সংক্ষিপ্ত

ইস্তফা দেওয়ার পরই বাবুল সুপ্রিয়র রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। আর এবার সেই গুঞ্জনকে আরও উসকে দিলেন তিনি নিজেই। সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নতুন পোস্ট। এবার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন তিনি।

"প্রথমেই বলি এটি কোনও রাজনৈতিক পোস্ট নয় !!" সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়া পোস্টের শুরুতেই একথা লিখেছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। যদিও তাঁর এই পোস্ট নিয়েই জল্পনা বাড়ছে রাজনৈতিক মহলে। 

আরও পড়ুন- সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কড়াকড়ি দার্জিলিংয়ে, শর্ত না মানলে ফেরানো হচ্ছে পর্যটকদের

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক মন্তব্য করেছেন তিনি। যা নিয়ে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। ইস্তফা দেওয়ার পরই তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। আর এবার সেই গুঞ্জনকে আরও উসকে দিলেন তিনি নিজেই। সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর নতুন পোস্ট। এবার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন তিনি।

YouTube video player

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি গান পোস্ট করে বাবুল লেখেন, "প্রথমেই বলি যে এটি কোনও রাজনৈতিক পোস্ট নয় !! আমি লিখতে ভালোবাসি আর আপনারাই আজ আমাকে, অর্থাৎ 'গায়ক বাবুল-'কে এটি লিখতে অনুপ্রাণিত করছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি অত্যন্ত আনন্দের সাথে লক্ষ্য করছি যে আমার গান নিয়ে কোনও পোস্ট করলেই আপনারা অকুণ্ঠ ভালোবাসা প্রকাশ করছেন। গুটি কয়েক নেগেটিভ কমেন্ট বাদ দিলে, বাকি সবই অত্যন্ত সুন্দর সব লেখা। কখনও আনমনে বসে যখন ভাবছি তখন কোথাও যেন মনে হচ্ছে কমেন্টগুলি 'দলমত নির্বিষেশে' গায়ক বাবুলকে লেখা। কিছু নাম চিনতে পারছি যারা হয়তো অন্য সময়ে আমার রাজনৈতিক পোস্টগুলোতে আমাকে তীব্র আক্রমণ করেন বা কটু ভাষা লেখেন কিন্তু এখন সম্পূর্ণ অন্যরকম লাগছে সেই একই মানুষগুলোর লেখা। বলছেন রাজনীতি ছেড়ে দিতে !! কথাগুলো গভীরভাবে ভাবাচ্ছে আমাকে। রাজনীতিতে কিছু পাওয়ার আশায় বা 'পাওয়ার'-এর আশায় তো আসিনি। তাহলে ২০১৪-তে তখন অজানা-অচেনা 'আসানসোল'-এ লড়লাম কেন? জিতেছি - মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী করেছেন, ২০১৯-এ আবার জিতেছি, উনি আবার মন্ত্রী করেছেন। আজ মন্ত্রী নেই বলে ছেড়ে চলে যাওয়াটা কি ঠিক হবে?? জীবনে অনেক হার দেখেছি কিন্তু মনটাকে কখনও হারতে দিইনি - হার মানতে শেখায়নি !! কঠিন সময়েও মুখে হাসি রেখেছি - হাল ছাড়িনি কখনও।" কিন্তু, হঠাৎ তিনি রাজনীতি ছাড়ার কথা কেন চিন্তা করছেন তা নিয়ে তাঁর প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।

তবে রাজনীতিতে আসার পর জীবনের পথে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। আর সেগুলিকে কাটিয়ে সাফল্যের সিঁড়িতে পা দিয়েছিলেন তিনি। নয়া পোস্টের মাধ্যমে একথাও জানিয়েছেন তিনি। লেখেন, "হ্যাঁ, এটা ঠিক যে ২০১৮ সালে নানাকারণে completely disillusioned ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে মন্ত্রী থাকাকালীন পদত্যাগ করেছিলাম - দল অত্যন্ত ভালোবাসার সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করেছিল। সেই সময়ে নতুন করে অনুপ্রেরণা জোগানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় অমিত শাহ-জির-কাছে আমি কৃতজ্ঞ। গান আর রাজনীতি আমার দুটো সত্তা, দুটোতেই কখনও ভালো - কখনও খারাপ ফল হবে। এটাই তো জীবনের নিয়ম !! কিন্তু, আজ নতুন করে আপনারাই আমাকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দিচ্ছেন। আমাদের ভালোবাসাকেই পাথেয় করে রাজনীতির 'কিস্যু' না জানা বাবুল রাজনীতিতে এসেছিল - আপনারাই জিতিয়েছেন, অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন - আমি আমাদের মোদীজির দেখানো পথে, ওঁর নির্দেশমতো কাজ করার চেষ্টা করে গেছি। খানিকটা পেরেছি, খানিকটা পারিনি কিন্তু আপনাদের টাকায় আপনাদের কাজ করেছি। এইটুকুই পাওনা যে আজও সাদা জামা পড়তে কণামাত্র ভয় করেনা !" 

আরও পড়ুন- 'বিরোধীদের সঙ্গে দলের একাংশ মিলে আমাকে অপহরণ করেছে', প্রধানের কথায় অস্বস্তিতে শাসকদল

এছাড়া অনুরাগীদের একাংশের মন্তব্য নিয়ে রীতিমতো চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন বাবুল। এ প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, "কিন্তু আপনারা যা লিখছেন তার মর্মার্থ আমার মনে প্রাণে প্রশ্ন জাগাচ্ছে ! আপনাদের ভালোবাসাকে পাথেয় করে আপনাদেরই মধ্যে দিতে হেঁটে যেতে যেতে কোথাও আপনাদের থেকে, 'আমার আমি' থেকে দূরে চলে যাচ্ছি না তো? তা না হলে বার বার আপনারা ফিরে আসতে বলছেন কেন??" এদিকে বাবুলের এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি হঠাৎ কেন রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মনে। 

YouTube video player