সংক্ষিপ্ত
- বীরভূমের নলহাটির স্কুলের ঘটনা
- ছাত্রদের চুল কেটে দিলেন প্রধান শিক্ষক
- হাল ফ্যাশনের চুলের স্টাইল করছিল পড়ুয়ারা
- সতর্ক করে কাজ না হওয়ায় পদক্ষেপ প্রধান শিক্ষকের
কারও চুলে সোনালি আভা, কারও আবার হাল্কা বাদামি। কারও মাথার ঢেউ খেলানো চুলে কপাল, কান সবই ঢেকে গিয়েছে। স্কুলের ছাত্রদের একাংশের যে পাঠ্য বইয়ের থেকে চুলের স্টাইলে মন বেশি, কিছুদিন ধরেই তা লক্ষ্য করেছিলেন প্রধান শিক্ষক। চুলে রং করে বা বাহারি ছাঁট দিয়ে স্কুলে আসা যাবে না বলে নোটিশও ঝুলিয়েছিলেন। তার পরেও সাধের চুলের স্টাইল যে ছাত্ররা ত্যাগ করতে পারেনি, তাদের চুল নিজের হাতেই কেটে দিলেন প্রধান শিক্ষক। তাঁর এই সিদ্ধান্তে খুশি অভিভাবকরাও।
মঙ্গলবার হাতে কাঁচি তুলে নিয়ে কার্যত নাপিতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের লোহাপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ। প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, সিনেমায় দেখেই হোক বা অন্য কোনওভাবে প্রভাবিত হয়ে হাল ফ্যাশনের চুলের স্টাইল করছিল বেশ কিছু ছাত্র। কেউ কেউ আবার চুলে সোনালি, লাল বা সাদা রং করে স্কুলে আসছিল। এতে স্কুলের পঠনপাঠনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। অন্যান্য ছাত্ররাও প্রভাবিত হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে অভিভাবকদের ডেকে কয়েকদিন আগে সতর্ক করে দেন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু তার পরেও শুধরোয়নি কয়েকজন ছাত্র।
এ দিন তাই প্রস্তুত হয়েই ছিলেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ। স্কুল শুরু হওয়ার পর একে একে পাঁচ ছাত্রকে ডেকে কাঁচি হাতে তাদের চুল কেটে দেন তিনি। তবে চুলের যে অংশে রং করা রয়েছে, বা বাহারি ছাঁট দেওয়া দেওয়া ছিল, সেটুকুই বাদ দিয়ে দিয়েছেন মাস্টারমশাই।
প্রধান শিক্ষক বলেন, 'এভাবে হাল ফ্যাশনের ছাঁট দিয়ে স্কুলে এলে অন্য ছাত্রদের মধ্যেও এই প্রবণতা সংক্রমিত হয়। তাই প্রথমে অভিভাবকদের ডেকে সতর্ক করেছিলাম। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এমনটা করা না হলে ছাত্রদের মধ্যে দিন দিন এ ভাবে চুল কাটার প্রবণতা বেড়ে যাবে। তাই কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।' প্রধান শিক্ষকের এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন অভিভাবকরা। শেফালী বিবি, নাড়ুগোপাল মালরা বলেন, “প্রধান শিক্ষক সঠিক কাজ করেছেন। আমরা এতদিন বার বার বলেও যা পারিনি তা প্রধান শিক্ষক করে দেখিয়েছেন। এর ফলে সমস্ত ছেলেরা সচেতন হবে। ভদ্রভাবে চুল কাটাবে।'
স্কুলের মধ্যে প্রধান শিক্ষক চুল কেটে দিলেও খুব একটা ক্ষোভ নেই ছাত্রদেরও। ষষ্ঠ শ্রেণির রাজেন মাল, সন্তু মালরা বলে, 'আমরা সিনেমার নায়কদের মতো সাজার জন্য এইভাবে চুল কেটে রং করিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষক কেটে দিয়েছেন বলে তাতে আমাদের কোনও দুঃখ নেই। এভাবে আর চুক রাখব না। স্যর আমাদের সচেতন করে দিয়েছেন।'