সংক্ষিপ্ত
যা ঘটেছে, তা কোনওভাবেই কাম্য নয় বলে ব্যাখ্যা করেছে তদন্ত কমিটি। রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে মেন হস্টেলের বাকি ব্লকগুলি, যেমন বি, সি, ডি ও এ-১ ব্লকগুলি অপেক্ষাকৃত নিরাপদ পড়ুয়াদের জন্য।
আতঙ্ক কাটেনি। ৯ই অগাষ্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকে ব়্যাগিংয়ের ফলে মৃত্যুর যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে এখনও ভীতি কাটেনি কোনও পড়ুয়ার। এরই মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে নয়া তথ্য। জানা গিয়েছে যে ব্লকে পড়ুয়াকে ব়্যাগিং করা হয়েছিল, তা ছিল গোটা বিশ্ববিদ্যালেয়র ত্রাস। ওই অঞ্চল নাকি পড়ুয়াদের মধ্যে মোস্ট নটোরিয়াস ও ফিয়ার সাইকোসিস বলে পরিচিত ছিল।
যা ঘটেছে, তা কোনওভাবেই কাম্য নয় বলে ব্যাখ্যা করেছে তদন্ত কমিটি। রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে মেন হস্টেলের বাকি ব্লকগুলি, যেমন বি, সি, ডি ও এ-১ ব্লকগুলি অপেক্ষাকৃত নিরাপদ পড়ুয়াদের জন্য। সেই এলাকা ব়্যাগিংশূন্য না হলেও, এত বাড়াবাড়ি কোথাও হয় না। কিন্তু এ-২ ছিল এই ঘরণের ঘটনার খাসতালুক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের নরম মনোভাবকেই বারংবার রিপোর্টে দায়ী করেছে ১০ জন সদস্যের তদন্ত কমিটি। এই তথ্য অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির বৈঠকেও পেশ করা হবে বলে জানা গেছে। এর ভিত্তিতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠছে, হস্টেল সুপারের নজরদারিতে থাকলেও কীভাবে এই অরাজকতা চলত পারে। তদন্ত কমিটি জানাচ্ছে প্রাণভয়ে নাকি হস্টেল পরিদর্শনেও যেতেন না সুপার। ফলে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস অপরাধের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-২ ব্লক।
তদন্ত কমিটি আরও জানিয়েছে এই ফিয়ার সাইকোসিস বছরের পর বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে। প্রতি সেশনে ১২-১৪ মাস ধরে একটানা জুনিয়রদের ওপর অত্যাচার চলে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ হল
১. ক্যাম্পাস ও হস্টেলে পাসআউট পড়ুয়াদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক
২. ইউজি তৃতীয় বর্ষের মোট ৫জন পড়ুয়াকে চারটি সেমেস্টারের জন্য সাসপেন্ড ও সারা জীবনের মত হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হোক।
৩. ১১জন সিনিয়র পড়ুয়াকে দুটি সেমেস্টারের জন্য ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কার করা হোক ও সারাজীবনের জন্য হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হোক
৪. সব মিলিয়ে এ-২ ব্লকের মোট ৯৫ জন সিনিয়র পড়ুয়াকে হস্টেল থেকে চিরতবে বিদায় জানানো হোক।