা, যে শ্বাস নেয়'। শ্বাস নেয় মানে? ঝর্ণা কীকের শ্বাস নেবে? সেটাই ম্যাজিক। 

মানুষ যেরকম একটা ছন্দে শ্বাস নিয়ে থাকে, ওয়াইমিংয়ের একটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ই ঝর্ণাও এরকমই একটা ছন্দে চলে। ১৫ মিনিটের ব্যবধানে এই ঝর্ণার জল শুকিয়ে যায়। আবার ১৫ মিনিট বাদে জল ফিরে আসে। ওয়াইমিং-এর সুইফট ক্রিক ক্যানিয়নে এই ঝর্ণার জলে খাঁড়ি তৈরি হয়েছে। ঝর্ণার ছন্দেই , সেটিতেও ১৫ মিনিট অন্তর অন্তর জলের প্রবাহ হঠাৎ বেড়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিটের জন্য একটি বিরাট খাঁড়ি তৈরি হয়। পরের ১৫ মিনিটে আবার সেই খাঁড়ির জল নেমে যায়। কারণ, ঝর্ণার প্রবাহ ওই ১৫ মিনিট বন্ধ থাকে। চক্রাকারে এটা ঘটতেই থাকে। 

"

এই ধরনের চক্রের সঠিক কারণ জানা যায় না। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এরকম ম্য়াজিক্যাল ঘটনা ঘটে, কারণ ঝর্ণাটি প্রবাহিত হয় সাইফন প্রক্রিয়ার প্রভাবে। সাইফন প্রক্রিয়ার উপরই এর গতি নির্ভরশীল। উটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইড্রোলজিস্ট অধ্যাপক কিপ সলোমনের জানিয়েছেন, উটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ঝর্ণার জলের গ্যাসের পরিমাণ পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, ওই ঝর্ণার জল কোনও ভূগর্ভস্থ বাতাসে উন্মুক্ত হয়। এটি সাইফন তত্ত্বের শক্তিশালী প্রমাণ।

YouTube video player

সাইফন প্রক্রিয়া হল একটি ইংরাজি ইউ অক্ষরের মতো টিউবের মাধ্যমে কোনও  আধার থেকে কোনও তরল উপরের দিকে ধাবিত হয়ে তারপরে নিজে থেকে নিচের কোনও উচ্চতার আধারে পৌঁছানোকে সাইফন প্রক্রিয়া বলে। সাধারণত তরলটি ওই টিউবে শোষণের মাধ্যমে বা নিমজ্জনের মাধ্যমে জোর করে প্রবেশ করানো হয়, তারপর থেকে তার প্রবাহ অব্যাহত থাকে।  

আরও পড়ুন - আমরুল্লা সালে - 'চিরকালের গুপ্তচর' এখন নিজেই আফগান প্রেসিডেন্ট, পঞ্জশির প্রতিরোধের মুখ

আরও পড়ুন - তালিবানদের উৎখাতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে 'পাঁচ সিংহে'র উপত্যকা - জড়ো হচ্ছে নর্দান অ্যালায়েন্স

আরও পড়ুুন- Afghanistan - 'পাকিস্তানের গ্রাস করার কিংবা তালিবানদের শাসনের পক্ষে অনেক বড় দেশ'

ই অদ্ভূত ঝর্ণার কাছে থাকা একটি বোর্ডে বলা হয়েছে, 'পর্যায়ক্রমিক ঝর্ণাটি হল একটি ঠান্ডা জলের গিজার'। অর্থাৎ পাহাড়ের মধ্যে কোথাও একটি ফাঁপা জলাশয়ে একপাশ থেকে অবিরাম জল প্রবাহ হয়। অন্য দিকে একটি সূক্ষ্ম পাইপের মতো অংশ দিয়ে তা বেরিয়ে সোজা নিচের দিকে নেমে আসে। তারপর ওই কক্ষের থেকে নিম্নবর্তি কোনও এলাকায় জমা হয়। তারপর আবার একটি সরু নলের মতো অংশ দিয়ে উপরের দিকে উঠে ঝর্ণার আকার নিচে নেমে আসে। বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ঢর্ণার দুটি প্রবাহের মধ্যে ঠিক ১৫ মিনিটের ফারাক থাকে, তা নয়, তফাতটা ১২ থেকে ১৮ মিনিটের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। গ্রীষ্মের শেষ থেকে শীতকাল জুড়ে এই ঝর্ণার শ্বাস-প্রশ্বাসের চক্র চালু থাকে। 


 

YouTube video player