সংক্ষিপ্ত
- বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শল্যবিভাগ অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল
- রোগীর ফুসফুস এবং যকৃৎ থেকে সফল ভাবে বের করলো হাইডাটিড সিস্ট
- এই সিস্ট দুটির মাপ প্রায় টেনিস বলের সমান
বড় অস্ত্রোপচারে সফল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। পরিকাঠামো নেই। অথচ বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শল্যবিভাগ অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল। রোগীর ফুসফুস এবং যকৃৎ থেকে সফল ভাবে বের করলো হাইডাটিড সিস্ট। এই সিস্ট দুটির মাপ প্রায় টেনিস বলের সমান।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই সিস্টের জন্ম হয় কুকুরের শরীরে থাকা ফিতাকৃমি থেকে। কোনও ভাবে মানুষের শরীরে ওই কৃমি ঢুকে গেলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে বাসা বাঁধে এই ধরনের সিস্ট। ৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে রোগীর শরীর থেকে বের করা হয় ওই দুটি সিস্ট। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচারে সুস্থ হয়ে উঠছেন ওই রোগী। চিকিৎসকদের সাফল্যে খুশি রোগীর পরিবারও।
জানা গিয়েছে গত ৯ মাস ধরে কাশি ও কাশির সঙ্গে রক্তপাত হতো বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বাদুলাড়া গ্রামের গৃহবধু মর্জিনা বিবির। গত ১৫ জুলাই এই সমস্যা নিয়ে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন তিনি। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শল্যবিভাগ ইউনিট রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষার পরামর্শ দেয়। চিকিৎসকরা রিপোর্টের মাধ্য়মে জানতে পারেন, ডান দিকের ফুসফুসে ও যকৃতের মধ্যে বিরল দুটি সিস্ট তৈরি হয়েছে। সাদা রংয়ের সিস্ট দুটির আকৃতি টেনিস বলের মতো।
এই দুটি সিস্টের মধ্যেও তৈরি হয়েছিল ছোট ছোট কয়েকশ সিস্ট। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বিষয়টি বুঝতে পেরে আর দেরি করেননি চিকিৎসকরা । কার্ডিথোরাসিক পরিকাঠামো বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেই। ফুসফুস থেকে সিস্ট বের করতে হলে এই পরিকাঠামোর প্রয়োজন। কিন্তু অপারেশন থিয়েটার উন্নত এবং অ্যানেসথেসিয়া ইউনিট অত্যন্ত দক্ষ হওয়ায় এই ঝুঁকি নেওয়া হয়।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক উৎপল দে জানান, গত ২৪ জুলাই রোগীর শরীরের পাঁজর ও পেটের একাংশ কেটে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়েছে ওই সিস্টগুলি। কয়েকদিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা এই সাফল্যে খুব খুশি।
অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ মর্জিনা বিবি। স্বামী বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ডে পাউরুটি বিক্রি করেন। একদিকে পরিবারের আর্থিক সমস্যা আর অন্যদিকে জটিল রোগে জেরবার ছিলেন। বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করার মতো সামর্থও ছিল না। এখন সুস্থ হয়ে খুশি সেই রোগিনীও।