Kasba Law College Incident: কসবা ল কলেজে আইনের ছাত্রী গণধর্ষনের ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক। খতিয়ে দেখা হচ্ছে তার ভূমিকাও। বিশদে জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন… 

Kasba Law College Incident: কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে গ্রেফতার কলেজের নিরাপত্তারক্ষী। গ্রেফতার নিরাপত্তা রক্ষীকে পুলিশি জেরা। কসবা কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা সংখ্যা বেড়ে চার। নিরাপত্তারক্ষীর কাছে সাহায্য চেয়েও সাহায্য পায়নি অভিযোগ নির্যাতিতার। ঘটনার সময় ইউনিয়ন রুমের বাইরে পাহারায় ছিল অভিযুক্ত দুই আইনের পড়ুয়া। পুলিশি আতস কাঁচে এখন ধৃত গার্ডের ভূমিকা। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকেই কসবা আইন কলেজের ছাত্রীকে গণধর্ষনের ঘটনায় চড়ছিল উত্তেজনার পারদ। রাতেই তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার মধ্যে প্রকাশ্যে এলো আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতেই কলেজেরই বছর ৫৫-র নিরাপত্তারক্ষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ভিযোগকারিণী যে FIR করেছিলো সেই FIR-এর কপিতে সেখানে তিন অভিযুক্তকে J, M ও P বলে উল্লেখ করেছেন অভিযোগকারিণী। পুলিশের কাছে জানানো অভিযোগে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন নির্যাতিতা। 

FIR-এ তিনি লিখেছেন, ''বুধবার বেলা ১২টা ৫-এ পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপের জন্য কলেজে যান। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর অন্যদের সঙ্গে তিনি ইউনিয়ন রুমে বসেছিলেন। সেই সময় কলেজের প্রাক্তনী এবং কর্মী J আমাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন। প্রাক্তনী হলেও J কলেজের TMCP-র ইউনিট প্রেসিডেন্টের ভূমিকা পালন করেন। কলেজে তাঁর প্রবল প্রতাপ। সবাইকে তাঁর কথা শুনে চলতে হয়। তিনিই পড়ুয়াদেরকে TMCP-র নানা পদে বসান। সেভাবেই আমাকে গার্লস সেক্রেটারি করেন। বাকিরা চলে গেলে, বিকেল ৪টে নাগাদ আমিও বাড়ির দিকে পা বাড়াই। তখনই আমাকে বাধা দেওয়া হয়, এবং ইউনিয়ন রুমে বসিয়ে রাখা হয়।''

জানা গিয়েছে, সন্ধের পরই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। FIR-এ নির্যাতিতা লিখেছেন, ''সন্ধে ৬টা নাগাদ J আমাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে বলেন, প্রথম দিন থেকে তিনি আমাকে পছন্দ করেন এবং তাঁর গার্লফ্রেন্ড থাকা সত্ত্বেও আমাকে ভালবাসেন। এমনকী বিয়ের প্রস্তাবও দেন। আমি বলি, আমার বয়ফ্রেন্ড রয়েছে, আমি তাঁকে ভালবাসি, তাঁকে ছাড়া সম্ভব নয়।''

অভিযোগকারিণীর দাবি, ''এরপর কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দিয়ে P ও M ফের তাঁকে জোর করে ইউনিয়ন রুমে নিয়ে যান। আমি J-এর পায়েও ধরি। কিন্তু আমাকে ছাড়েননি। J আমাকে নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নিয়ে যেতে বলেন, এবং রক্ষীকে বাইরে বের করে দিতে বলেন। P ও M জোর করে আমাকে গার্ডের রুমে নিয়ে যান। সেখানে J আমার পোশাক খুলে দেন, ধর্ষণ করেন। সেই সময় P ও M দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। বাধা দিতে চাইলে আমার বয়ফ্রেন্ডকে খুন ও বাবা-মাকে গ্রেফতারের হুমকি দেন। তারপরেও বাধা দিতে চাইলে ধর্ষণ করার সময় তুলে রাখা ২টি ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হয়। হুমকি দেওয়া হয়, যখনই ডাকা হবে, তখনই না এলে ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়া হবে। সেই সময় আমি একটা মৃতদেহের মতো পড়েছিলাম। ঘটনার পর ফের ইউনিয়ন রুমে নিয়ে গিয়ে কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেওয়া হয়।''

নির্যাতিতার এই বয়ানের ভিত্তিতেই প্রথমে শুক্রবার রাতে আটক করা হয় কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকে। তারপর বয়ানে অসঙ্গতি মেলায় ফের তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, ঘটনার সময় ওই রুম থেকে গার্ডকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। ফলে গার্ড সবকিছু জানলেও তিনি যে নিরুপায় ছিলেন সে কথাও এফআইআর-এ উল্লেখ করেছেন নির্যাতিতা তরুণী। এরপরই গার্ড রুমে তার ঠিক কী ভূমিকা ছিল? সমস্ত কিছু জানতে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করা হয় ওই নিরাপত্তারক্ষীকে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।