সংক্ষিপ্ত
করোনাকে ছৌ নাচের মাধ্যমে তুলে ধরে তৈরি হচ্ছে "করোনাশুর" পালা। এই পালাকে যাতে দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য রাঙামাটি পুরুলিয়ার ঝালদার রুপাই নদীর তীরের কাশবনের মনোরম পরিবেশে চলছে ছৌ নৃত্যের প্রশিক্ষণ।
করোনার কারণে দু'বছর ধরে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে পুরুলিয়ার ঐতিহ্যবাহী ছৌ নাচ। দু'বছর ধরে কোথাও কোনও ডাক পাননি পুরুলিয়া ছৌ শিল্পীরা। ছৌ নাচে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা। করোনাকে তাই অসুর রূপে দেখছেন ছৌও শিল্পীরা। আর তাই করোনাকে ছৌ নাচের মাধ্যমে তুলে ধরে তৈরি হচ্ছে "করোনাশুর" পালা। এই পালাকে যাতে দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় করার জন্য রাঙামাটি পুরুলিয়ার ঝালদার রুপাই নদীর তীরের কাশবনের মনোরম পরিবেশে চলছে ছৌ নৃত্যের প্রশিক্ষণ।
হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই দুর্গাপুজো। কোভিড পরিস্থিতির কারণে এবারেও দুর্গা পুজার ডাক নেই পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য শিল্পীদের তবু প্রশিক্ষণে খামতি রাখছেন না পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পীরা। যে করোনা ছৌ নাচে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেই করোনাকে হাতিয়ার করে ছৌ নাচের মাধ্যমে তুলে ধরে এগোতে চাইছেন পুরুলিয়ার দেশ দেশান্তর ঘুরে আসা নামকরা সব ছৌ নিত্য শিল্পীরা। সে জন্যই পুরুলিয়ার ঝালদা থানার পিলোই গ্রামের বীণাপাণি ছৌ নিত্য সমিতির নতুন পালার নাম দেওয়া হয়েছে "করোনা সুর নিধন"।
বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। আর এই পুজোয় পুরুলিয়া জেলার ছৌ নাচের আসর বসে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই সহ সব বড় বড় শহরের মণ্ডপগুলোতে। কিন্তু, করোনা পরিস্থিতি থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান ও পুজোতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা তবুও আশায় বুক বাঁধছে ঝালদা ১ নম্বার ব্লকের প্রান্তিক গ্রাম পিলোই এর ছৌ শিল্পীরা। রুপাই নদীর কাশ বনের মনোরম পরিবেশে চলেছে করোনাসুর নিধন পালার প্রশিক্ষণ।
বিষয়টি নিয়ে বীণাপাণি ছৌ নিত্য সমিতির প্রশিক্ষক অমরেশ মাহাত, তরনিকান্ত মাহাতরা জানান, "অন্য বছর দুর্গা পুজোতে কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের ছৌ নাচের ডাক আসে, কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে দু'বছর থেকে আর কোনও ডাক পাইনি। তবুও আশা রয়েছে যে দুর্গাপুজোর আবহে ডাক আসবে। সেই আশায় প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছি।" ছৌ নাচে অভিনবত্ব বা নতুনত্ব আনতে নতুন পালার নাম দেওয়া হয়েছে "করোনা সুর নিধন"। বিনাপানী ছৌ নৃত্য দলে মোট ৩৫ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁরা জানান, অনেকে শিল্পী ভাতার কার্ড পাননি। এখন তাঁদের অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি। সংসার চালানো মুশকিল। তবু করোনাসুর নিধন পালার উপর নির্ভর করে আশায় বুক বেঁধে নতুনভাবে এগোতে চাইছেন বলে জানালেন ছৌ নৃত্য শিল্পীরা।