সংক্ষিপ্ত

  • ছেলে অনেকদিন আগেই বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিল 
  • সময় নিয়ে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে তারপরেই বিজেপি মঞ্চে 
  • মঞ্চে গেলেন একটা সময় তৃণমূলের অভিভাবক শিশির অধিকারী 
  • জয় শ্রীরাম ধনীও তুললেন শিশির অধিকারী 

শমিকা মাইতি,প্রতিনিধি ,  যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছেড়ে অবশেষে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। তাঁর মেজো ছেলে শুভেন্দু আগেই পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু শিশিরবাবু কোনও কালে তাড়াহুড়ো পছন্দ করেন না। কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূলের জন্মের সময়ও বেশ কিছুটা সময় নিয়ে নতুন দলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এবারও অনেকটা সময় নিয়ে তবে, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুললেন। রবিবার এগরায় অমিত শাহের সভায় পৌঁছে শিশিরবাবু বলেন, ‘এটা আমার আত্মসম্মানের লড়াই। চিরকাল লড়াই করেছি। আগামী দিনেও লড়ব।’


পারিবারিক সূত্রে অধিকারীরা বরাবরের কংগ্রেস। শিশিরবাবুর বাবা কেনারাম অধিকারী স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাবা-কাকার হাত ধরেই কংগ্রেসে আসেন শিশিরবাবু। ১৯৬৩ সালে কাঁথির ভবানীচকে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে কাঁথি পুরসভার প্রথম কাউন্সিলরদের মধ্যে একজন। ১৯৮২ সালে কাঁথি দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক হন। দীর্ঘ তিন দশক ধরে কাঁথির পুরপ্রধান ছিলেন তিনি। তাঁর জন্যই বামেরা কাঁথিতে ঢুকতে পারেনি কোনও দিন। এমনকী একবার পুরভোটে জ্যোতি বসুকে নিয়ে গিয়েও সুবিধা করতে পারেনি বামেরা। ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে মমতা যখন তৃণমূল গঠন করেন, তখন তাঁর ঘনিষ্ঠ অনেক নেতাই সঙ্গী হন। শিশিরবাবু কিন্তু যাননি শুরুতে। অনেকটা সময় পরে শিশিরবাবু কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০১ সালে কাঁথি দক্ষিণ কেন্দ্র থেকেই তৃণমূলের হয়ে লড়ে বিধায়ক হন শিশিরবাবু। এরপরে ২০০৬ সালে তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছেন এগরা বিধানসভা থেকে। ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৯ সালে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র থেকে পরপর তৃণমূলের সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি।

নাগরিকত্ব আইন থেকে গরু পাচার রোধ , একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়েই বিজেপির সংকল্পপত্র প্রকাশ অমিত শাহর ..

'আমাদের পরিবার নেই তাই আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত নই', কেন এই কথা বললেন এক ভোট প্রার্থী ...
শিশিরবাবুর চার ছেলে, এক মেয়ে। মেজো ছেলে শুভেন্দু নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় রাজ্য-রাজনীতিতে উঠে আসেন। পরে তিনি সাংসদ, বিধায়ক হন। এমনকী তৃণমূলের মন্ত্রিসভাতেও গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেন শুভেন্দু। কিন্তু সম্প্রতি দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ছিল। ডিসেম্বরে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই অধিকারী পরিবারের বাকিদের উপরে কোপ পড়ে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয় শিশিরবাবুকে। জেলা সভাপতি পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে সৌমেন মহাপাত্রকে বসানো হয়। ছোট ছেলে সৌমেন্দুকে পুর-প্রশাসকের পদ থেকে অপসারিত করা হয়। যার বিরুদ্ধে আবার হাইকোর্টে যান সৌমেন্দু। পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বেশ কিছু কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন শিশিরবাবুর আর এক ছেলে, তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু।  শিশিরের কথায়, ‘যে দিন শুভেন্দু বিজেপি-তে চলে গিয়েছে, সেই ডিসেম্বর থেকে আমাদের বাপ-ঠাকুরদা-চোদ্দো পুরুষ তুলে গালাগাল দিচ্ছে।’ এগরায় বিজেপি-র সভায় যোগ দিয়ে শিশিরবাবু বলেন, ‘অত্যন্ত বেদনা ও দুঃখের সঙ্গে আপনাদের ব্যথিত হৃদয়ে জানাতে চাই, যে ভাবে আমাদের তাড়ানো হয়েছে, আমাদের পরিবারকে নিপীড়িত করার চেষ্টা করা হয়েছে, ইতিহাসে তা লেখা থাকবে।’