সংক্ষিপ্ত

  • করোনা আক্রান্ত হয়ে মানসিক বৈকল্য
  • হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা
  • রাত থেকে নিখোঁজ রোগী
  • সকাল দেহ মিলল হাসপাতালের নিচের জঙ্গলে

শেখ হেনা, প্রতিনিধি- করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে সামনে এল আরও একটি প্রশ্ন। কারণ, পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যু এই প্রশ্নকে উসকে দিয়েছে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, মৃত-র মানসিক বিকারের যে প্রমাণ তারা পেয়েছেন তা আগে ছিল না । করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর এই মানসিক বিকার বাড়তে থাকে। যদিও, করোনাআক্রান্তের মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের বিরুদ্ধেই অবহেলা এবং গাফিলতি-র অভিযোগই এনেছে পরিবার। 

জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ শালবনির করোনা হাসপাতালের পিছনে জঙ্গলে মেলে এক রোগীর দেহ। ৫৫ বছরের ওই মৃত ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘাটাল হাসপাতাল থেকে শালবনির করোনা হাসপাতালে আসেন। মঙ্গলবার থেকেই ওই ব্যক্তি জ্বরে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার করোনার পরীক্ষা পর জানা যায় তিনি পজিটিভ। এরপরই ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। পরে সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় শালবনির করোনা হাসপাতালে। 

অক্সিজেন সরবরাহ বাধা দিলে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে, ভারতে করোনা সুনামি চলছে বলেও মন্তব্য আদালতের ...

শালবিন হাসপাতালে আসার পর থেকেই অসংলগ্ন আচরণ করছিলেন ওই ব্যক্তি। কখনও করোনা ওয়ার্ডের মূল গেট খুলে বাইরে বেরনোর চেষ্টা থেকে শুরু করে ভুল-ভাল বকছিলেন তিনি। চতুর্থ তলের কেবিন  ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু, এরপরও ওই ব্যক্তির অসংলগ্ন আচরণকে ঠেকানো সম্ভব হয়নি। শুক্রবার রাত ১১টার পর ওই ব্যক্তি নিখোঁজ হয়ে যান। হাসপাতালের তরফে মিসিং বলে সর্বস্তরে জানানোও হয়। রাতেই টর্চ নিয়ে হাসপাতালের আশেপাশে খোঁজাখুঁজিও চলে। কিন্তু কোথাও খোঁজ মেলেনি। সকাল ১০টা নাগাদ করোনা ওয়ার্ডের বাথরুমের নিচে থাকা জঙ্গল থেকে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। 

কোভিশিল্ডের দাম নিয়ে বিতর্কে সেরাম, পিঠ বাঁচাতে মুখ খুলল সংস্থা

ঘটনার তদন্ত করতে আসা পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে চার তলার বাথরুমের জানলা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে নিচে ঝাঁপ দিয়েছেন ওই ব্যক্তি। আপাততদৃষ্টিতে এটা আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছেন তারা। যদিও, আত্মহত্যার ঘটনা থেকে হাসপাতালের গাফিলতিকেই বড় করে দেখছেন মৃত পরিবার। দাসপুরের কলাইকুণ্ডা গ্রামে বাড়ি ওই মৃতর। তাঁর ভাইপো অভিষেক বেরা জানিয়েছেন, কাকা যে নিখোঁজ তাতে রাতে জানানোই হয়নি। শনিবার সকাল থেকে কাকাকে ফোন করেও তিনি পাননি। এরপর হাসপাতালের হেল্পলাইনে ফোন করে কাকার বিষয়টি নাকি জানিয়েছিলেন অভিষেক। এর খানিক্ষণ পরেই তিনি খবর পান যে তাঁর কাকার দেহ জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছে। তড়িঘড়ি পরিবারের লোকেদের নিয়ে হাসপাতালে চলে আসেন অভিষেক। তাঁর দাবি, কাকা আগে থেকে মানসিক রোগী ছিলেন না। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরই মানসিক অবসাদ শুরু হয়। কিভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরদারি এড়িয়ে এধরনের ঘটনা ঘটল তা আশ্চর্যের। হাসপাতালের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন। এদিকে, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাই চন্দ্র মণ্ডল বলেছেন, কিভাবে কি ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে শালবনী থানার পুলিশও।