সংক্ষিপ্ত
'আমাকে ক্ষমা করে দিও, আমি চুরি করিনি', অপমানে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন কাঁচরাপাড়া মিলন নগরের এক ব্যক্তি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই ভাইয়ের যন্ত্রনার সুবিচার চাইছেন তাঁর দাদা বিশ্বনাথ সরকার।
'আমাকে ক্ষমা করে দিও, আমি চুরি করিনি', অপমানে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন কাঁচরাপাড়া মিলন নগরের এক ব্যক্তি (Kanchrapara Incident)।চুরি করেও অনেকে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়ায়। আবার অনেকে চুরি না করেও অপবাদ পায়। আর সেই অপবাদে পৃথিবীর ছেড়ে চলে যাবারও হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। তবে এই ঘটনায় রাম সরকার আদৌ কোনও অপরাধের অঘটনায় যুক্ত কিনা, নাকি শুধুই মানুষিক অত্যাচারের জন্য এই অপবাদ দিয়েছে তাঁর কাকার ছেলে মেয়েরা, তা তদন্তের পরেই প্রকাশ্যে আসবে। তবে এই মুহূর্তে গায়ের আগুন দেওয়ায় ক্ষতির মুখোমুখি নির্যাতিত ওই ব্যক্তি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই ভাইয়ের যন্ত্রনার সুবিচার চাইছেন তাঁর দাদা বিশ্বনাথ সরকার। ইতিমধ্যেই তিনি একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।
জানা গিয়েছে, কাঁচরাপাড়া মিলন নগরের তলার বাসিন্দা রাম সরকার। পেশায় রংমিস্ত্রি কাকার ছেলে লক্ষণ সরকার বেশ কয়েকদিন আগে তাঁর নামে চুরির বদনাম দিয়ে থানায় অভিযোগ করে। এরপেরই পুলিশ এসে তুলে নিয়ে যায়। আদালতে চালান করে। সেখান থেকে রাম সরকারের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে বিশ্বনাথ। কিন্তু কোর্টের থেকে মুক্তি পেলেও কাকার ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর মানসিক অত্যাচার করত। অবশেষে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এবং সুইসাইড নোটে লেখে তিনি লিখে যান, 'আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী এরা। সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি, আমার সন্তাকে মানুষ করিস বলেও করুণ আর্তনাদ চিঠিতে ফুটে উঠেছে।' কিন্তু কীভাবে চলবে সংসার। মাথার ওপরে ছাদ ভেঙে পড়ে। তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী সরকারের ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে যে পথে বসতে হবে। অবশেষে বীজপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান বিশ্বানাথ সরকার। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কিন্তু এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পাশাপাশি অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনি কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
রাম সরকারের দাদা বিশ্বনাথ সরকার বলেছেন, 'আমার ভাইয়ের নামে একটা কেস দিয়েছিল আমার কাকাতো ভাইয়েরা। অনিমা সরকার, অপর্ণা সরকার, লক্ষণ সরকার। এরা অভিযোগ দায়ের করেছিল যে, ওদের ঘর থেকে সোনার জিনিস চুরি হয়েছে। এরপর ভাইকে থানায় ডেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার করার পরে কোর্টে পাঠানো হয়। গ্রেফতারের পর আমার ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু উদ্ধারও হয়নি। আমি কোর্ট থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। কিন্তু বাড়িতে আনার পরে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দেয়। ভালভাবে যাতে বাঁচতে না পারে, তাই এই অত্যাচার চালায়। তারপর ভাই আর সহ্য করতে না পেরে গায়ে আগুন দিয়েছে। থানা অভিযোগ দায়ের করেছি আমি। ওনারা বলেছেন অভিযোগ জমা রাখলাম। পরে ডাকা হবে। ওর একটা ছোট বাচ্চা আছে, ওর সংসার কী করে চলবে। আমি এই ঘটনায় সুবিচার চাইছি।'