সংক্ষিপ্ত
- জমি দখল করে নিয়েছে নিকটাত্মীয়েরা
- ঘর বানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায়
- প্রশাসনের কাছে সুবিচার পাচ্ছেন না কার্গিল যুদ্ধে সৈনিক
- বীরভূমের নলহাটির ঘটনা
আশিষ মণ্ডল, বীরভূম: লাদাখে চিনা হামলায় ক্ষোভে ফুঁসছে আমজনতা। দেশে সর্বত্রই যখন শহিদদের বন্দনা চলছে, তখন এ রাজ্যে প্রশাসনের কাছ থেকে সুবিচার না পেয়ে হতাশ কার্গিল যুদ্ধের সৈনিক। তাঁর আক্ষেপ, 'দেশের জন্য প্রাণ দিতে পারিনি বলে সুবিচারও পাচ্ছি না।' ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমে নলহাটিতে।
আরও পড়ুন: রাজ্য় ভাড়া বৃদ্ধির পক্ষে নয়, বাস মালিকদের বলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
মাবুদ আলি। বাড়ি বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের হামিদপুর গ্রামে। কখনও ভোপাল, কখনও গুজরাত, তো কখনও শ্রীনগর, দীর্ঘদিন সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন মাবুদ। এমনকী, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধের সময় লড়েছেন পাক-হানাদারদের বিরুদ্ধেও। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন ২০১৩ সালে। এখন আর কিছু করেননি, বাড়িতে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন প্রাক্তন এই জওয়ান।
মাবুদ আলির অভিযোগ, তাঁর জমি দখল করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করেছেন দুই নিকট আত্মীয়। সুবিচারের আশায় স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিডিও-র দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি, বিডিও থেকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না। তারপর? সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানের দাবি, থানা থেকে রীতিমতো অপমান করে তাড়িয়ে দেন পুলিশকর্মীরা। এরপর নিরুপায় হয়ে আদালতে মামলা করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে না পুলিশ। এখন সুবিচার পাওয়ার আশা কার্যত ছেড়েই দিয়েছেন মাবুদ আলি। সবটাই ছেড়ে দিয়েছে ভাগ্যের হাতে। কার্গিল যুদ্ধের সৈনিক মাবুদ আলি বলেন, 'কয়েক দিন আগে চিন সীমান্তে আমাদের ২০ জন সেনা কর্মী শহিদ হলেন। প্রশাসনের উদ্যোগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য হল তাঁদের। নেতা-মন্ত্রীরাও ছুটে গেলেন। কিন্তু আমরা দেশের জন্য প্রাণ দিতে পারিনি বলে সুবিচারটুকু পাচ্ছি না।'
আরও পড়ুন: ছন্দে ফিরছে পর্যটন, খুলছে দার্জিলিং-এর দরজা, রইল বিস্তারিত তথ্য
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানু ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে অবশ্য বিডিও-কে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিবানী মাল। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, 'অভিযুক্তরা গায়ের জোরে কাজ করছেন। কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা কথা শোনেনি।' নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের বিডিও হুমায়ূন চৌধুরী বলেন, 'আমি অভিযোগ পাওয়ার পর কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলেছি। কেন পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি দেখছি।' প্রশাসনের তরফে হস্তক্ষেপে প্রতিশ্রুতি তো মিলেছে। কিন্তু তাতে আদৌও কাজ হবে না তো? প্রশ্ন উঠেছে।