সংক্ষিপ্ত

ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করতে সেই নন্দীগ্রামে পৌঁছাল সিবিআইয়ের বিশেষ দল। সিবিআইয়ের পাশাপাশি আজ সেখানে পৌঁছেছে সিআইডিও। 

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের মধ্যে অন্যতম হেভিওয়েট আসন ছিল নন্দীগ্রাম। কারণ এই আসনে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ছিলেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর বিজেপির তরফে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে শুভেন্দুর কাছে হেরে যান মমতা। শুধুমাত্র রাজ্যের মধ্যেই নয় গোটা দেশের নজর ছিল এই আসনের দিকে। আর এবার ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করতে সেই নন্দীগ্রামে পৌঁছাল সিবিআইয়ের বিশেষ দল। সিবিআইয়ের পাশাপাশি আজ সেখানে পৌঁছেছে সিআইডিও। বিরুলিয়া বাজারে মমতার পায়ে আঘাত লাগার ঘটনায় তদন্তের জন্য আজই সেখানে যান সিআইডি আধিকারিকরা।

ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুর। ২ মে ভোটের ফলপ্রকাশের পর বেশ কিছুদিন জেলার মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। শিরোনামে উঠে এসেছিল নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের চিল্লগ্রাম, মহম্মদপুর, গোকুলনগর সহ একাধিক এলাকা। এই ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে চিল্লগ্রামে খুন হয়েছিলেন বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি (৪৯)। অভিযোগ, ৩ মে চিল্লগ্রামে বিজেপি কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালানো হয়। ঘরবাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি মারধর করা হয় বিজেপি কর্মীদের। আক্রান্ত হয়েছিলেন দেবব্রত। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তমলুক জেলা হাসপাতালে ও পরে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থান্তরিত করা হয়েছিল। ১৩ মে তাঁর মৃত্যু হয়। দেবব্রত ন্যায়বিচার পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এরপর মে মাসেই নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা খতিয়ে দেখতে শুভেন্দুর সঙ্গে মৃত দেবব্রতর বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। আর আজ নন্দীগ্রামে পৌঁছে প্রথমেই তাঁর বাড়িতে যায় সিবিআইয়ের প্রতিনিধি দলটি। 

আরও পড়ুন- বর্ধমানে শুধুই নিহত BJP কর্মীর বাড়িতে 'স্পট ভিজিট', CBI-র দেখা পেল না মৃত TMC কর্মীর পরিবার

এদিকে ভোটের আগে ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন মমতা। সেখানে বিরুলিয়া বাজারে পায়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। সে সময় খুনের অভিযোগ তুলেছিলেন। এবার সেই ঘটনার তদন্তে বিরুলিয়া বাজারে এল সিআইডি। বিরুলিয়া বাজার চত্বর ঘুরে দেখার পাশাপাশি স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন সিআইডি আধিকারিকরা। 

আরও পড়ুন- এখনই বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই মিলবে না, আজও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়

আরও পড়ুন- পুলিশের ভয় দেখিয়ে বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ককে দলবদল করানো হয়েছে, অভিযোগ শুভেন্দুর

অন্যদিকে, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনী অস্ত্র রাখার অভিযোগ, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। এরপর ২৮ অগাস্ট আরও ১০টি ও ২৯ অগাস্ট আরও সাতটি এফআইআর দায়ের করা হয়। আর আজ আরও তিনটি নতুন এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় এই এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। এর ফলে মোট এফআইআর-এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১। তবে, একইদিনে নন্দীগ্রামে সিআইডি ও সিবিআই আধিকারিকদের তদন্ত করতে যাওয়ার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।  

YouTube video player