সংক্ষিপ্ত
- কথা বলে পারতে না বলে তাকে বেঁধে রাখা হতো জানলার গরাদের সঙ্গে
- কাজে সূত্রেই গিয়ে আচমকাই তার দিকে চোখ পড়ে যায় এক পদস্থ সরকারি আধিকারিকের
- তারপর প্রধানত তাঁর উদ্য়োগেই মুক্ত হল শিশুটি
- মুক্ত হয়ে সে আধিকারিক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সেলফিও তোলে
কথা বলতে পারে না। এই প্রতিবন্ধকতার জন্যই তালাবন্ধ বাড়িতে জানলার গরাদের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হত বারোর এক শিশুকে। শিশুদিবসের দিনই এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানা গেল। বৃহস্পতিবার সরকারী প্রকল্পের পরিদর্শনে গিয়ে বৈদ্যবাটি এলাকায় ডেপুটি ম্যাজিস্টেট অভিনন্দা মুখোপাধ্যায় ওই শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
জানা গিয়েছে, ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় শিশুটির দিকে হঠাতই চোখ পড়ে যায় ডেপুটি ম্যাজিস্টেট অভিনন্দা মুখোপাধ্যায়-এর। গাড়ি থামিয়ে গিয়ে দেখেন বাড়িটি বাইরে বাইরে থেকে তালা দেওয়া। আর জানলার গরাদের সঙ্গে ছেলেটির ডান পা-ও শিকল ও তালা দিয়ে আটকানো। এরপর তাঁর উদ্য়োগেই শ্রীরামপুর থেকে চাইল্ড লাইনের কর্মীরা আসেন। তাঁদের সঙ্গে সঙ্গেই আসেন শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলর। কিন্তু তার আগেই ঘটনাস্থলে এসে নিজেকে ওই বাড়ির মালকিন বলে পরিচয় দেন এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা। জানা যায় তিনি বছর বারোর ওই ছেলেটির ঠাকুমা।
তাঁর দাবি তাঁর নাতি কথা বলতে পারে না। বাবা-মা বাইরে কাজ করেন। খুব কমই ছেলের কাছে আসেন। তাই কোনও কাজে বাইরে যেতে গেলে নাতিকে জানলার সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। নাহলে মাতি বাইরে বেরিয়ে গেলে আর বাড়ি ফিরতে পারবে না। চাইল্ড লাইনের কর্মীরা ও অভিনন্দা মুখোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে বোঝান, বারো বছরের এক কিশোরকে এইভাবে আটকে রাখাটা অমানুষিক কাজ।
শিকল-মুক্ত হওয়ার পর ওই বালক মুখে না বলতে পারলেও চোখে মুখে বুঝিয়ে দিয়েছে মুক্তির উচ্ছ্বাস। এমনকী, উপস্থিত সরকারি আধিকারিক এবং সংবাদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সেলফিও তোলে। তার পড়াশোনা ও চিকিৎসার ভার প্রশাসন থেকে নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শ্রীরামপুর মহকুমাশাসক তনয় দেব সরকার।
*ব্যবহৃত ছবি প্রতীকি