সংক্ষিপ্ত
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রায়ই অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ প্রশাসনিক কাজে শাসকদলের তৎপরতার দিকেই আরও একবার নজর ফেরাল।
পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা দফতরের নিয়োগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে টালমাটাল, আঁচ গিয়ে লেগেছে শাসকের গদিতেও। জেলে যেতে হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। দুর্নীতির জেরে প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দিতে হয়েছে। তাঁর সম্পত্তিও বর্তমানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে। এই অবস্থায় শিক্ষা দফতরে নিয়োগ নিয়ে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘নিয়োগ কমিটির অনুমতি ছাড়া স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনও ধরনের নিয়োগই যেন না হয়’, স্পষ্ট নির্দেশ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর।
নবান্ন সূত্রে খবর, শুধুমাত্র রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ নয়, পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত নিয়োগের ক্ষেত্রেই কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। তবে, যেহেতু শিক্ষা দফতরের অন্দরেই নিয়োগ দুর্নীতি সবথেকে বেশি, তাই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেই বিশেষভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা ছাড়াও, যে কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিটি দফতরের নির্দিষ্ট কমিটির থেকে অনুমতি চেয়ে নিতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রশাসনিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বুধবার নবান্নে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী এবং আধিকারিকরা যোগ দিয়েছিলেন। ওই বৈঠকেই শিক্ষামন্ত্রীকে সতর্ক করেন মমতা। তিনি বৈঠকে বলেছেন, ‘নিয়োগ কমিটির সুপারিশ ছাড়াই বহু পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। সুপারিশ কমিটির সদস্যরাও গ্রেফতার হয়েছেন। তাই, এবার স্থায়ী বা অস্থায়ী যে কোনও নিয়োগের ক্ষেত্রেই কোনও ফাঁক রাখা যাবে না।’ সূত্রের খবর, ভূমি থেকে রাজস্ব বৃদ্ধিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক কর্তাদের।
উল্লেখ্য, শিক্ষা দফতরের মতো দমকল দফতরেও নিয়োগ সংক্রান্ত বেনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। নিয়োগ কমিটির সুপারিশ ছাড়াই যে প্রচুর দুর্নীতিপূর্ণ নিয়োগ করা হয়েছে, তা এখন স্পষ্ট। রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে শাসকের বিরোধী দলগুলি। বিচারপতির নজরে আনা হয়েছে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পারিবারিক সম্পত্তিও। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রায়ই অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশ প্রশাসনিক কাজে শাসকদলের তৎপরতার দিকেই আরও একবার নজর ফেরাল।
আরও পড়ুন-
আত্মপ্রত্যয়ের স্ফুরণ ছড়িয়ে দিতে চোরবাগান সার্বজনীনের থিম ‘অন্তর্শক্তি’, সম্মান জানাল স্বয়ং ইউনেস্কো
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জলবণ্টন সমস্যা কি সহজতর হবে? মোদী সাক্ষাতের আগে বার্তা হাসিনার
“আগামী দিনে পিসি-ভাইপোকেও হয়তো কেষ্টর মতো মাটিতেই শুতে হবে”, নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বিরোধীদের দিলীপ-বাণ