সংক্ষিপ্ত
একশো বছর পার করা শয্যাগত মা হালেমা বেওয়া সঙ্গে ৬০ বছরের বয়স্ক বোন মাবিয়া খাতুন কে নিয়ে সংসার স্বামী হারা সত্তর বছরের রাবিয়া।
কোনও রূপকথার গল্প না। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) এক বৃদ্ধ মহিলার অধিকার আদায়ের কঠিন লড়াইয়ের কথা। নিজের ও পরিবারের আরও দুই শয্যাসাী সদস্যের পেটের জ্বালা মেটেতে সরকার-ঘর ছোটাছুটি এখন তাঁর নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে আর কেউ নেই, একমাত্র গবেষক ছাত্র আলা আমীন। স্থানীয় প্রশাসন এখনও পর্যন্ত পাশে দাঁড়ায়নি ৭০ বছরের রাবিয়ার। সরকারি খাতায় অবশ্য রাবিয়া মৃত। কিন্তু এখনও তিনি জীবিত রয়েছেন। আর বিধবা ভাতার (Widow Pension) টাকার আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
একশো বছর পার করা শয্যাগত মা হালেমা বেওয়া সঙ্গে ৬০ বছরের বয়স্ক বোন মাবিয়া খাতুন কে নিয়ে সংসার স্বামী হারা সত্তর বছরের রাবিয়া। অনেক অনেক দিন আগেই স্বামীকে হারিয়ে তিনি এখন বেওয়া। এক সময় বিধবা ভাতা মিললেও বর্তমানেঅজ্ঞাত কারনে তাও বন্ধ । বারবার দরবার করেও মেলেনি বাংলা আবাস যোজনার ঘর ,চালু হয়নি বিধবা কিংবা বার্ধক্য ভাতাও ।তাতেই দিশাহারা মুর্শিদাবাদের রাম চন্দ্রপুরের বালুটুঙ্গির এই পরিবার।
এই ব্যাপারে ওই পঞ্চায়েতের উপ প্রধান আনোয়ার হোসেন বলেন , “ বছর আটেক আগে আমি উদ্যোগ নিয়ে রাবিয়ার বিধবা ভাতা করে দিয়েছিলাম । তবে শুধু ওই বিধবাই নয় এই এলাকার একাধিক মহিলার ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । ইতিমধ্যে আমরা এই ঘটনা বিডিও সাহেবের নজরে নিয়ে এসেছি । নিশ্চয়ই একটা সুরাহা হবে"। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয়নি।
এক সময় শরীরে বল ছিল রাবিয়া ও তার বোন মাবিয়ার , তখন তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচারিকার কাজ করত। এখন বয়সের ভারে তারা অচল। কেউ আর কাজে ডাকেনা । তাই সরকারি সাহায্য একান্ত প্রয়োজন পরিবারের। আগে সরকারের কাছ থেকে বিধবা ভাতা পেয়ে কোনও রকমে তিন জনের চলে যাচ্ছিল । কিন্তু অজ্ঞাত কারনে সেই ভাতা বন্ধ হয়ে যায় ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে । তার পর একাধিকবার পঞ্চায়েতে ও ব্লক অফিসে আবেদন নিবেদন করেও রাবিয়ার কপালে আর জোটেনি বিধবা ভাতা ।
এই অবস্থায় রাবিয়া বেওয়া তার পাশে দাঁড়িয়ে লড়ছে গবেষক ছাত্র আলা আমীন। তিনি জানাচ্ছেন, সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক এর দপ্তরে গিয়ে জানা যায় রাবিয়া বেওয়া সরকারি নথিতে মৃত। তারপরে পঞ্চায়েত স্তরে রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে শুরু করে ব্লক অফিস সর্বত্র যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সরকারি খাতায় কেন জীবিত মহিলাকে মৃত করা হয়েছে তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
এদিকে বয়স বাড়ার কারনে যরাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন মা ।অভাব আর অনটনের জেরে চিকিৎসা তো দুরের কথা সামান্য পথ্য টুকুও মায়ের মুখে তুলে দিতে পারেন না বলে অক্ষেপ করছিলেন মাবিয়া । তিনি বলেন ,” কত বার কতো জনের হাতে পায়ে ধরলাম , কাগজ লিখে জমা করলাম কিন্তু আমাদের ভাগ্যে সরকারি সুযোগ সুবিধা মিলল না ।” বার্ধক্যে পৌঁছান প্রতিবেশি তিন মহিলার অবস্থার কথা বিবেচনা করে মাস দুয়েক আগে উদ্যোগী হয়েছিলেন গণিতের গবেষক ছাত্র স্থানীয় আল আমীন । তিনি বলেন ,” বিডিও অফিসের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে জানতে পারি খাতা কলমে রাবিয়া মৃত । তাই ওর ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । এখন ফের নতুন করে নাম নথিভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয় অফিস থেকে ।” এই ব্যাপারে জানতে চাইলে কান্না ভেজা চোখে হতাশ রাবিয়া বলেন , আমিতো মরিনি, জীবিত আর কবে মিলবে ভাতা । এখন মা টার মুখে দু বেলা খাবার তুলে দিতে পারছিনা , সে কথা কাউকে বোঝাতেই পারলাম না ।”
PM modi in Uttarakhand: 'উন্নয়নের কোনও নীতি-কৌশল ছিল না আগের সরকারের', কংগ্রেসকে তোপ মোদীর
Omicron: দ্রুত ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের সংক্রমণ, আবারও লকডাউনের পথে বিশ্ব-আশঙ্কা WHOর