সংক্ষিপ্ত

 মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে মাইলফলক, সিপিএমের জেলা সম্পাদকের পদে রদবদলে নয়া সমীকরণ বামেদের। সিপিএমের জেলা সম্পাদকের পদে  সংখ্যালঘু নেতা এনে রদবদল শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সর্বস্তরে। 

 মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে মাইলফলক। সিপিএমের জেলা সম্পাদকের (CPM district secretary )পদে রদবদলে নয়া সমীকরণ বামেদের। সিপিএমের জেলা সম্পাদকের পদে  সংখ্যালঘু নেতা এনে রদবদল শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সর্বস্তরে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঘিরে উঠতে শুরু করেছে একাধিক রাজনৈতিক প্রশ্ন। তাহলে কি এবার  আসন্ন পুরো নির্বাচনে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা জেলা সিপিএমের সম্পাদক  নৃপেন চৌধুরিকে সরিয়ে প্রাক্তন রাজ্য ডিওয়াইএফআইয়ের সম্পাদক জামির মোল্লাকে ( Former state DYFI secretary Jamir Molla) হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই রদবদল বামেদের ইতিহাসে আগামী দিনে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

মুর্শিদাবাদ জেলায় দুই শিবিরে বিভক্ত সিপিএম

বিশেষ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ভোটাভুটি এড়াতে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ছাড়াও রামচন্দ্র ডোম সহ একাধিক শীর্ষনেতাদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সম্পাদক হিসেবে জামির সাহেবের নাম প্রস্তাব করা হয়। দ্বিতীয় কোনও নাম উঠে আসেনি। অধিকাংশ প্রতিনিধি তাঁকেই সমর্থন করেন। দলের মধ্যে নানান কারণ বিশ্লেষণ এর পরেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সম্প্রতি গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির দলের সঙ্গে জোট করা নিয়ে সিপিএমের অন্দরেই মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে একাধিক নেতা প্রশ্ন তোলেন। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, ওই দুই দলের সঙ্গে জোট করার জন্যই বিধানসভা নির্বাচনে দল পিছিয়ে গিয়েছিল। এমনকি মুর্শিদাবাদ জেলায় তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তবে এই নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় দুই শিবিরে বিভক্ত সিপিএম।যেখানে রাজ্য নেতৃত্তের পক্ষপাতিত্ব অনুসরণ করে যাওয়া এক দলের বক্তব্য পার্টি নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই মানতে হবে জেলা নেতৃত্বকে। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত মানা হবে না। অন্যদিকে আরেকদলের  বক্তব্য, মুর্শিদাবাদ জেলাতে কিভাবে রাজনীতি করতে হবে তা ঠিক করবে স্থানীয় নেতৃত্ব ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অধিকার একমাত্র তাদেরই থাকা দরকার।

সিপিএমের ভোটব্যাঙ্কের একটা বড় অংশ শাসকদলে চলে গিয়েছে

এদিকে শত কাণ্ডের মধ্যে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুর্শিদাবাদ জেলার দীর্ঘদিনের সম্পাদক পদে কে বসবেন তা নিয়ে বহুদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। দুই গোষ্ঠীর দুই নেতার নাম নিয়ে চর্চা চলছিল। অবশেষে জামির সাহেবকে বেছে নেওয়া হয়। নেতৃত্বের একাংশের দাবি, তৃণমূল ও গেরুয়া শিবির কে রুখতেই সংখ্যালঘু মুখ সামনে এনে মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন করে ঘুঁটি সাজানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে। এই জেলার সমস্ত প্রান্তেই এখন তৃণমূলের দাপট রয়েছে। একসময় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ওই এলাকাগুলি বামেদের শক্ত ঘাঁটি ছিল। তারা সেইসমস্ত এলাকায় নতুন করে সংগঠনের তৈরীর পরিকল্পনা করেছে। দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সিপিএমের ভোটব্যাঙ্কের একটা বড় অংশ শাসকদলে চলে গিয়েছে।ফলে সংখ্যালঘু মুখ সিপিএমের জেলা সম্পাদক এর নেতৃত্বে মুর্শিদাবাদে আশায় আগামী দিনের নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ হবে বলেই মনে করছে জেলার ওয়াকিবহাল মহল। এদিকে এই কাণ্ড প্রকাশ পেতেই নানা সমীকরণ তৈরি হতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।

'দলের অভ্যন্তরে গণবিদ্রোহের রূপ' 

একদল মনে করছে, সিপিএমের কাছে এখন  'ফরওয়ার্ড লাইন' 'খেলা' ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে তাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে যা যুগান্তকারী। অন্যদিকে আরেকদল মনে করছে,' সিপিএমের অন্দরে দীর্ঘদিন ধরে চাপা উত্তেজনা চলছিল। জেলা সম্পাদকের এই পদ কে কেন্দ্র করে কয়েক দশক ধরে যা শেষ পর্যন্ত দলের অভ্যন্তরে গণবিদ্রোহের রূপ এই চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। সিপিএমের ভবিষ্যৎ এই জেলায় এবার নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে"। তবে বাম নেতারা অবশ্য পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলছে,"মানুষের দাবী মেনে আর সময় এর উপযোগিতা বুঝেই এমন সিদ্ধান্ত। রেজিমেন্টের পার্টিতে এটাই স্বাভাবিক ।' আগামী দিনে এমন সিদ্ধান্তে লাল পার্টির ভবিষ্যৎ কোন দিকে নিয়ে যায় সেদিকেই এখন চেয়ে রয়েছে সকলে।