সংক্ষিপ্ত

  • একরাশ অভিমান নিয়ে চলে গেলেন নলহাটির প্রাক্তন বিধায়ক
  • প্রয়াত কলিমুদ্দিন শামসের বড় ছেলে ছিলেন মইনুদ্দিন শামস 
  •  গভীর রাতে কলকাতার একটি  হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় 
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতারা 


দল ও নলহাটির মানুষের প্রতি একরাশ অভিমান নিয়ে চলে গেলেন বীরভূমের নলহাটি বিধানসভার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুদ্দিন সামস। রবিবার গভীর রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতারা।

আৎও পড়ুন, শুধু কলকাতেই কোভিডে মৃত্যু ৪ হাজারেরও উপরে, পুরসভার কাজে নজরদারিতে কমিটি গড়ল নবান্ন  

প্রয়াত কলিমুদ্দিন শামসের বড় ছেলে ছিলেন মইনুদ্দিন শামস। বাবা কলিমুদ্দিন শামস কলকাতার কবিতীর্থ বিধানসভা থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে তিনবারের বিধায়ক ছিলেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ফরওয়ার্ড ব্লকের টিকিটে নলহাটির বিধায়ক ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন । বাবার মৃত্যুর পর তৃণমূলে যোগদান করেন মইনুদ্দিন শামস। ২০১৬ সালে নলহাটি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত হন। জয়ী হয়ে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাননি। বাবার তৈরি করা নলহাটি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িতে সস্ত্রীক থাকতে শুরু করেন পেশায় আইনজীবী মইনুদ্দিন শামস। কিন্তু এবার বিধানসভা নির্বাচনে দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। ফলে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। 

আৎও দেখুন, Live Covid- কোভিডে সংক্রমণ কমলেও লাগামছাড়া মৃত্যু, রাজ্যে ব্ল্যাক ফাংগাসে আক্রান্ত বেড়ে ১০ 


প্রসঙ্গত, একুশের নির্বাচন যে বাংলার বুকে ফেলে আসা বাকি নির্বাচন গুলি থেকে অনেকটাই আলাদা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। এবছর একের পর এক হেভিওয়েট দল ছাড়ার পর ভগ্ন হৃদয়ে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। ততদিনে দল ছেড়েছেন তৃণমূলের অন্যতম সেনাপতি শুভেন্দু অধিকারী সহ রাজীব বন্দ্য়োপাধ্যায়। এরপর যখন বোটের প্রার্থী লিস্ট প্রকাশ্যে আনলেন মমতা, তখন বরাবরের চলে আসা সদস্য এতদিন যারা প্রার্থী তালিকায় প্রথম সারিতে ছিলেন, তাঁদের নাম উধাও হয়ে যায়। জেলা-শহরে একের পর এক তৃণমূল নেতা-কর্মী লিস্টে জায়গা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যান। এমনকি হুমকি ভাঙচুরও চলতে থাকে। এবং প্রার্থী তালিকায় নাম না ওঠায় স্বাভাবিকভাবেই আর ক্ষোভ ধরে রাখতে পারেননি মইনুদ্দিন শামসও। 

আরও পড়ুন, 'ভুল সিদ্ধান্তে অন্য দলে গিয়েছিলাম- ক্ষমা করে দিন', দলে ফিরতে চেয়ে মমতাকে চিঠি সোনালির 

দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন মইনুদ্দিন । জেদের বশে দাঁড়িয়েছিলেন নির্দল প্রতীকে। তবে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারেননি। ২ মে গননা শেষ হতেই তিনি নলহাটির বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে কলকাতা চলে যান। সেই দিন থেকেই তার শরীরে করোনার উপসর্গ ছিল বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। ৫ মে কলকাতায় তার করোনা ধরা পড়ে। প্রথম দিকে তিনি খিদিরপুরে নিজের নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। সুস্থ হয়ে দিন চারেক আগে বাড়ি ফেরেন। একদিন পর ফের তিনি অসুস্থ পড়েন। তাঁকে ভর্তি করা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে। রবিবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, টিকিট না পেয়ে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। জেদের বশে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পর তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। মনোবল ভেঙে যাওয়ার জন্য তিনি মারা গেলেন। ভোট না পাওয়ায় নলহাটির মানুষের প্রতি তাঁর অভিমান হয়েছিল।