Khudiram Bose: 'ক্ষুদ দিয়ে কেনা’ তাই নাম হয়েছিল ক্ষুদিরাম, ক্ষুদিরাম বসুর জীবনের অজানা কাহিনি

মেদিনীপুর শহরের প্রসিদ্ধ সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে রোজ লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী পুজো দেন একটি পুত্র  সন্তানের জন্য। লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর তিনটিই কন্যা সন্তান – অপরূপা, সরোজিনী ও ননীবালা। লক্ষ্মীপ্রিয়ার কোনো পুত্রসন্তানই বাঁচত না।

/ Updated: Apr 26 2022, 10:18 AM IST
Share this Video
  • FB
  • TW
  • Linkdin
  • Email

মেদিনীপুর শহরের প্রসিদ্ধ সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে রোজ লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী পুজো দেন একটি পুত্র  সন্তানের জন্য। লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর তিনটিই কন্যা সন্তান – অপরূপা, সরোজিনী ও ননীবালা। লক্ষ্মীপ্রিয়ার কোনো পুত্রসন্তানই বাঁচত না। দু’দুটি পুত্র জন্মানোর অল্পদিনের মধ্যেই মারা যায় সেকারণে একটি পুত্রের জন্য  লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী রোজ মন্দির যেতেন। লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবীর স্বামী ত্রৈলোক্যনাথ বসু ছিলেন নাড়াজোল রাজ এস্টেটের কর্মচারী’। দেবী একদিন শুনলেন লক্ষ্মীপ্রিয়ার কাতর আর্জি। আর ১৮৮৯ সালের ৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার লক্ষ্মীপ্রিয়ার কোল আলো করে এল একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান। যে নারীর সন্তান বাঁচে না, তাঁর কাছ থেকে অন্য লোকে সন্তান কিনে নিলে সে সন্তানের নাকি গোত্রন্তর ঘটে, তাঁর মৃত্যুভয়ও নাকি কেটে যায়, সে সন্তান দীর্ঘজীবন লাভ করে এই প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী জন্মমুহূর্তেই তিন মুষ্টি ক্ষুদ দিয়ে মায়ের কাছ থেকে সসদ্যোজাত ছেলেকে কিনে নেন তাঁর বড়দিদি অপরূপা। ‘ক্ষুদ দিয়ে কেনা’ হল বলে ছেলের নাম রাখা হয়েছিল ‘ক্ষুদিরাম। মাত্র ছয় বছর বয়সে মা কে হারান ক্ষুদিরাম। তারপর পিতাকে। দিদি অপরূপা ও তাঁর স্বামী অমৃতলাল রায়, ক্ষুদিরাম ও তাঁর ছোটদিদি ননীবালাকে নিয়ে চলে যান মেদিনীপুরের হাটগেছিয়া গ্রামে। সেখানে কিছুদিনের মধ্যেই ননীবালার বিয়ে হয়ে যায়। ক্ষুদিরাম ভর্তি হন সেখানকার স্কুলে। ১৯০১ সালে চাকরীর প্রয়োজনে অমৃতলাল নিজের গ্রাম ছেড়ে সপরিবারে তমলুকে চলে যান। সেখানকার হ্যামিলটন স্কুলে চতুর্থশ্রেণীতে ভর্তি হন ক্ষুদিরাম। ১৯০৮ সালের ২৫ এপ্রিল ক্ষুদিরাম কলকাতায় এসে পৌছল। কলকাতায় গোপীমোহন দত্তের ১৫ নম্বর বাড়িটি ছিল তখন বিপ্লবীদের তীর্থক্ষেত্র। সেখানে বসেই হেমচন্দ্র ও উল্লাসকর শক্তিশালী তৈরী করতেন। তাঁরা বই বোম বানিয়েছিলেন। বই বোম অর্থাৎ যে বোমা বইয়ের ভাঁজে রাখা যেত। সেই বোমই ব্যবহার করা হল অত্যাচারী কিংসফোর্ডকে হত্যায়। কৌশলে একটি বই কিংসফোর্ডের কাছে পাঠানো হল। কিন্তু কিংসফোর্ড বই না খোলার কারণে সে যাত্রায় বেঁচে গেলন। তারপর কিংসফোর্ডকে হত্যার দায়িত্ব নিল ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকী। ১৯০৮ সালের ৩০ এপ্রিল, রাত ৮টায় বোম ছুঁড়ল দুই বিপ্লবী। ভুলবশত সেই বোমা গিয়ে যে গাড়িতে পড়ল সেই ফিটন গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না। ছিলেন দু’জন বিদেশিনী। এই ঘটনায় নিহত হলেন মিসেস কেনেডি আর তাঁর কন্যা ও এক চাকর। এরপরের ঘটনা আজ ইতিহাস। ১৯০৮ সালের ১১ অগষ্ট হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে জীবন উৎসর্গ করলেন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনের সর্বকনিষ্ঠ শহীদ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু।