সংক্ষিপ্ত

  • নদিয়ার কালীগঞ্জের রাধাকান্তপুরের ঘটনা
  • প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধরনায় বসেন প্রেমিকা
  • প্রেমিক বেঁকে বসাতেই প্রতিবাদ করেন মাফিজা
  • শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের হস্তক্ষেপে মঙ্গলবার বিয়ে দু' জনের
     

আবারও ধরনার জয়। জলপাইগুড়ির ধুপগুড়ির পরে এবার নদিয়ার কালীগঞ্জের রাধাকান্তপুরে। তবে ধুপগুড়িতে প্রেমিকার বাড়ির সামনে ধরনা দিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রেমিকাকে বিয়ে করে ছেড়েছিলেন প্রেমিক। আর রাধাকান্তপুরের পূর্বপাড়ায় প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধরনায় বসে তাঁকে বিয়েতে রাজি করিয়ে ছাড়লেন প্রেমিকা। 

ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। রাধানগরের পূর্বপাড়ায় নিজের প্রেমিক জিন্নত আলির বাড়ির সামনে ধরনায় বসেছিলেন মাফিজা খাতুন নামে এক তরুণী। তাঁর অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকলেও এখন জিন্নত তাঁকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছেন না। দু' জনেই পলাশিপাড়া কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া। 

আরও পড়ুন- প্রেমিকের ধর্না সফল, লিপিকার সঙ্গেই চার হাত এক হল অনন্তের

মঙ্গলবার প্রায় সারাদিন মাফিজা ধরনা দেওয়ার পরেও জিন্নতের মন গলেনি। ধরনার খবর ছড়িয়ে পড়তে গ্রামেও হইচই পড়ে যায়। প্রেমিক জিন্নতের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রামবাসীরাও। এক সময়ে তাঁরাই জিন্নতের বাড়ির তালা ভেঙে মাফিজাকে প্রেমিকের বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দেন। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন মীরা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুবীর হালদার। অনড় মাফিজা তাঁকেও জানিয়ে দেন, তিনি জিন্নতকেই বিয়ে করবেন। এর পর গ্রামবাসীদের নিয়ে জিন্নতের সঙ্গে কথা বলে তাঁকে রাজি করান সুবীরবাবু। মাফিজার দাবি ছিল, জিন্নতের সঙ্গে তাঁর শারীরিক সম্পর্কও তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রেমিকার দাবি মেনে নেন প্রেমিক। সম্পর্কের কথাও স্বীকার করেন। মাফিজাকে বিয়ে করতেও রাজি হন তিনি। এর পরেই ধর্মীয় রীতি মেনে এবং আইনি মতে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয় মাফিজা এবং জিন্নতের। 

মাফিজা- জিন্নতের চার হাত এক হওয়ায় তাঁদের দু' জনের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও এলাকাবাসীও খুশি। বিয়ের পর মাফিজা ও জিন্নাত আপাতত মাফিজার বাড়িতেই রয়েছেন। প্রেমিককে বিয়ে করে মাফিজা বলেন, ’আমি খুব খুশি। আমি অনেক কষ্ট করে জিন্নতকে পেয়েছি, আর হারাতে চাই না। যে সব মেয়েরা আমার মতো পরিস্থিতিতে পড়েও সামাজাকি কারণে ভয় পাচ্ছে, তাঁদেরকেও আমি রুখে দাঁড়াতে বলব।’

এই বিষযে মীরা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান সুবীর হালদার বলেন ’খবর পাওয়ার পর আমি মেয়েটির সঙ্গে দেখা করি। এই ভাবে একজন মেয়ে সারা রাত ধরে বাইরে বসে ছিলেন শুনেই খারাপ লাগছিল। সেই কারণে মানবিকতার খাতিরেই ওদের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ওঁদের ভালবাসার যে জয় হল, সেটা ভেবেই খুব ভাল লাগছে।’

ধুপগুড়ির ঘটনাতেও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, ধরনা দিয়ে প্রেমিকাকে বিয়ে করলেও তাঁর মন কি জিততে পেরেছিলেন প্রেমিক? মাফিজা- জিন্নতের ক্ষেত্রেও সেই একই প্রশ্ন উঠছে। যদিও সেসব নিয়ে এখন আর ভাবতেই রাজি নন ওই তরুণী।