সংক্ষিপ্ত
“রজার বিনি কি দেশ-বিরোধী শত্রু?” বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে মত রেখে তৃণমূলের ‘সব স্তরে রাজনীতি’ করাকে তীব্র খোঁচা বিজেপি মুখপত্র শমীক ভট্টাচার্যের।
বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদ থেকে বাংলার মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাদ দেওয়া নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিসিসিআইয়ের যুক্তি ছিল, সভাপতি পদে তিন বছরের বেশি কেউই আসীন থাকেন না। পালটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্তি দেখিয়েছিলেন, সচিব হিসাবে যখন অমিত-পুত্র জয় শাহই দ্বিতীয়বারের জন্য আসীন হচ্ছেন, তখন গাঙ্গুলিকে বাদ দেওয়া কেন?
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সৌরভের জন্যও ছিল, অমিত শাহের ছেলের জন্যও ছিল। তা হলে সৌরভকে বাদ দেওয়া হল কোন উদ্দেশ্যে?” সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বোর্ডের তরফ থেকে বঞ্চনা করা হয়েছে বলে দাবি তুলে মমতা সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে জানান, “জগমোহন ডালমিয়া, শরদ পওয়াররা আইসিসিতে গিয়েছিলেন। সৌরভও আইসিসিতে প্রতিনিধি ছিল। আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, দয়া করে সৌরভকে আইসিসির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হোক।”
“দয়া করে এর মধ্যে রাজনীতি ঢোকাবেন না। কোনও রকম প্রতিহিংসা দেখাবেন না। খেলার স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিন।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধ সত্ত্বেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে যে বাংলার শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে দড়ি টানাটানি লেগেই আছে, তা আরও একবার জাগিয়ে তুললেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির মুখপত্র শমীক ভট্টাচার্য। মমতাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “সৌরভ গাঙ্গুলির প্রতি এতই যখন আস্থা এবং ভালোবাসা, তখন বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাস্যাডর সৌরভকে না করে শাহরুখকে করা হল কেন?”
শাসকদলকে খোঁচা দিয়ে শমীক আরও বলেন, “আমরা তো জানি, বাংলার গর্ব শাহরুখ খান। সৌরভ গাঙ্গুলি নন। রাজ্যের দৈনন্দিন সমস্যা, সীমাহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ যখন প্রতিবাদ করছেন, তখন বিতর্কে অন্য দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী এই বিতর্কটাকে তৈরি করে দিয়ে চলে যেতে চাইছেন। বিজেপি প্রাসঙ্গিক বিতর্কের মধ্যে যেতে নারাজ।” পাশাপাশি তিনি এও দাবি তোলেন, যে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে চর্চার আগে রাজ্যে সমস্ত শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ করার ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী যেন অধিক মনোনিবেশ করেন।
সৌরভ গাঙ্গুলির পদে রজার বিনিকে নির্বাচিত করা প্রসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “যদি দেশের স্বার্থে সৌরভ গাঙ্গুলিকে সভাপতি করতেই হয়, তাহলে রজার বিনি কি দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনও কাজ করেছেন? ভারতীয় ক্রিকেটে কি তাঁর কোনও অবদান নেই? রজার বিনি কি দেশ-বিরোধী শত্রু?” বিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে মত রেখে আরও একবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কথাকে টেনে বিজেপি নেতা বলেন, “এগুলোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বা রাজনীতিকে টেনে আনার কোনও প্রয়োজন নেই। আসলে তৃণমূল সবকিছুরই তৃণমূলীকরণ চায়।”
সমগ্র ঘাসফুল শিবিরের দিকে আঙুল তুলে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কলকাতার বড় ক্লাব, কমিটিগুলোর নামগুলোর (ব্যানার) দিকে তাকিয়ে দেখুন, সব জায়গায় কেউ হকি, কেউ ক্রিকেট, কেউ ফুটবলে আছেন। যাঁরা এসব ক্রীড়াসামগ্রী চোখেই দেখেছেন, টিভিতেই দেখেছেন, কোনওদিন মাঠে নামেননি। সব স্তরে রাজনীতি করেছে, দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে তৃণমূল। সুতরাং, নিজের মনের আয়নায় তারা অন্যকে দেখবার চেষ্টা করছে। আমরা এই বিতর্কে যেতে আগ্রহী নয়।”
আরও পড়ুন-
দাদা-র বিরুদ্ধে কেউ একটা কথাও বলেনি: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য বিসিসিআই-এর বিদায়ী কোষাধ্যক্ষের
দুয়ারে সরকার প্রকল্পে থাকছে না ১০০ দিনের কাজের সুযোগ, কেন্দ্রের আর্থিক বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত বাংলা?
নিশুতি রাতে দুলে উঠছে রাজবাড়ির দোলনা, কালীপুজোর অন্ধকারে বল্লভপুরে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের এ কেমন রূপকথা!