সংক্ষিপ্ত
পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষকের অভাব থাকার ফলেও অনেক পড়ুয়াও ওই স্কুল ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে ভর্তি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আর সেই কারণেই ধুঁকতে বসা এই স্কুলদুটিকে বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর।
স্কুল (School) আছে। কিন্তু, কোথাও শিক্ষক (Teacher) আবার কোথাও রয়েছে পড়ুয়াদের (Student) অভাব। আর সেই অভাব এতবেশি প্রকট হয়ে উঠেছে যে তার জেরে বন্ধ হতে বসেছে বাঁকুড়ার (Bankura) দুটি স্কুল। একটা সময় পড়ুয়াদের নিয়ে গমগম করত এই স্কুলগুলি। কিন্তু, এখন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের অভাবে সেগুলি ধুঁকতে বসেছে। এমনকী, পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষকের অভাব থাকার ফলেও অনেক পড়ুয়াও ওই স্কুল ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে ভর্তি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। আর সেই কারণেই ধুঁকতে বসা এই স্কুলদুটিকে বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের (Jangalmahal) সারেঙ্গা ব্লকের নেতুরপুর গার্লস জুনিয়ার হাই স্কুল। জানা গিয়েছে, স্থানীয় ছাত্রীদের কথা ভেবে পঞ্চম শ্রেণি (Class Five) থেকে অষ্টম শ্রেণি (Class Eight) পর্যন্ত পঠন পাঠনের জন্য ২০০৯ সালে শুরু হয়েছিল নেতুনপুর গার্লস জুনিয়ার হাই স্কুল। ৯০ জন ছাত্রীকে নিয়ে শুরু হয়েছিল স্কুলের ক্লাস। কিন্তু, ধীরে ধীরে এই স্কুলের ছাত্রীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমতে শুরু করে। বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে সাকুল্যে ৩৬ জন। আর শিক্ষিকা রয়েছেন ৫ জন। কিন্তু, এত কম সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে স্কুল চালাতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষা দফতরকে। স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এত কম সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে স্কুল চালানো কোনভাবেই সম্ভব নয়। সেই কারণে এই স্কুলকে বন্ধ করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন- সাত সকালে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, ফাটল দেখে লাল কাপড় হাতে ট্রেন থামান স্থানীয়রা
কিন্তু, জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যায় পড়বে এলাকার ছাত্রীরা। একই দাবি স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্যদেরও। আর স্কুলের পাঠরত ছাত্রীদের দাবি, স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে তাদের সবথেকে বেশি সমস্যা হবে। কারণ সেই সময় অনেক দূরের স্কুলে গিয়ে তাদের ভর্তি হতে হবে। যার ফলে তারা সমস্যায় পড়বে। সেই কারণে স্কুল বন্ধ না করার দাবি জানিয়েছে তারা।
অন্যদিকে, বন্ধের মুখে ইন্দাস ব্লকের বেলবান্ধী জুনিয়ার হাই স্কুল। ২০১১ সালে পথ চলা শুরু হয়েছিল এই স্কুলের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুরুতে এই স্কুলের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৯০। কিন্তু শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে এই স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে গিয়ে ভর্তি হয়েছে অনেকেই। একমাত্র শিক্ষক শিক্ষিকার জন্য এই স্কুলে ভর্তি হয়নি বহু পড়ুয়া। বারবার স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবি তোলা হয়েছিল কিন্তু তা কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকী, পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষিক শিক্ষিকার অভাবে এই স্কুলে অনেকেই ভর্তি হতে চাইছে না। বরং বাড়ি থেকে অনেক দূরের স্কুলে গিয়ে ভর্তি হচ্ছে তারা। বর্তমানে এই স্কুলের ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা শূন্য। একজন শিক্ষিকা ছিলেন, তাঁকেও এই স্কুল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্য স্কুলে। তাই এই স্কুলটিকে আপাতত তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা শিক্ষা দফতর।