সংক্ষিপ্ত

দিল্লি, পঞ্জাবের পর আম আদমি পার্টি এবার কলকাতায় ঘাঁটি তৈরি করবে বলে আপ সূত্রে খবর। বর্তমানে প্রধান উদ্দেশ্য গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচন হলেও পাশাপাশি রবিবারই দক্ষিণ কলকাতায় স্থায়ী রাজ্য দফতর উদ্বোধন করতে চলেছেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত আপ নেতা সঞ্জয় বসু।
 

২০১২ সালের ১৬ নভেম্বর দিল্লির বুকে প্রতিষ্ঠিত হয় আম আদমি পার্টি নামক একটি রাজনৈতিক দল। দলের প্রতিষ্ঠাতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দলের নামেই বোঝা যায় উক্ত দলটি সাধারণ মানুষের জন্যই । সংক্ষেপে এই দলের নামকরণ হয় আপ।যথারীতি আপের প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই দল বিভিন্ন প্রতিবাদ আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নেয়। দিল্লিতে বিদ্যুৎ ও জলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে বেআইনি আঁতাতের অভিযোগ এনে আপ আন্দোলন চালায়। এছাড়া যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণের শিকার মহিলাদের সুবিচার দেওয়া ও শক্তিশালী ধর্ষণ-বিরোধী আইন প্রণয়ন ছিল এই দলের অন্যতম এজেন্ডা।

বিভিন্ন আন্দোলন এবং জনসাধারণের কল্যানের মাধ্যমে দিল্লি দখল করে এই আপ পার্টি। দিল্লি দখলের পর পাঞ্জাব দখলের পাশাপাশি বাংলাতে ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয় আম জনতা পার্টির। সূত্রের খবর অনুযায়ী মধ্য কলকাতায় হত্তয়ার কথা ছিলরাজ্য দফতর। তবে সেখানে ফলপ্রসূ না হলেও দক্ষিণ কলকাতায় স্থায়ী রাজ্য দফতর খুলতে চলেছে আপ। জানা গিয়েছে কোনো সমস্যা দেখা না দিলে রবিবারই সেই দফতরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আপের কেন্দ্রীয় নেতা সঞ্জয় বসু। আপ সূত্রে জানা গিয়েছে, রুবি মোড়ের কাছে হালতুর হসপিটাল রোডে হবে আপের রাজ্য দফতর।

বাংলার ভারপ্রাপ্ত আপ নেতা শনিবার কলকাতায় পা রাখবেন বলে জানিয়েছেন।  রবিবার রাজ্য দফতর উদ্বোধনের কথা স্বীকার করেন এবং  বলেন, ‘‘প্রথমে জেলায় জেলায় আমরা শক্তি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জেলায় সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে। এ বার একটা রাজ্য দফতর জরুরি হয়ে পড়েছিল। অনেক দিন ধরেই ভাল জায়গার খোঁজ চলছিল। শেষ পর্যন্ত রাজ্যে যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা সেটি চূড়ান্ত করেছেন।’’ আপ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জেলায় জেলায় তাদের দফতর তৈরি হয়েছিল কিন্তু প্রয়োজন ছিল পাকাপোক্ত রাজ্য দফতরের।  দুর্গাপুর, মেদিনীপুর, কোচবিহার শহরে স্থায়ী দফতরও হয়েছে আপের। এ বার কলকাতায় আপের রাজ্য দফতর উদ্বোধন হবে।

শুধু বাংলায় নয় তাদের তালিকা থেকে গুজরাটও বাদ নেই। এবিষয়ে জানতে চাইলে সঞ্জয় বলেন, ‘‘এখন আমাদের পাখির চোখ গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন। দলের সিদ্ধান্তই রয়েছে যে, একটি একটি করে রাজ্যের দিকে নজর দেওয়া। গুজরাতে আমরা জেতার মতো জায়গায় রয়েছি। তাই এখন অন্য দিকে নজর নয়।’’ একইসঙ্গে সঞ্জয় আরও জানান, কলকাতায় দলীয় দফতর হয়ে গেলেও গুজরাতের ভোট মেটার আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল কলকাতায় আসবেন না।

গুজরাট যখন আপের বর্তমান প্রধান উদ্দেশ্য তখন বাংলায় তৎক্ষণাৎ রাজ্য দফতর উদ্বোধনের কারণ হিসেবে সঞ্জয় বলেন, ‘‘বাংলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহু মানুষ আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইছেন। কিন্তু কলকাতায় একটা স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় দফতর বানানোর ছাড়পত্র দেয়।’’এছাড়াও সঞ্জয় বসু জানান ‘‘আমরা আগেই বলেছি যে, যেখানে সংগঠন থাকবে সেখানে লড়াই হবে। আবার শুধু সংগঠন থাকলেই হবে না। যেখানে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাবে সেখানেই আমরা লড়ব।’’ লোকসভা নির্বাচনে ভোটে দাঁড়ানোর কথা জিজ্ঞাসা করলে  সঞ্জয়ের জবাব, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে অনেক সময় রয়েছে। তার আগে গুজরাতের নির্বাচন। সেখানে সাফল্য মেলার পরে লোকসভা নির্বাচনের পরিকল্পনা হবে।’’

আরও পড়ুন

পদ্মশিবির ধুলিস্যাৎ, দিল্লির আস্থাভোটে কেজরীওয়ালের জয়জয়কার

'ক্ষমতার দম্ভে মত্ত কেজরিওয়াল', চিঠি লিখে শিষ্যকে কর্তব্য মনে করালেন গুরু আন্না হাজারে

পঞ্চায়েত নির্বাচন দিয়ে বাংলার রাজনীতিতে হাতেখড়ি, ২৩য়ের লক্ষ্যে তৈরি হচ্ছে কেজরিওয়ালের দল