সংক্ষিপ্ত
'এটা পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি করেছে', রামপুরহাট বগটুই হত্যাকাণ্ডের পর বিধানসভা ইস্যুতে বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সিবিআই তদন্তের কথা বলতে গিয়ে টানলেন গুজরাট, হাথরাস, লখিমপুর প্রসঙ্গ।
'এটা পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি করেছে', রামপুরহাট বগটুই হত্যাকাণ্ডের পর বিধানসভা ইস্যুতে বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সিবিআই তদন্তের কথা বলতে গিয়ে টানলেন গুজরাট, হাথরাস, লখিমপুর প্রসঙ্গ।
এটা পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি করেছে, শুভেন্দু ইস্যু
কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'এটা পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি করেছে। ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দলের প্রবীণ মন্ত্রীরা সব বিবৃতি দিয়েছেন। বিজেপি অধিবেশনের শেষ মুহূর্তে যা ঘটিয়েছে, তার নিন্দা করছি।' উল্লেখ্য বগটুইহত্যাকাণ্ডে সোমবার উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা। উত্তাপ এতটাই চরমে যায় যে, শেষ অবধি তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে তা হাতাহাতির আকার ধারণ করে। ইতিমধ্য়েই বিধানসভায় হাতাহাতির ঘটনায় শুভেন্দু সহ ৫ বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বগটুইহত্যাকাণ্ডে তৃণমূল ঘটনার নিন্দা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী নিন্দা করছেন। আপনারা তো সিবিআই চেয়েছিলেন। তা হয়েছে। রামপুরহাটে তদন্ত চলছে। তাহলে আন্দোলন করছেন কেন, প্রশ্ন উঠেছে। কুনাল ঘোষ বলেন,আপনারা বলেছিলেন, সিবিআই চেয়েছিলেন, সিবিআই হয়েছে। তাহলে এখন আপনারা কী চাইছেন। আমি দাবি করছি, বিজেপি সিবিআই কে প্রভাবিত করছেন। যার নাম সিবিআই-র এফআইআর-এ রয়েছে। সেই শুভেন্দু অধিকারী সিবিআই নির্দেশ দিচ্ছেন, কাকে জেরা করতে হবে, কাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
আরও পড়ুন, 'মমতা কি আড়াল করতে চাইছেন', বিধানসভায় রণক্ষেত্রের ঘটনায় প্রশ্ন অমিত মালব্যর
গুজরাতে যখন দাঙ্গা হল, তখন সেখানে ৩৬৫ ধারা জারি হয়নি
এরপরেই ফের তিনি বলেন, সকাল থেকে বিজেপি পরিকল্পনা ছিল, বিজেপি অধিবেশনে ঝামেলা করবে। আমি সকাল থেকেই বলেছিলাম। বিজেপি যা চেয়েছে, তাই হয়েছে। তাহলে রাস্তায় নেমে সস্তার রাজনীতি করছে কেন। গুজরাতে যখন দাঙ্গা হল, তখন সেখানে ৩৬৫ ধারা জারি হয়নি। এখানে তো সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেনি। এখানে একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। এখানে যারা রাষ্ট্রপতি শাসন, সিবিআই চাইছে, তারাই বিধানসভায় মারপিট করছে। কেন করছে গণ্ডগোল, বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সস্তায় প্রচার এবং সিবিআই কে প্রভাবিত করতে চাইছে বিজেপি। যে কারণে এই ধরনের ঘটনা গুলি ঘটাচ্ছে। তদন্ত প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। যে বিজেপির নেতা নির্দেশ দিয়েছেন, প্রভাবিত করছে সেই নেতার নাম সিবিআই এর এফআইআর আছে।একের পর এক ঘটনা বিজেপি শাসিত রাজ্যে হয়েছে। কতগুলি ঘটনায় সিবিআই হয়েছে। আমরা তো সাহায্য করছি। মুখ্যমন্ত্রী তো সাহায্য করছেন। তাহলে কীসের আন্দোলন, প্রশ্ন তার।
আরও পড়ুন, কলকাতায় প্রতিবছর ১ ফুট নিচে নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ জলস্তর, শিউরে ওঠা রিপোর্ট এল সমীক্ষায়
রাজ্যপাল এই রাজ্যের বিজেপির কার্যকরী সভাপতি
বিধানসভায় রামপুরহাট আলোচনা করার যে দাবি বিজেপি করছে, তার ব্যাখ্যা আমাদের দলের পরিষদীয় নেতারা দিয়েছেন। মাননীয় স্পিকার দিয়েছেন। কী আলোচনা হবে বিধানসভায়। সবে তো সিবিআই তদন্ত নিয়েছে। কি হবে আলোচনায়। আপনারা কুৎসা করবেন, আমরা বাস্তব সম্মত উত্তর দেব। এটা মানুষ শুনতে চায় না। মানুষ তদন্ত চায়।রাজ্যপাল এই রাজ্যের বিজেপির কার্যকরী সভাপতি হিসাবে কাজ করে বা বিজেপির ছায়া হিসাবে কাজ করছে। এই রাজ্যপাল রাজ্যকে বদনাম করতে চেষ্টা করছেন। বিজেপির এই নেতা রাজ্যকে কলুষিত করছেন। তিনি ইস্যুতে ইস্যুতে ঘুমিয়ে পড়েন, আবার কিছু ইস্যুতে জেগে ওঠেন।
আরও পড়ুন, ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষিত শহর কলকাতা, চলুন কারণ জানতে ঘুরে দেখা যাক শহরের অলিগলি
হাথরস, লখিমপুর, অসমে সিবিআই তদন্ত হয়নি
তিনি আরও বলেন, অমিত মালব্যর এই বাংলার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি কী বলবেন, মন্তব্য কুনালের। সিবিআই এর অভিযোগপত্রে যার নাম রয়েছে, তাঁকে ধরছে না কেন আগে উত্তর দিক টুইটে মালব্য। সিবিআই নিজের নিরপেক্ষতা হারাচ্ছে। গুজরাতে যখন ঘটনা ঘটেছিল, তখন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, তখন কোথায় ছিল ৩৫৬, তখন কোথায় ছিল পদত্যাগের দাবি। আমরা রামপুরহাট ঘটনার নিন্দা করছি। মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়িয়েছেন। নন্দীগ্রামে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কোথায় ছিলেন। বিজেপি রাজ্যগুলিতে একাধিক খারাপ ঘটনা ঘটেছে, কোন মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন। শিখ দাঙ্গার দায় এখনও কেউ নেয়নি। হাথরস, লখিম্পুর, অসম সিবিআই তদন্ত হয়নি।
অতীতে বিধানসভা ভাঙচুরের ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে অকথ্য নির্যাতন হয়েছিল
বিধানসভার আগের ইতিহাস টেনে কুণাল বলেন, অতীতে যে বিধানসভা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল, সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর উপরে অকথ্য নির্যাতন হয়েছিল। তাঁকে কটূক্তি করা হয়েছিল। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে এসেছিল। তখন কোনো প্ররোচনা ছিল না। বিজেপি এই ঘটনা এখানে জোছনা দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে বিধানসভায়। ৩৪ বছরে বাম আমলে অনেক ধর্মঘট হয়েছে। তখন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে জীবন। এখন করোনা গিয়েছে। মানুষের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। লকদাউনে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছে। সেখানে বামদের এই ধর্মঘট ডাকার কোনও মানে হয় না। তৃণমূল বিজেপির যাবতীয় নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে সেই আন্দোলন করে চলেছে। যেখানে সিপিএম কংগ্রেস এবং অন্য একজনের হাত ধরে বিজেপির বি টিম হিসেবে কাজ করেছিল, তখন মনে ছিল না। সিপিএম এখন ভেসে থাকার চেষ্টা করছে। তাই এই ধরনের ধর্মঘট করে মানুষকে অসুবিধায় ফেলার কোনও মানেই হয় না।'