অনুব্রত মণ্ডল মামলায় হুমকি চিঠি পেয়েছিলেন আসানসোলের সিবিআই আদালতের বিচারপতি। এই হুমকি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের আইনজীবীরা। পাশাপাশি তাঁরা নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার জন্য নিরাপত্তাও দাবি করেন।

অনুব্রত মণ্ডল মামলায় হুমকি চিঠি পেয়েছিলেন আসানসোলের সিবিআই আদালতের বিচারপতি। এই হুমকি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখলেন রাজ্যের আইনজীবীরা। পাশাপাশি তাঁরা নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থার জন্য নিরাপত্তাও দাবি করেন। 

রাজ্যের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে একটি চিঠি লেখা হয় দেশের প্রধান বিচারপতিকে। তাতে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান হয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানার পাশাপাশি চিঠির একটি কপি পাঠান হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ও দেশের আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে। চিঠিতে ৮০ জনেরও বেশি আইনজীবী সই করেছেন। তাঁরা নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা কায়েম করার জন্য নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। 

পার্থ ঘোষ কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট জানিয়েছেন, তাঁরা সাধারণ আইনজীবী। তিনি বলেন, 'সরাসরি জাজকে চিঠি লিখে হুমকি দেওয়ার অর্থ বিচার ব্যবস্থার ওপর চাপ তৈরি হওয়া।' তিনি প্রশ্ন তোলেন, জজকে যদি চাপ দেওয়া হয় তাহলে সাধারণের নিরাপত্তা কোথায়? তিনি আরও বলেন এজাতীয় মামলাগুলি অন্য রাজ্যে পাঠান হোক। তিনি আরও বলেন জয়লতিতার মামলার ক্ষেত্রেও এজাতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই চিঠিতে সিপিআইএম, কংগ্রেসের সমর্থকরাও সই করেছেন।

Scroll to load tweet…

আইনজীবীদের লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, এই রাজ্যে ঠান্ডা সন্ত্রাস চলছে। যা নিয়ে তাঁরা রীতিমত ত্রস্ত বলেও জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বাপ্পা চক্রবর্তী নাম করে চিঠি লেখা হয়েছে। তাঁরা অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা হিসেবেও বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, এজাতীয় হাইপ্রোফাইল কেসগুলির বিচারপ্রক্রিয়া চালান খুবই উদ্বেগের হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাঁরা চিঠিতে বলেছেন, তাঁরা সাধারণ আইনজীবী। কেউ কলকাতা হাইকোর্টে বা জেলার বিভিন্ন কোর্টের আইনজীবী। কিন্তু এক বিচারককে এভাবে হুমকি দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করছেন তাঁরা। এই প্রভাব বিচারব্যবস্থার ওপর পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করেছেন তারা। আর সেই কারণেই নিরাপত্তা সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন। 

গত ২০ অগাস্ট আদালতে এসেই হুমকি চিঠি পেয়েছিলেন আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। চিঠিতে তাঁকে বলা হয়েছিল, 'অনুব্রত মণ্ডলকে জামিন দিন। নয়তো আপনাকে আর আপনার পুরো পরিবারকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।' চিঠির প্রেরকের জায়গায় বাপ্পা চক্রবর্তীর নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এই ঘটনা প্রকাশ পেতেই রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ইতিমধ্যেই আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়েছেন। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এই হুমকি চিঠির বিষয়টি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে জেলা জজকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। বুধবার অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদনের শুনানির সময়ও আদালতে এই প্রসঙ্গ ওঠে। কিন্তু বিচারক এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে দুই পক্ষকেই নিষেধ করে দেন। পাল্টা তিনি বলেন, 'আমরা বিচারপ্রক্রিয়ায় যথেষ্ট প্রশিক্ষিত। আমরা অবাধ নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে জানি। আমি যে চিঠি পেয়েছি তার সঙ্গে এই মামলার কোনও সম্পর্ক নেই।' তিনি দুই পক্ষকেই সাবধান করে আরও বলেন, শুনানির সময় হুমকি চিঠির প্রসঙ্গ তুললে তিনি মামলার পক্ষ হয়ে যাবেন। আর বিচারবিভাগীত তদন্ত বসে যেতে বাধ্য হবে। 

আদালতে ঢুকেই 'হুমকি চিঠি'র প্রসঙ্গ তুললেন অনুব্রত, পাল্টা 'মামলার পক্ষ' হওয়ার হুশিয়ারি বিচারকের
কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন কী হবে? রাহুলকে ফেরাতে মরিয়া দলের একটা অংশ
ইডি-র ক্ষমতাবৃদ্ধি সম্পর্কে মোদী সরকারের মতামত কী? নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট