সংক্ষিপ্ত
- মহিলাদের স্বনির্ভর করতে উগ্যোদ
- উদ্যোগ মোদী সরকারের
- রইল ৭টি প্রকল্পের তথ্য
- আত্মনির্ভর ভরত গঠনে উপযোগী
শমিকা মাইতি, প্রতিনিধি, যে কোনও জাতির গঠনে নারীশক্তির ভূমিকা অসীম। অথচ, শুধু এদেশে বলে নয়, পুরো বিশ্বে মহিলারাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতন, অত্যাচারের শিকার। এই প্রেক্ষিতে মহিলাদের স্বনির্ভরতা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রকল্প নিয়েছে ভারত সরকার।
• মহিলা ই-হাত- সরাসরি বেচাকেনার জন্য অনলাইন এই প্ল্যাটফর্ম ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ পদক্ষেপের অন্যতম অঙ্গ। কেন্দ্রের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্মে নিজেদের তৈরি জিনিসপত্র সরাসরি বিক্রি করতে পারে স্বনির্ভর গোষ্ঠী, মহিলা উদ্যোগপতিরা। www.mahilaehaat-rmk.gov.in সাইটে গিয়ে রেজিস্টার করতে হবে শুধু।
• বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও- ভারতে ০-৬ বছর বয়সের মধ্যে লিঙ্গ অনুপাত আগে ছিল ১০০০ পুত্রসন্তান পিছু ৯৩১ কন্যাসন্তান। ২০১১ সালের সার্ভেতে দেখা যায়, কন্যাসন্তানের অনুপাত আরও কমেছে। ১০০০ পুত্রসন্তান পিছু কন্যাসন্তানের হার হয়েছে ৯১৮। কন্যা ভ্রুণ হত্যার বাড়বাড়ন্তের কারণে এমনটা হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই কন্যা ভ্রূণ হত্যা রোধ ও কন্যাসন্তানদের উন্নয়ন লক্ষ্যে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রচার কর্মসূচি চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি হরিয়ানার পানিপথে এই প্রকল্পের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘সেভ দ্য গার্ল চাইল্ড’, ‘এডুকেট গার্ল চাইল্ড’ ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, দিল্লি ও হরিয়ানায় প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু হয় ১০০ কোটি টাকার ফান্ড নিয়ে। পরবর্তীকালে পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই ক্যাম্পেনিং।
• সখী- জনপ্রিয় এই প্রকল্পটির নাম ওয়ান-স্টপ সেন্টার স্কিম। ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল নির্ভয়া ফান্ডে প্রকল্পটি চালু করা হয়। হিংসা ও নির্যাতনের শিকার এমন মেয়েদের আশ্রয়, আইনি সাহায্য, চিকিৎসা এবং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাগুলো এক ছাদের তলায় আনতে এই পদক্ষেপ। রয়েছে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। নির্যাতিতাদের উদ্ধার করা থেকে শুরু করে এফআইআর দায়ের এমনকী আদালত বা পুলিশের কাছে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রেকর্ড স্টেটমেন্ট করার ব্যবস্থা রয়েছে এই কেন্দ্রে।
• কর্মরত মহিলাদের হস্টেল- মেয়েরা যাতে বাড়ি থেকে দূরে কাজ করলেও আশ্রয়ের বন্দোবস্ত নিয়ে ভাবতে না হয়, তার জন্য এই প্রকল্প। অনেক ক্ষেত্রে এই কেন্দ্রগুলিতে শিশুসন্তানের জন্য ডে কেয়ারের বন্দোবস্তও থাকছে।
• স্বধর গৃহ- বিপর্যয়ের শিকার মহিলাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে চালু এই প্রকল্পটি তুলনায় পুরনো। ২০০২ সালে মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে এই প্রকল্পে কাজ শুরু হয়। জেল থেকে ছাড়া পাওয়া মহিলা বা বিধবা বা পরিবার বিচ্ছিন্না নিরাশ্রয়দের এনজিও-র সাহায্যে মাথার উপরে ছাদ দেওয়ার পাশাপাশি পরনের জামাকাপড় ও খাবারের বন্দোবস্ত করা হয় এই প্রকল্পে ।
• স্টেপ- এসটিইপি, পুরো কথায় ‘দ্য সাপোর্ট টু ট্রেনিং এ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম ফর উইমেন’ নামে এই প্রকল্পটি মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষিকাজ, উদ্যানচর্চা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বস্ত্রবয়ন, সেলাই, হস্তশিল্প, কম্পিউটার এমনকী স্পোকেন ইংলিশ, গয়না শিল্প ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা হয় এই প্রকল্পে।
• নারী শক্তি পুরস্কার- জাতীয় স্তরে আয়োজিত এই পুরস্কার দেওয়া হয় সেই সব মহিলাদের যাঁরা অসহায়, নির্যাতিতা, অত্যাচারিতা মেয়েদের উন্নয়ন ও নারী-স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি নিজে এই পুরস্কার তুলে দেন কৃতীদের হাতে।