সংক্ষিপ্ত

বদলে যেতে চলেছে মুর্শিদাবাদের উত্তর প্রান্তের 'লাইফ লাইন'! রাজনৈতিক 'খেলা' র গভীর অভিসন্ধি মনে করছে বিরোধীরা।

বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকে যোগদান করতে মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলা সফরে আসছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Chief Minister Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর মুর্শিদাবাদ সফরকে সামনে রেখে রীতিমতো চমক দিতে চলেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী লোকসভা(loksabha election) ও পুর নির্বাচনকে(Municipal Polls) পাখির চোখ করেই নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছ কর্মসূচি। জোর দেওয়া হচ্ছে জেলার উত্তর প্রান্তের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটানোর ক্ষেত্রে। এমতাববস্থায় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের(jangipur) ওমরপুর থেকে ফুলতলা পর্যন্ত রাস্তা 'ফোর লেন' করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল প্রশাসন। প্রায় দীর্ঘ ৩ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে প্রায় ৪০কোটি টাকা। এরফলে জেলার ব্যবসা বাণিজ্যের অনেকটাই প্রসার ঘটবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হলে জঙ্গিপুরের পাশাপাশি লালগোলা, ভগবানগোলা সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন।

এদিকে স্থানীয়রা বহুদিন ধরেই ফোর লেন তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে সেই দাবিকেই পাল্টা হাতিয়ার করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে চলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এদিকে রাজনীতির জটিল হিসেব বাদ দিয়ে বাসিন্দারা রীতিমতো উচ্চসিত এই ফোর লেনকে নিয়ে। তারা বলছেন, রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হলে খুব সহজেই ওমরপুর থেকে লালগোলা পৌঁছনো যাবে। উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন-পুলিশের গান্ধীগিরি, ট্রাফিক আইন ভাঙলেই চালকদের হাতে তুলে দেওয়া হল গোলাপ ফুল

বর্তমানে ফুলতলা থেকে ওমরপুর ১০-১৫মিনিটের রাস্তা। কিন্তু যানজটের জন্য এই রাস্তা যেতে ৬০ মিনিটের বেশি সময় লেগে যায়। যানজটের ভয়ে অনেকে ঘুরপথে লালগোলা যান। এদিকে ফোর লেন প্রসঙ্গে এলাকার সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, “রাস্তা তৈরির কাজ শুরুর জন্য আমরা আধিকারিকদের বলেছি। আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে। জঙ্গিপুরে এই রাস্তায় যানজটের সমস্যা বহুদিনের। ফোর লেন হয়ে গেলে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।পিডব্লুডির ইঞ্জিনিয়ার অসীম ভকত বলেন, “আমরা এস্টিমেট তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। অনুমোদন পাওয়া গেলেই কাজ শুরু হবে।জঙ্গিপুরের বাসিন্দা মাসুম শেখ, বিউটি খাতুন, রানা দাস একযোগে বলেন বলেন, “ফোর লেন হওয়ার কথা বহুদিন ধরেই শুনে আসছি। কিন্তু এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সবসময় যানজট লেগে থাকে। সকালে ও বিকেলে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে ইচ্ছে করে না। ট্রাফিক পুলিশও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।এই স্বপ্ন যদি পূরণ হয় তাহলে জেলার উত্তর প্রান্তের উন্নতি আরও অগ্রগতি লাভ করবে। এই প্রসঙ্গে এলাকই বাসিন্দা বাপ্পা শেখ বলেন, “প্রাণ হাতে নিয়ে প্রতি মুহূর্তে যাতায়াত করতে হয়। রাস্তাটি ছোট। তার উপর আবার রাস্তাজুড়ে গর্ত রয়েছে। রাস্তাটি ফোর লেন হলে জেলার বাসিন্দাদের বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে

আরও পড়ুন-চন্ডীতলায় একই পরিবারের ৩ জনকে কুপিয়ে খুন, মূল অভিযুক্তের দেহ উদ্ধার রেললাইনে

তবে শহরের একাংশ মানুষ প্রশাসনিক তৎপরতার পরও কাজ শুরু হবে কি না, তা নিয়ে বিরোধীরা সন্দেহ প্রকাশ করেছে। এদিকে বিপির(BJP) জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত দাস বলেন, “এসব রাজনীতির খেলা, তৃণমূলের গভীর অভিসন্ধি। অতীতে সিপিএম সরকার চার লেনের গাজরের টোপ দেখিয়ে জঙ্গিপুর তথা জেলার উত্তর প্রান্তের বাসিন্দাদের বোকা বানিয়ে এসেছে। এবার তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী তার জেলা সফরকে সফল করতে সেই সঙ্গে আগামী দিনের লোকসভা পৌরনির্বাচনে নিজেদের জয়ের নিশ্চিতে এইসব সুদিনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা কোনও কিছু বিশ্বাস করতে রাজি নয়। তৃণমূল সরকার মুখে এক কথা বলে কাজে আরেক কথা করে দেখায়