সংক্ষিপ্ত
- সীমান্তে নিরাপত্তার প্রয়োজনে নতুন নিয়ম
- নতুন নিয়ম চালু করা নিয়ে বিএসএফ-কৃষক সংঘর্ষ
- কৃষকদের পথ অবরোধ, লাঠিচার্জ বিএসএফের
- গুরুতর জখম ৭, মোতায়েন ব়্যাফ
সীমান্তে নিরাপত্তার প্রয়োজনে নতুন নিয়ম চালু করাকে কেন্দ্র করে বিএসএফ জওয়ান ও কৃষকের তুলকালাম সংঘর্ষ। সংঘর্ষের প্রতিবাদে কৃষকদের পথ অবরোধে লাঠিচার্জ করে বিএসএফ। এরপরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গুরুতর জখম হয় ৭, মোতায়েন করা হয় ব়্যাফ। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল মুর্শিদাবাদের ফরাজিপাড়া ফেরিঘাট এলাকায়। শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে ঘটনায় কমপক্ষে গুরুতর জখম হয়েছেন ৭ জন।
ঘটনার জেরে বিএসএফের গাড়িতে হামলা চালায় কৃষকরা বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। মোতায়েন করা হয়েছে রেপিড অ্যাকশন ফোর্স। আহতদের প্রথমে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মূলত স্থানীয় ১৪৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে কৃষকদের।
জমিতে কৃষকদের চাষ করতে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার প্রয়োজনে নতুন নিয়ম চালু করাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। আর তারপরেই মুহুর্তের মধ্যে বিএসএফ ও কৃষকদের মধ্যে ধুন্ধুমার ঝামেলা বাধে। এই অশান্তির জেরে বিএসএফ জওয়ানরা লাঠিচার্জ করেন বলে অভিযোগ। পালটা জওয়ানদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট,পাথর ছুঁড়ে যথেচ্ছভাবে ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা। রাজ্য সড়কও অবরোধে বসেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, ফরাজিপাড়া ফেরিঘাটের ১ নম্বর গেট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার কৃষক সীমান্তের জমিতে চাষ করতে যান। সেখানে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম অনুযায়ী, জমির আসল মালিকের নামের ভিত্তিতে প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন চাষির নাম নথিভুক্ত করে জমিতে চাষের কাজ করতে পারেন।
ওই শ্রমিকদের অভিযোগ, বিএসএফ জওয়ানরা পুরোনো এই নিয়ম মানতে নারাজ। জওয়ানেরা সেক্ষেত্রে সীমান্তে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার দাবিতে শুধুমাত্র এককভাবে জমির মালিকের নামে নয়, সেই জমিতে চাষের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক কৃষকের আলাদা আলাদা পরিচয়পত্র জমা দিয়ে নাম এন্ট্রি করতে বলে। আর তাতেই জমির মালিক ও কৃষকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিএসএফ জওয়ানদের সাথে প্রথমে তর্কাতর্কি ও পরবর্তীতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ।
ঘটনায় বিএসএফ জওয়ানদের হাতে সংঘর্ষে আক্রান্ত কৃষক হাসানুজ্জামান মন্ডল অভিযোগ করে বলেন,"নতুন এই নিয়মের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতেই বিএসএফ জওয়ানরা রেগে যান। তারপর এই মুহুর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সংঘর্ষ বাধে। জওয়ানেরা বেধড়ক লাঠিচার্জ থেকে শুরু করে মারধর করে। আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি"।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএসএফের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিএসএফের গাড়ি ভাঙচুর করে এলোপাথাড়িভাবে। তারপরেই খবর পেয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ উৎপল দাস বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। শুরু হয় জমির মালিক ও কৃষকদের পথ অবরোধ। যদিও এই ঘটনায় বিএসএফের তরফে আগে তাদের ওপরেই হামলার অভিযোগ তোলা হয়। গোটা এলাকায় এখনও উত্তেজনা রয়েছে।