সংক্ষিপ্ত
- কোভিশিল্ডের কাঁচামালের সংকট
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সাহায্যের প্রার্থনা
- ভারতের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি
- অজিত ডোভালের ফোনের পরই তৎপরতা
ভারতে নিত্যদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে বর্তমানে টিকাকেই হাতিয়ার করেছে ভারত। দুটি টিকা এখনও পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। একটি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। অন্যটি সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কোভিসিল্ড। কিন্তু কোভিশিল্ডিয়ের উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের ঘাটতি রয়েছে। আর সেই ঘাটতি মেটাতে এগিয়ে কিছুটা দেরিতে হলেও এগিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জো বাইডেনের আমেররিকা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারত যে কাঁচামাল চেয়েছে তা তাৎক্ষণিতভাবে ভারতে পাঠান হবে। সেই জন্য একটি বিশেষজ্ঞদলও কাজ করছে।
Just as India sent assistance to the United States as our hospitals were strained early in the pandemic, we are determined to help India in its time of need. https://t.co/SzWRj0eP3y
তবে এই কাঁচা মালের রফতানির বিষয়টি খুব সহজে হয়নি। ভারতের এই প্রবল করোনাভাইরাসের সংকটের সময়ই হাত গুটিয়ে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। প্রথম দফার তাঁরা কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। কিন্তু রবিবার রাতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালেই একটি ফোন কলেই সংকট কাটার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অজিত ডোভাল তাঁরই সমকক্ষ মার্কিন জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্ট জেক সুলিভানকে রবিবার ফোন করেন। সূত্রের খবর তাঁদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। দেশের চিকিৎসা পরিবেষার জন্য প্রয়োজনীয় ডায়াগনাস্টিক টেস্ট কিট, ভেন্টিলেটর, ও পিপিই স্যুট সরবরাহ করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তারপরেই মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সময় ভারতকে সবরকম সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত দায়বদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গতবছর করোনা সংকটের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সময় তিনি রীতিমত হুমকি দিয়ে ভারতের কাছ থেকে করোনা মোকাবিলার জন্য একাধিক ওষুধ আদায় করেছিলেন।
গত এক মাসে সেরাম ইনস্টিটিউটের কার্তা আদার পুনাওয়ালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একাধিক টুইট ররেছিলেন। সেখানে তিনি কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের রফতানির অনুমতি দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কারণ ৫ ফেব্রুয়ারি জো বাইডেন কোভিড ১৯ রোগ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ওপর স্বল্প মেয়াদী রফতানি নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইন লাগু করেছিলেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে জো বাইডেনের এই পদক্ষেপ কোভিশিল্ড উৎপাদনে সংকট কাটাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
রবিবার অজিত ডোভালের ফোনের পর মার্কিন জাতীয় সুরক্ষা দফতের পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করে জানান হয়েছে মহামারির প্রথম দিকে ভারত যেমন আমেরিকাকে সহযোগিতা করেছিল তেমনই বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়ানো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তব্য। ভারতের প্রয়োজনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবরকম সহযোগিতা করতে বলেও জানান হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে অক্সিজেন ও আনুসাঙ্গিক বিষয় নিয়ে মার্কিন দূতাবাস ও ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্মীরা আলোচনা করছেন। তবে এর আগে রবিবার মার্কিন জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রক ভারতকে সহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টুইট করেছিল। কিন্তুসেই সময় ভ্যাকসিনের কাঁচামাল নিয়ে ভারত যে দাবি জানিয়েছিল তা পুরণ হবে কিনা তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও বার্তা দেয়নি। পরিস্থিতি বদলের পর মার্কিন ডেভলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশন জানিয়েছে ২০২২ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডোজের কোভিড ভ্যাক্সিন যাতে ভারত উৎপাদন করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ভারতে পাঠান হবে।