১০ বছরে আস্ত একটা কারখানাই উধাও, জঙ্গলের ঘেরাটোপে পড়ে রয়েছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইকেল কোম্পানি
সেন-রেলে সাইকেল কোম্পানিকে ১৯৭৫ সালে অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে ভারত সরকার। ১৯৮০ সালে সাইকেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া নামে আত্মপ্রকাশ করেছিল সেন-রেলে সাইকেল কোম্পানি। আর্থিকভাবে লোকসানের মধ্যে থাকা এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইকেল কারখানার কর্মীরা ভেবেছিলেন হয়তো টিকে যাবে তাঁদের রুটি-রুজি।
সেন-রেলে সাইকেল কোম্পানিকে ১৯৭৫ সালে অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে ভারত সরকার। ১৯৮০ সালে সাইকেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া নামে আত্মপ্রকাশ করেছিল সেন-রেলে সাইকেল কোম্পানি। আর্থিকভাবে লোকসানের মধ্যে থাকা এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সাইকেল কারখানার কর্মীরা ভেবেছিলেন হয়তো টিকে যাবে তাঁদের রুটি-রুজি। কিন্তু, কারখানার প্রাক্তন কর্মীদের অভিযোগ, সরকারি পরিচালনায় কারখানার একশ্রেণির আধিকারিক তারা সাইকেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার যাবতীয় ডিজাইন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাইভেট সাইকেল তৈরির সংস্থাগুলিকে অর্থের বিনিময়ে পাচার করে দিয়েছিল। এর সঙ্গে রাজীব গান্ধীর প্রধানমন্ত্রীত্বকালে এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তে আশির দশকের শেষে ভারতে সাইকেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার তৈরি সাইকেল বিক্রির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। কারণ সে সময় অন্ধ্রপ্রদেশে সরকারি কারখানায় তৈরি সম্রাট সাইকেলকে দেশজুড়ে বিক্রি করতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে সাইকেল কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া আরও অতলে তলিয়ে যায়। নব্বই-এর দশকের শুরু থেকেই টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। চুরি হতে থাকে কারখানার সম্পদ। নব্বই দশকের প্রায় শেষে কারখানায় তালা পড়ে যায়। বহু শ্রমিক কোয়ার্টার ছেড়ে পাড়ি দেন বিকল্প কর্মসংস্থানের খোঁজে। রাতারাতি সেই সব ফাকা কোয়ার্টারের দখল নেয় আশপাশের এলাকার মানুষ। কন্যাপুরের বুকে এখনও স্টাফ কোয়ার্টারে বহু কর্মী বসবাস করছেন। তাদের আশা কারখানা হয়তো ফের খুলবে। কিন্তু, ভাগ্যের চরম পরিহাস, ২০১০ থেকে ২০২১-এর মধ্যে পুরো কারখানাটাই চুরি হয়ে গিয়েছে। সেন-রেলে সাইকেল তৈরির কারখানা এখন গভীর জঙ্গলের ঘেরাটোপে। মাঝে-মাঝে কিছু ইট বা ভেঙে পড়ে থাকা দেওয়াল। আর কিছুই নেই। সেন-রেলে-র সাইকেল তৈরির কারখানার গরিমাকে চাক্ষুষ করতে হলে এখন শুধু ভরসা অতিতে ছবি, আর পুরনো কর্মীদের মুখে শোনা গল্প।