সংক্ষিপ্ত

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা, যা ৯/১১ হামলা নামেও পরিচিত, আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক জঙ্গি হামলা। আল-কায়দা জঙ্গি গোষ্ঠীর বিমান হানায় গুঁড়িয়ে গিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার। এই হামলা মার্কিন রাজনীতিকে বদলে দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বরাজনীতিও বদলে দিয়েছিল।

ইতিহাসের বিভীষিকাময় ৯/১১ আজ। ২০০১ সালে বিমান হামলা চালিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গর্ব নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংস করা হয়। হামলায় নিহত হয় প্রায় ৩ হাজার মানুষ। এ হামলার প্রভাব পড়ে ছিল সারাবিশ্বে। আল কায়েদা এ হামলা চালিয়েছে দাবি করে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান শুরু করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট। আফগানিস্তানে অবস্থান নেয় মার্কিন সেনারা। তালিবানি শাসনের অবসান ঘটিয়ে আফগানদের নিয়ে শাসনব্যবস্থা কায়েম করে। ২০ বছর অবস্থানের পর সম্প্রতি আফগানিস্তান ছাড়ে মার্কিন সেনারা। সঙ্গে সঙ্গে আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে ইরাক, আফগানিস্তানকে দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। 

নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা, যা ৯/১১ হামলা নামেও পরিচিত, আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক জঙ্গি হামলা। আল-কায়দা জঙ্গি গোষ্ঠীর বিমান হানায় গুঁড়িয়ে গিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ার। এই হামলা মার্কিন রাজনীতিকে বদলে দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বরাজনীতিও বদলে দিয়েছিল। ছিনতাই করা বিমানগুলির মধ্যে দুটি নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ারে ধাক্কা মারে। হামলাকারীরা প্রথমে সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে WTC এর উত্তর টাওয়ারের ৯৩ এবং ৯৯ নম্বর তলায় ধাক্কা মারে। কেউ কিছু বুঝতে পারার আগেই, দ্বিতীয় বিমানটি WTC-এর দক্ষিণ টাওয়ারে আঘাত হানে ঠিক ১৭মিনিট পরে, সকাল নটা বেজে তিন মিনিটে। 

যখন টাওয়ারগুলি আঘাত করা হয়েছিল, তখন ১৬ থেকে ১৮ হাজার লোক WTC কমপ্লেক্সে ছিল। তৃতীয় বিমানটি ইচ্ছাকৃতভাবে ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনের পেন্টাগনে ধাক্কা মেরেছিল। একটি গবেষণা বলছেন হামলার কুড়ি বছর আগের হামলার ক্ষতি এখনও বহন করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হামলার কারণে বিষাক্ত হয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বা বর্তমানে গ্রাউন্ড জিরোর বাতাস। যার থেকে অধিকাংশ মানুষের ক্যান্সার হচ্ছে। মানসিক রোগেও ভুগছে। আগের তিনটি হামলা সম্পর্কে জানার পর, চতুর্থ হাইজ্যাক হওয়া বিমানের যাত্রীরা পাল্টা লড়াই করে এবং প্লেনটি শেষ পর্যন্ত পশ্চিম পেনসিলভানিয়ার একটি খালি মাঠে ভেঙে পড়ে। 

৯/১১ হামলায় ৯৩টি দেশের ২৯৭৭ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ার হামলায় ২৭৫৩ জন এবং পেন্টাগনে ১৮৪ জন নিহত হয়েছিল; এবং ফ্লাইট ৯৩-এ ৪০ জন নিহত হয়েছিল।

৯/১১ হামলার পরিকল্পনা আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন এবং তার সহযোগীদের মস্তিষ্কপ্রসূত ছিল। হামলায় জড়িত ১৯ জন জঙ্গির মধ্যে ১৫ জন সৌদি আরবের, দুজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের, একজন লেবাননের এবং একজন মিশরের বাসিন্দা। মার্কিন সংস্থাগুলি অবশেষে ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে তার অবস্থানে একটি সামরিক অভিযানে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছিল।

এই বছরের আগস্টে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৯/১১ হামলার ষড়যন্ত্রের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যা করে। মার্কিন সংস্থা আফগানিস্তানে ড্রোন হামলায় আল-কায়েদা নেতাকে খতম করে। পেনসিলভেনিয়ার শ্যাঙ্কসভিলায় ফ্লাইট ৯৩ বিধ্বস্ত মাঠটি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশানাল পার্ক সার্ভিসের অধীনে রয়েছে। এটি ফ্লাইট ৯৩ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পরিণত হয়েছে এখন। হামলার নিহতদের প্রতি এখনও এখানে অনেকেই শ্রদ্ধা জানান।