সংক্ষিপ্ত
দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (125 Birth Anniversary of Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৫তম জন্মদিন উদযাপন নিয়ে অর্জুন সিং (Arjun Singh) ও পবন সিং (Paban Singh)-কে ঘিরে ধুন্ধুমার ভাটপাড়ায় (Bhatpara)। ব্যাপক সংঘর্ষ বিজেপি (BJP) ও তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) মধ্যে।
কলুষিত নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিবসের (125 Birth Anniversary of Netaji Subhas Chandra Bose) অনুষ্ঠান। ভাটপাড়া (Bhatpara) রয়েছে ভাটপাড়াতেই। নেতাজি জন্মজয়ন্তীর দিনও বেলাগাম হিংসার সাক্ষী থাকল অর্জুন সিং-এর (Arjun Singh) গড়। সকাল থেকেই নেতাজির প্রতিকৃতীতে কে মাল্যদান করবে, তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) না বিজেপি (BJP) - এই দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা। নিজেদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এমনকী, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সিআইএসএফ-কে (CISF) শূন্যে সাত রাউন্ড গুলিও চালাতে হয়। আপাতত সংঘর্ষ থামলেও, এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
কী ঘটেছিল? সূত্রের খবর, রবিবার সকালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বিজেপি। সেখানে নেতাজির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করতে গিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক পবন সিং (Paban Singh)। তাকে কিছু স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বাধা দেন বলে অভিযোগ। এই নিয়েই বচসা বেধেছিল দুই পক্ষে, যা ক্রমে হাতাহাতির আকার নেয়। ইতিমধ্য়ে সেখানে অর্জুন সিং এলে উপস্থিত হলে অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। ইট বৃষ্টি, বোমাবাজি শুরু হয়। এই সংঘর্ষের মধ্যেই সাত রাউন্ড গুলি চালায় সিআইএসএফ।
ভাটপাড়ার বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-এর অভিযোগ, এদিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে বিজেপি বিধায়ক পবন সিং। সেই সময়ই তাকে তৃণমূলের গুন্ডারা আক্রমণ করেছিল। পবন সিং-কে লক্ষ্য করে গুলি চলে, ইট ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন অর্জুন সিং। এরপর তিনি নিজে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে, তাঁকেও আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। ভাটপাড়ার বিধায়কের আরও অভিযোগ, পুলিশের সামনেই সবকিছু ঘটে। তাঁর গাড়িও ভাঙা হয়েছে।
অন্যদিকে, ভাটপাড়া পুরসভার প্রশাসক তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গোপাল রাউতের (Gopal Raut) অভিযোগ, তিনিও সেখানে নেতাজীর প্রতিকৃতীতে মালা দিতেই এসেছিলেন। সেইসময়, বিজেপির কর্মীরা 'অসভ্যতা' শুরু করেছিল। তাঁর অভিযোগ এরপরই সেখানে জোর জবরদস্তি করে মালা দিতে গিয়েছিলেন অর্জুন সিং ও তাঁর ছেলে পবন সিং। এর প্রতিবাদ করেন স্থানীয় মানুষ। তখনই বিজেপির কর্মীরা তাদের উপর চড়াও হয়। আর তা থেকেই দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেধেছিল। এমনকী, অর্জুন সিংয়ের দেহরক্ষী হিসাবে নিযুক্ত এক সিআইএসএফ কর্মী তাঁকে লক্ষ্য করেই গুলি চালিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছেন গোপাল রাউত।
কে ভুল, কে ঠিক - তা তদন্তের বিষয়। ভাটপাড়ার এই হিংসার ছবি নৈমিত্তিক হয়ে পড়েছে। গুলি চলা, বোমা পড়া প্রায় স্বাভাবিক ঘটনা। দিন কয়েক আগেও এই ভাটপাড়াতেই এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে গুলি করে খুন করার চেষ্টা করেছিল একদল বিজেপি আশ্রীত দুষ্কৃতী, এমন অভিযোগ উঠেছিল। যদিও অর্জুন সিং বিষয়টি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে দাবি করেছিলেন। তবে, একটা প্রশ্ন তারপরও থেকেই যায়, দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিবসে এমন ঘটনা কি অভিপ্রেত ছিল?