সংক্ষিপ্ত

সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে আকৃষ্ট করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিভিন্ন প্রকল্পগুলো। সেই জন্যই অনেক সময় সিপিএমের নীতিতে বিশ্বাসী হলেও বহুমুখী সুবিধা পেতে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দিকেই ঝুঁকেছেন। এর ফলে বামপন্থীরা তাঁদের পার্টি সংগঠনে ব্যার্থ হচ্ছে। বলা বাহুল্য, সমাজের শ্রমজীবী, গরিব মানুষ ও বেকার যুবকদের সমর্থন কিন্তু এখনও তৃণমূলের দিকেই আছে।

বুধবার ১০৮ পুরভোটের ফল। আর তার আগেই ঘাস ফুলের ওপর যেন শিশিরের ছোঁয়া। একটানা দীর্ঘ ৩৪ বছরের রাজত্বে থাকা সিপিএম পার্টি স্বীকার করে নিল যে মমতার বিবিন্ন মমতাময়ী ও জনদরদী প্রকল্পের জন্যই বহু মানুষ মমতার সরকারকেই চাইছেন। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষকে আকৃষ্ট করে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিভিন্ন প্রকল্পগুলো। সেই জন্যই অনেক সময় সিপিএমের নীতিতে বিশ্বাসী হলেও বহুমুখী সুবিধা পেতে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দিকেই ঝুঁকেছেন। এর ফলে বামপন্থীরা (CPIM)তাঁদের পার্টি সংগঠনে ব্যার্থ হচ্ছে। বলা বাহুল্য, সমাজের শ্রমজীবী, গরিব মানুষ ও বেকার যুবকদের সমর্থন কিন্তু এখনও তৃণমূলের দিকেই আছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের কলকাতা জেলার সম্মেলন। তার আগে বুধবারই রাজ্যের পুরভোটের (West Bengal Civic Polls) ফল ঘোষণা। সম্মেলনের খসড়া দলিলের ৪৩ নম্বর পাতায় পার্টি সংগঠন নিয়ে আলোচনায় উল্লেখ করা হয় সাংগাঠনিক দুর্বলতার জন্যই পার্টি তার সংগঠনে ব্যর্থ হচ্ছে। এছাড়াও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারার জন্যও সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে খসড়া দলিলে।

প্রসঙ্গত, গত তিনবছরে কলকাতা শহরেই সিপিএমের (CPIM) সদস্য কমেছে প্রায় দেড় হাজার। ব্যাপক সংখ্যক ছাত্র ও যুব পার্টিতে যোগদানে আগ্রহ দেখালেও সদস্য সংখ্যা কমে যাওয়ার কারন খুঁজতকে মরিয়া কমরেড নেতৃত্ব। তাঁদের অকপট স্বীকারোক্তি, বিশ্বায়নের ফলে শহরে বহুতলের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেই বহুতল নির্মাণের সঙ্গে বেকার যুবকদের যুক্ত করে সাময়িক রোজগারের পথ করে দিচ্ছে শাসকদলের নেতারা। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প মারফত ভিন্ন শ্রেণীর মানুষের হাতে টাকা পৌঁছে দিচ্ছে শাসক দল। সেই জন্যই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে যেতে যথেষ্ট বেগ হতে হচ্ছে এবং আগামী দিনেও এই বেগ পেতে হবে বলে মনে করছে লাল শিবির। 

একই সঙ্গে রেল দফতরের হিসেব দিয়ে দলিলে লেখা হয়েছে, কর্মসূত্রে প্রতিদিন শহরে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ আসেন। সিংহভাগ অংশই অসংগঠিত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সাংগাঠনিক দুর্বলতার কারণে এদের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। পার্টি সদস্য কম হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে দলিলের ৪৫ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে। আবার খসড়ার ৪৭ নম্বর পাতায় পার্টি সদস্যদের লেভি দেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। 

খসড়াতে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, একটানা তিনমাস লেভি না দিলে পার্টির সদস্যপদ থাকে না। কিন্তু পার্টির ১১ হাজার সদস্যর মধ্যে প্রায় ৮ হাজার জন লেভি নিয়মিত দেননি। টানা একবছর লেভি দেননি এমন সদস্যর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। কিন্তু জেলা পার্টির কাছে লেভি সময়মতো দিয়েছেন বলে মিথ্যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। অনেক সদস্য আবার শুধু লেভি দিয়েই দায়িত্ব পালন করছেন। পার্টির কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে অনীহা দেখা দিয়েছে। সিংহভাগ পার্টি সদস্যই কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না বলে ক্ষোভপ্রকাশও করা হয়েছে।