সংক্ষিপ্ত
- আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে ৫০ টাকা ফিজ
- হাজার হাজার রোগীর ভরসা উদ্দালক ভট্টাচার্য
- ৬৫ বছর বয়সেও নিজের কাজে আজও অবিচল তিনি
- একের পর এক রোগী দেখে চলেছেন করোনা পরিস্থিতিতে
করোনা পরিস্থিতিতে কমবেশি সবাইকেই ডাক্তারের কাছে ছুটতে হয়েছে। কারোর বাড়িতে বসেই হয়েছে চিকিৎসা, কাউকে আবার ঘুরতে হয়েছে হাসপাতালে দরজায় দরজায়। তা, কত খরচ পড়েছে? মানে পকেটের ওপর চাপটা কেমন ছিল? বিল খুঁজছেন? হাজার টাকা খরচ নূন্যতম ধরেই এই লেখা শুরু করি।
ইংরেজেদের হাত ধরে আবিষ্কার..বাংলার প্রিয় খুব চেনা মিষ্টির এই অজানা তথ্যগুলো অবাক করবে
এই প্রতিবেদনে যাঁর কথা বলব, তিনি কোনও টিভি চ্যানেলে মুখ দেখান না, সেভাবে সেলিব্রিটি চিকিৎসক বলা যায় না তাঁকে। তবু লাখ লাখ মানুষের বড় ভরসার জায়গা তিনি। সেই সব মানুষগুলো তাঁকে দেবতাজ্ঞানে পুজো করে, কেন জানেন ? হাজার নয়, এমনকী একশ-ও নয়। তাঁর কাছ মানুষ চিকিৎসা পান মাত্র ৫০ টাকায়।
অবসর নেওয়ার পরেও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন হাসি মুখে, ট্রাফিক গার্ডদের অনুপ্রেরণা ভীম ছেত্রী
গত ৬-৭ বছর ধরে ৫০ টাকা ফিজ নিয়ে কাজ করে আসছেন বছর পয়ষট্টি-র এই চিকিৎসক। তার আগে ১৯৮৫ সালে ৫টাকায় চিকিৎসা করতেন তিনি। ২০০০ সালে স্থানীয় মানুষদের দাবিতে সেই ফিজ বাড়ে, তবে অতি সামান্য। তখন তিনি রোগীদের থেকে নিতেন মাত্র ১৫টি টাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে ২০১৪ সালে ফিজ বাড়িয়ে ৫০ টাকা করেন তিনি। তাঁর একটা কথা, মানুষের উপকার হলেই হলো। ফিজ বাড়ালে রোগীরা তা দিতে পারবে না, ফলে চিকিৎসাও করাতে আসবে না তাঁরা। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এরকম ভাবনাতেও ভাবা যায়, তা ভাবতেই অবাক লাগে। রোগীকে সুস্থ করে তোলার সাফল্যের পরিসংখ্যান নজরকাড়া। চিকিৎসক উদ্দালক ভট্টাচার্য মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের বড় ভরসা। একের পর এক গ্রামের মানুষ ছুটে আসেন তাঁর কাছে।
তবে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেকবার অসহায়তার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে, এজন্য রয়ে গিয়েছে বেশ কিছু আক্ষেপও। চিকিৎসক হিসেবে যথাসাধ্য চেষ্টার পরেও পরিকাঠামোর অভাবে প্রাণ যেতে দেখেছেন চোখের সামনে, যা আজও কষ্ট দেয় তাঁকে।
লকডাউনে 'লক্ষ্মীশ্রী', অভুক্তদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন বাড়ির মহিলারা
যতদিন পারবেন, মানুষের সেবায় ব্রতী থাকবেন বলেই জানালেন চিকিৎসক। করোনা পরিস্থিতি মানুষকে খুব অসহায় করে তুলেছে, সেই অসহায়তা থেকে বাদ পড়েননি চিকিৎসকরাও, তবু লড়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তাই চিকিৎসক দিবসকে করোনা চিকিৎসক শহিদ দিবস বলেই ভাবতে চান এই প্রবীণ চিকিৎসক। তবেই তাঁদের উপযুক্ত সম্মান দেওয়া হবে বলে মনে করেন তিনি।