সংক্ষিপ্ত

বুধবার সকালেই তদন্তকারী সংস্থার দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুকন্যা। ইডির আধিকারিকরা দাবি করেন যে, সুকন্যা জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁদের সাথে অসহযোগিতা করেছেন।

ইডির তদন্তকারীদের নজরে ছিলেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মন্ডল। বুধবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে গ্রেফতার করা হল সুকন্যা মন্ডলকে। দিল্লিতে তাঁকে ৩ বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তিন বারই ইডির তলব এড়িয়ে গিয়েছিলেন কেষ্ট-কন্যা। বুধবারও তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তরফে।

বুধবার সকালেই তদন্তকারী সংস্থার দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন সুকন্যা। ইডির আধিকারিকরা দাবি করেন যে, সুকন্যা জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁদের সাথে অসহযোগিতা করেছেন। তার পরই আজ সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসেই তাঁকে এক বার তলব করা হয়। কিন্তু তিনি হাজিরা এড়ান। তার আগের বার আইনজীবী মারফত চিঠি দিয়ে সুকন্যা বেশ কিছু দিন সময় চেয়েছিলেন। তৃতীয় বারও তিনি ইডির তলব এড়ান। হাজিরা এড়ানোর কারণ হিসাবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানানো হয়, সুকন্যা শারীরিক ভাবে অসুস্থ।

গত বছর অগস্টে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরই সুকন্যাকে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তারা দাবি করে, বিপুল সম্পত্তি সম্পর্কে কেষ্ট-কন্যার কাছে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু তিনি সদুত্তর দেননি। তিনি জানিয়ে দেন, ওই সব প্রশ্নের উত্তর তাঁর বাবা এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিই (যিনি এখন ইডি হেফাজতে) দিতে পারবেন। ইডি সূত্রে খবর, ওই কারণেই অনুব্রত এবং সুকন্যাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হয়।

এদিকে, চাকরিতে প্রভাব খাটানো থেকে শুরু করে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, নানা অভিযোগ অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ইডি সূত্রে দাবি, সুকন্যার নামে ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকা গচ্ছিত আছে। ১৬ কোটি টাকার একটি ফিক্সড ডিপোজ়িট রয়েছে তাঁর নামে। এ ছাড়া, বীরভূমে সুকন্যার মালিকানায় রয়েছে বিঘা বিঘা জমি।

গত নভেম্বর মাসে গরু পাচার-কাণ্ডেই পর পর তিন দিন দিল্লিতে ইডি-র দফতরে হাজিরা দেন সুকন্যা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছিল, খাতায়-কলমে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির উৎস কী, তা নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় সুকন্যাকে। তবে সম্পত্তির এত বাড়বাড়ন্ত সংক্রান্ত কোনও প্রশ্নেরই সঠিক জবাব দিতে পারেননি সুকন্যা। তারপরেই এই গ্রেফতারি বলে জানা যায়।

অভিযোগ, শাসকদলের নেতা হিসাবে অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে মেয়ের এই সরকারি চাকরি পাকা করেছেন। কী ভাবে কোন পরীক্ষা দিয়ে সুকন্যা প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। সুকন্যার চাকরি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বার বার। সরকারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষিকা হিসাবে চাকরি করতেন সুকন্যা। এও অভিযোগ উঠেছিল, সুকন্যা নাকি স্কুলে না গিয়েই দিনের পর দিন বেতন নিয়েছেন। ইডির আরও অভিযোগ, সুকন্যা বাবার যাবতীয় ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। সেই সংক্রান্ত সব তথ্যই তাঁর কাছে আছে।