সংক্ষিপ্ত

  • কিশোরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল
  • কান ধরে উঠবোস করানো হল অভিযুক্তকে
  • নিজেদের হাতেই আইন তুলে নিল তৃণমূল
  • দলীয় কার্যালয়ে বসল সালিশী সভা

নিজেদের হাতেই আইন তুলে নিল তৃণমূল। দলীয় কার্যালয়ে বসল সালিশী সভা। সেখানেই অপরাধের শাস্তি দেওয়া হল। কোথাও নজরে পড়ল না পুলিশের ভূমিকা। কিশোরীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার অপরাধে কান ধরে উঠবোস করানো হল অভিযুক্তকে। কার্যত একবারে সমাজের মরাল গার্জেনের ভূমিকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বসে সালিশি সভায় দেওয়া হল শাস্তির নিদান!

গ্রামের কিশোরীর সঙ্গে প্রথমে প্রনয়ের সম্পর্ক তৈরি করে পরে তার সঙ্গে শারীরিক ভাবে মিলিত হয় গোলাপ শেখ নামের এক ব্যক্তি। পরে সেই ঘনিষ্ঠ হওয়ার ছবি নেট দুনিয়ায় ভাইরাল করে ধরা পড়ে অভিযুক্ত। এরপরেই তৃণমূল কার্যালয়ের সালিশী সভায় মুচলেকা দিয়ে কান ধরে উঠবোস করতে হলো ওই যুবককে। রবিবার এই ঘটনা ঘটেছে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মহকুমার কৃষ্ণপুর গ্রামে। 

ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে ওই করিৎকর্মা অভিযুক্ত যুবক। কিন্তু পুলিশে অভিযোগ দায়ের না করে কেন তৃণমূল নেতারা পঞ্চায়েত অফিসে শাস্তির বিধান দিলেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। পুরো বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রথমে ওই কুকীর্তির দায়ে অভিযুক্ত যুবক গোলাপ শেখকে ডেকে পাঠানো হয় স্থানীয় মুসকিনগরের তৃণমূল কার্যালয়ে। সেখানে সালিশি সভায় কান ধরে ওঠবোস করানো হয় যুবককে। সঙ্গে ওই যুবকের ভাইরাল করে দেওয়া অশালীন ছবি, ভিডিও মুছে ফেলার মুচলেকাও লিখিয়ে নেওয়া হয়। 

যদিও ওই সালিশিসভার পরও ওই কিশোরীর ছবি, ভিডিও না মোছায় গোলাপ শেখের বিরুদ্ধে পুলিশে আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করছেন স্থানীয় টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রাক্তন কাউন্সিলর মেহেবুব আলম বলেই এদিন বিশেষ সূত্র মারফত পাওয়া খবরে জানা যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলাপ শেখ বিবাহিত। তার দুই সন্তানও রয়েছে। তার পরেও এক নাবালিকার সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে ওই ব্যক্তি। দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। পরবর্তী সময় শারীরিক সম্পর্কও তৈরি হয় তাদের মধ্যে।

সেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেছিল গোলাপ। পরে দু’জনের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় সেই ছবি, ভিডিও ভাইরাল করে দেয় গোলাপ শেখ। ভাইরাল ছবি, ভিডিও দেখে অভিযুক্ত যুবককে তৃণমূল কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়।  টাউন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রাক্তন কাউন্সিলর মেহেবুব আলম-সহ স্থানীয় নেতৃত্ব অভিযুক্তকে শাস্তির বিধান দেয়। কান ধরে ওঠবোস করানো হয়। সেই ভিডিও-ও এখন ভাইরাল। আপত্তিকর ছবি, ভিডিও মুছে ফেলা হবে বলে লিখিত মুচলেকাও নেওয়া হয়। তার পরেও সেই ভিডিও, ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে। এর পরই গোলাপের বিরুদ্ধে  পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে চলেছেন মেহেবুব আলম। 

স্থানীয় বাসিন্দারা গোলাপ শেখের চরম শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন। পাশাপাশি এইভাবে শাসকদল তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বসে রীতিমতো সালিশি সভা বসিয়ে শাস্তির বিধান দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে নাগরিক মহলে।