সংক্ষিপ্ত
- ভুয়ো টিকা কাণ্ড নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
- দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজুর নির্দেশ
- পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি
- তদন্তের জন্য ১০ সদস্যের সিট গঠন লালবাজারের
কসবায় ভুয়ো টিকা প্রতারণা কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় বেজায় চটেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- উত্তরপ্রদেশের ভোটেও মমতার 'খেলা হবে', তৃণমূলের বই থেকে পাতা ধার নিল সপা
সূত্রের খবর, কসবার ওই ঘটনা নিয়ে গতকাল একাধিকবার পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটে তার জন্য কমিশনারকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে পৌরনিগমের নিচুতলার কর্মীরা যুক্ত রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। আর সেই নিয়ে তদন্ত করতেই ডিসিডিডি সৈকত ঘোষের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে লালবাজার।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, কসবার ওই ভুয়ো ক্যাম্পে যাঁরা ওইদিন প্রতিষেধক নিয়েছিলেন তাঁদের সবাইকে চিহ্নিত করতে হবে। তারপর তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হবে। এর জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আর যদি তাঁদের কারও শরীরে কোনওরকম সমস্যা দেখা যায় তাহলে অবিলম্বে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। সূত্রের খবর, ক্যানিং স্ট্রিটের মেহতা বিল্ডিংয়ের এক ব্যবসায়ীর থেকে অ্যামিকাসিন অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন কিনে তা করোনা প্রতিষেধক বলে চালিয়েছিল দেবাঞ্জন। ধৃতের অফিস থেকে ওই রসিদ মিলেছে।
আরও পড়ুন- 'কিছু হলে বলত মোদীর টিকার দোষ' - স্বাস্থ্যভবনে হানা শুভেন্দুর, ষড়যন্ত্র দেখছে বিজেপি
গতকাল দেবাঞ্জনের মুখোমুখি বসিয়ে তার পরিচিত চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। যাঁর দোকানে ভুয়ো করোনা প্রতিষেধকের মোড়ক বানিয়েছিল দেবাঞ্জন, তিনিও ওই চার জনের অন্যতম। পুলিশের অভিযোগ, পৌরনিগমের অফিসারদের সই জাল করে ভুয়ো পরিচয়পত্র ছাড়াও ভুয়ো নথি দিয়ে কলকাতার তিনটি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন দেবাঞ্জন। এছাড়া কলকাতা পৌরনিগমের নামেও একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। তার জন্য পৌরনিগমের দু'জন আধিকারিকের নামও ব্যবহার করা হয়েছিল। অভিযোগ, বাগরি মার্কেট থেকে ভুয়ো ওষুধের ভায়াল কিনে তার উপর কখনও কোভিশিল্ড, কখনও স্পুটনিক প্রতিষেধকের স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল দেবাঞ্জন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য দু'জন কমপাউন্ডারও নিয়োগ করেছিল অভিযুক্ত। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এছাড়া দেবাঞ্জনের সঙ্গে কোনও দফতরের যোগাযোগ রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কাউকেই ছাড় দেয়নি দেবাঞ্জন। নিজের সংস্থার কর্মীদেরও ভুয়ো প্রতিষেধক দিয়েছে। এছাড়া কসবার ওই শিবিরে চার দফায় মোট ৫১৫ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। আর সিটি কলেজ থেকে ৭২ জনকে প্রতিষেধক দিয়েছে। কসবা ও সিটি কলেজের ওই ভুয়ো শিবিরে যাঁরা টিকা নিয়েছিলেন আজ তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবে স্বাস্থ্য দফতর।