সংক্ষিপ্ত

জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সুমন দাস আজিমগঞ্জ পুরসভার মহিলা সংরক্ষিত আসন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার স্ত্রী মৌমিতা সরকার দাসের টিকিট পেতে দলের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু দল তাকে প্রার্থী না করায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে জোড়া পাতা প্রতীকে স্ত্রীকে দলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামিয়ে দেন সুমন। 

পুর ভোট (Municipal Election 2022) পর্ব মিটে গিয়ে এখন পুর বোর্ড গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কিন্তু ডান থেকে বাম (Left), বিজেপি (BJP) থেকে শাসক দল (TMC) প্রত্যেকেরই দেওয়াল লিখন ঝক ঝক করছে শহরের প্রায় সব দেওয়ালে। তা নিয়ে হুঁশ নেই কারোর। আর এসবের মধ্যেই সমাজ সচেতনতার অনন্য নজির তৈরি করতে এগিয়ে এলেন মুর্শিদাবাদেরই আজিমগঞ্জ পুরসভার  নির্দল প্রার্থী মৌমিতা সরকার দাস। উদ্যোগ নিয়ে তিনি তাঁর দেওয়াল লিখন মুছে ফেলতে শুরু করলেন। আর এই কাজকে রীতিমতো কুর্নিশ জানাচ্ছেন শহরের সকল শ্রেণীর বাসিন্দারা।

একজন নির্দল প্রার্থীর এই চেতনা বোধ দেখে খুশি মূল ধারার রাজনীতিবিদরাও। জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ সভাপতি সুমন দাস আজিমগঞ্জ পুরসভার মহিলা সংরক্ষিত আসন ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার স্ত্রী মৌমিতা সরকার দাসের টিকিট পেতে দলের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু দল তাকে প্রার্থী না করায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে জোড়া পাতা প্রতীকে স্ত্রীকে দলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামিয়ে দেন সুমন। 

জানা যায়, নৈতিকতার প্রশ্নে স্ত্রীর মনোনয়ন পত্র জমা করার আগে সুমন দলীয় পদ থেকে অব্যহতি নেন। ভোট গণনা শেষে দেখা যায় দলীয় প্রার্থী রঞ্জনা সিংহকে পিছনে ফেলে জয় লাভ করেছেন স্থানীয় শ্রীপৎ সিং কলেজের সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপিকা মৌমিতা। জেলার অন্যতম ধৃতি ফাউন্ডেশনের সম্পাদক মৌমিতা সেবা মুলক কাজে ইতিমধ্যে পরিচিত মুখ। ফলে ভোট পর্ব মিটে যেতে পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এবং দৃশ্য দূষণের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে দেওয়াল লিখন মুছে ফেলবেন এটাই স্বাভাবিক।

এই ব্যাপারে প্রবীন শিক্ষক সমীর ঘোষ, চিত্র শিল্পী রিন্টু চক্রবর্তী বলেন,”একজন সমাজ সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের দেওয়াল মুছে ফেলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন ওই নির্দল কাউন্সিলর। আমাদের মনে হয় এখান থেকে সকল প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলির শিক্ষা নেওয়া উচিৎ।” 

এই ব্যাপারে মৌমিতা সরকার দাস বলেন,”একজন নাগরিক হিসেবে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেকথা মাথায় রেখে দেওয়ালগুলিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। কাউন্সিলর হিসেবেও আগামী দিনগুলিতে সমাজ কল্যাণে কাজ করার জন্য সচেষ্ট থাকব ।”

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মুর্শিদাবাদের ৭ পুরসভার বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে বলে বিশেষ সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। শাসকদলের তরফে প্রায় প্রত্যেকটি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে যাঁরা বসবেন, তাঁদের নাম রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যের সিলমোহর দেওয়ার পরই বোর্ড গঠন করা হবে। সূত্রের খবর, বহরমপুর, বেলডাঙা, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, কান্দি, জঙ্গিপুর ও ধুলিয়ান পুরসভার প্রত্যেকটিতে নাম চূড়ান্ত করেছেন ঘাসফুল শিবিরের নেতারা।