সংক্ষিপ্ত
হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই আরও শক্তি বাড়িয়েছে জাওয়াদ। বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হয়েছে অতি গভীর নিম্নচাপ। এই মুহূর্তে জাওয়াদের অবস্থান রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর লাগোয়া পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে।
বাংলার (West Bengal) আকাশে দুর্যোগের কোনও শেষ নেই। একের পর এক দুর্যোগ লেগেই রয়েছে। এর আগে আমফান (Cyclone Amphan) ও ইয়াসের (Cyclone Yaas) জেরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। ভিটে হারা হতে হয়েছিল বহু মানুষকেই। ভারী বৃষ্টির (Heavy Rain) জেরে নষ্ট হয়েছিল বিঘের পর বিঘে ফসল। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘাতেও (Digha)। সেই ক্ষত সারিয়ে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল এইসব এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু, ফের একবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)। তার প্রভাবে উপকূলবর্তী জেলার পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আর এই ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের (Cyclone Jawad) জেরে আগাম সতর্কতা জারি করল পূর্ব মেদিনীপুর (Purba Medinipur district) জেলা প্রশাসন।
হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই আরও শক্তি বাড়িয়েছে জাওয়াদ। বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) ঘনীভূত হয়েছে অতি গভীর নিম্নচাপ (Depression)। এই মুহূর্তে জাওয়াদের অবস্থান রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর লাগোয়া পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। আর আগামীকাল সকালে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন দফতর। বিদুৎ দফতরের তরফেও একাধিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার জেলাগুলোতে টিম করে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ নিয়ে আগাম সতর্কবার্তা জারি করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন (District Administration)। শুক্রবার সকাল (Friday Morning) থেকেই দিঘা ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাগুলিতে লাগাতার প্রচার চালিয়ে মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন- সাইক্লোন জাওয়াদ আতঙ্ক, কোন জেলায় কত বৃষ্টি-জানাল হাওয়া অফিস
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাজী জানিয়েছেন, “আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে ঝড়ের ইমপ্যাক্ট আসতে চলেছে। তার ফল স্বরূপ শুক্রবার বিকেল থেকে সোমবার পর্যন্ত জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। তাই এই কয়েকটা দিন দিঘা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় পর্যটকদের সমুদ্রে নামার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মাইকে করে প্রচারও চালানো হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “গভীর সমুদ্রে মাছ (Fish) ধরতে যাওয়া সমস্ত ট্রলার, বোট ও নৌকোগুলোকে ফিরে আসার জন্য সতর্কবার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা পরিস্থিতির উপর প্রতিনিয়ত নজরদারী চালানো হচ্ছে। এরই পাশাপাশি ঝড় বৃষ্টিতে চাষের যাতে ক্ষতি না হয়ে যায় সেই কারণে জমিতে থাকা রবি শস্য দ্রুত তুলে নেওয়ার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়াও পান বরোজ, সবজি চাষের জমিগুলিতে যাতে জল না জমে যায় তার জন্য কৃষকদের আগাম সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।”
এই জেলাগুলিতে আমফান ও ইয়াসের স্মৃতি এখনও তাজা রয়েছে। আর সেই দুটি ঘূর্ণিঝড় থেকে শিক্ষা নিয়ে জাওয়াদের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে কোমর বেঁধে নামছে জেলা প্রশাসন। এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, "আমফান ও ইয়াসের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যে জেলার প্রতিটি ব্লক ও পুরসভাগুলিতে মোটর চালিত করাত, দড়ি, গামবুট, হেলমেট, টর্চ লাইট প্রভৃতি বিপর্যয় মোকাবিলা সামগ্রী আগাম বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে। ঝড়ে গাছ পড়লে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে থাকা সমস্ত আইলা সেন্টারগুলিকে তৈরি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"