সংক্ষিপ্ত

 মমতার দিল্লি সফরে মঙ্গলবার তৃণমূলে যোগ দেন হিন্দি বলয়ের তিন প্রাক্তন সাংসদ কীর্তি আজাদ, অশোক তনওয়ার এবং পবন বর্মা। এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি।

জাতীয় রাজনীতিতে (National Politics) কোনও না কোনওভাবেই খবরের শিরোনামে উঠে আসছে তৃণমূল (TMC)। ক্রমশই নিজেকে বিরোধী মুখ হিসেবে তুলে ধরছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যে রাজ্যে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Abhishek Banerjee)। এই পরিস্থিতিতে মমতার দিল্লি সফরের (Mamata Delhi Tour) সময় মঙ্গলবার তৃণমূলে যোগ দিলেন হিন্দি বলয়ের তিন প্রাক্তন সাংসদ কীর্তি আজাদ, অশোক তনওয়ার এবং পবন বর্মা। আর এনিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি (BJP)।

মঙ্গলবার আসানসোল দুর্গাপুরে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরোধিতা কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। প্রথমে দুর্গাপুরে মিছিল করেন তিনি। সমর্থকের সংখ্যা কম থাকলেও আসানসোল (Asansol) দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল (Agnimitra Paul) এবং দুর্গাপুরের বিধায়ক লক্ষণ ঘরুইকে নিয়েই পদযাত্রাও করেন। তারপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "দিল্লি (Delhi) গিয়ে নেতাদের যোগ দেওয়াচ্ছেন। আসলে তৃণমূল এখন ডাস্টবিন হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধাশ্রম। সব দলের বাতিল নেতাদের নিচ্ছে, তাদের কি দেবেন না দেবেন জানা নেই তবে পুনর্বাসন দেওয়ার ভালো জায়গা হয়েছে তৃণমূল।" 

আরও পড়ুন- রাজ্যে ফের বাড়ল দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া, কলকাতাকে নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

উল্লেখ্য এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন মমতা। সেখানে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। আগামীকাল সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা রয়েছে। মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিএসএফের (BSF) এক্তিয়ার বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক প্যাকেজের বিষয়ও তুলে ধরতে পারেন মমতা। ২০২০-২১ আর্থিক বছরে জিএসটি বাবদ ২ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্য বাংলার। পাশাপাশি আমফান, ইয়াস ইত্যাদি মোকাবিলা বাবদ ৩২ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এছাড়াও আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা, ন্যাশনাল হেলথ মিশন, জল জীবন মিশন-সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের টাকা বকেয়া রয়েছে রাজ্যের‌। সেই টাকাগুলি মেটানোর জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ত্রিপুরা প্রসঙ্গও উঠে আসতে পারে বলে জানা গিয়েছে। 

আরও পড়ুন- সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল ট্যাক্সি ও বাইক, দ্রুত গতিতে ছুটে এসে পরপর ধাক্কা মিনিবাসের

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর দেখা করার বিষয় নিয়েও কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "জরুরাত পরে মা-কা তো গাধা কহে কাকা। এখন হাঁড়ি চড়ছে না, বেতন হচ্ছে না তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়া। প্রধানমন্ত্রীর হাতে পায়ে ধরা ছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই।" 

আরও পড়ুন- 'মাঝে মধ্যে দিলীপ-সুকান্তর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি', রাজ্যপালকে কটাক্ষ পার্থর

প্রসঙ্গত, চলতি বছর জুলাইয়ে দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন মমতা। তখনও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। আর রাজ্যে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর সেটাই ছিল তাঁর প্রথম দিল্লি সফর। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর জয়ের পরই বাংলার পাশাপাশি অন্য রাজ্য দখলের দিকে ঝোঁকে তারা। ত্রিপুরা, অসম ও গোয়াকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে। পাশাপাশি ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করতে চাইছেন মমতা। আর সেই জোটের গুরুত্বপূর্ণ মুখ হিসেবে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করতে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি। কিন্তু, কোনওভাবেই তৃণমূলকে উৎখাত করতে পারেনি তারা। একাই গেরুয়া ঝড় আটকে দিয়েছিলেন মমতা। আর সেই কারণে জাতীয় রাজনীতিতেও মমতার উপরই ভরসা রাখছে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও সর্বভারতীয় দলগুলি। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয়বারের জন্য মমতার দিল্লি সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

YouTube video player