৮৫ বছরের মা একাকী পড়ে রয়েছে কিয়েভে, দেশ ছেড়ে পালানো মেয়ে ভেঙে পড়ল কান্নায়

ইউক্রেন থেকে এই মুহূর্তে ২০ লক্ষ মানুষ উদ্বাস্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ছোট-ছোট ছেলেমেয়ে। সীমান্ত পার করা এমনই একদল শিশুর ছবি সামনে এল। যুদ্ধের মানে এখনও বুঝতে পারছে না এই শিশুরা। শুধু বুঝেছে যেখানে তারা ছিল সেটা এখন নিরাপদ নয়। শিশুরাই জানাল তাদের বাড়ির আশপাশে এখন বোমা পড়ছে। 

Share this Video

যুদ্ধের রক্তাক্ত খেলা। আর তাতে এখন দিশেহারা মানুষ। ইউক্রেন থেকে লাখ লাখ মানুষ এখন দেশ ছাড়ছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। কেউ সীমান্ত পেরিয়ে চলে যাচ্ছেন হাঙ্গেরিতে কোনও আত্মীয়র আশ্রিত হতে। আবার কেউ চলে যাচ্ছেন পোল্যান্ড বা রোমানিয়ার দিকে। সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু, সুস্থ-সুন্দর জীবনটাতে যেন আচমকা ছন্দ পতন। রাশিয়ার আগ্রাসন ইউক্রেনকে আজ ত্রস্ত-বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। যুদ্ধের ধ্বংসে জীবন যেন এখন খড়কুটো। যুদ্ধের কঠোর আঘাত হেনেছে শৈশবে। পোল্যান্ডের সীমান্তে সদ্য ইউক্রেন থেকে এসে পৌঁছেছে এই শিশুদের দল। এশিয়ানেট নিউজের দিল্লির ব্যুরোর প্রধান প্রশান্ত রেঘুবসম তাদের দিকে বুম হাতে এগোতেই সলজ্জ ভাব। শিশুদের আনন্দ হিল্লোল দেখে বোঝার উপায় নেই সত্যি তাদের দেশে যুদ্ধ লেগেছে। আসলে শৈশব তো এমনি। যারা যে কোনও পরিস্থিতিতে সকলকে ক্ষমা করে দিয়ে মেতে উঠতে পারে জীবনের গানে। ইউক্রেন বরাবর পোল্যান্ডের সীমান্ত জুড়েই এভাবে এখন এসে ভিড় করছেন উদ্বাস্তুরা। এদের সঙ্গেই দলে দলে আসছেন অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী। যারা অন্য দেশ থেকে এসে ইউক্রেনে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। সবই এখন অথই জলে। প্রাণটা নিয়ে ঘরে ফেরাটাই যেন এখন সকলের মূল লক্ষ্য। ছাত্র-ছাত্রীদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে যুদ্ধের সেই সব আতঙ্কের কাহিনি। জীবনের কাছে এ যেন এক নতুন পাওনা। এশিয়ানেট নিউজের ক্যামেরাতেই ধরা পড়ল কিভ শহরের এক বৃদ্ধা। কথা বলতে বলতে জানালেন ৮৫ বছরের মা-কে একা ফেলে রেখে এসেছেন। কিভ শহরে তাঁদের বাড়ি। রোজই বাড়ির আশপাশে হয় রকেট না হয় ক্ষেপণাস্ত্র পড়ছে। বৃদ্ধা মা-এর চলার ক্ষমতা নেই। তাই তাঁকে ফেলে রেখে আসা ছাড়া কোনও গতি ছিল না। বলতে বলতে কান্নায় চোখ ভরে গেল বৃদ্ধার। কে জানে যুদ্ধ থামলে দেশে ফেরার পরিস্থিত হলে আদৌ মা-এর জীবন্ত মুখটা দেখতে পাওয়া যাবে কি না। কান্না ভেজা গলাতেই এশিয়ানেট নিউজের প্রতিনিধি প্রশান্তকে জিজ্ঞেস করে বসলেন বৃদ্ধা- তোমার বাড়ি কোথায়। শান্ত গলায় প্রশান্ত বললেন ভারত। মহিলা মুচকি হাসলেন। কান্নার পাশে হাসির এই ছবি শ্বাশত থাকুক- এই প্রার্থনাই এখন বিশ্বজুড়ে। 

Related Video