সংক্ষিপ্ত

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। মৃত্যু নিশ্চিতকরণ, আত্মহত্যার তত্ত্ব, অভিভাবকদের অপেক্ষা, FIR দায়েরে দেরি এবং ক্রাইম সিন নিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন উঠে এসেছে।

আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক খুনের প্রথম তদন্ত শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বর্তমানে সিবিআই এই ঘটনার তদন্ত করেছে। গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। কিন্তু গোটা ঘটনায় কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সবমিলিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সুপ্রিম কোর্টে- সেগুলি হলঃ

১। মৃত্যু নিশ্চিতকরণ

কলকাতা পুলিশের টাইম লাইন অনুযায়ী মৃতদের প্রথম দেখা যায় সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ। যদিও হাসপাতালের অনেকেই বলছেন তারা ৯টায় প্রথম দেখেন চিকিৎসকের দেহ। যাইহোক বেলা ১২টা ৪৪ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু নিশ্চিত করেন। প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় পরে। তিন ঘণ্টারও বেশি সময় পরে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। স্থানীয় থানায় খবর দেওয়া হলে তাদের বলা হয় এক মহিলাকে অচেতন অবস্থা পাওয়া গেছে। সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন তুলেছেন, মৃতদেহ কিনা তা জানতে ডাক্তারের প্রয়োজন নেই। কিন্তু ডাক্তাররা পুলিশকে জানাচ্ছেন যে একটি অচেতন দেহ রয়েছে। এটাও কী সম্ভব! কেন মৃতদেহ নিয়ে বিভ্রান্তি?

২। সুইসাইড তত্ত্ব

নির্যাতিতা তরুণীর বাবা ও মা কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছে তারা সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়েছিল। সেখানে জানান হয়েছিল তাদের মেয়ে অসুস্থ। এরপর ১১টা ১৫ মিনিটেফোন করে জানান হয় মেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। কিন্তু কলকাতা পুলিশের তদন্তের টাইম লাইনে শুধুমাত্র একটি ফোনের উল্লেখ রয়েছে। তাবলে দ্বিতীয় ফোনকলটি কার? পুলিশের দাবি পরিবারকে আত্মহত্যার কথা বলা হয়নি। তাহলে প্রশ্ন কে বলেছিল আত্মহত্যার কথা?

৩। অভিভাবকদের অপেক্ষা

কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা পিটিশন অনুযায়ী চিকিৎসকের বাবা ও মা বলেছেন, মৃতদেহ দেখার অনুমতি দেওয়ার আগে তাদের প্রায় ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছে রেখেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃতার মা বলেছেন, মেয়ের দেহ একবার দেখার জন্য তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতেপায়ে ধরেছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তবে পুলিশের টাইমলাইন অনুযায়ী অভিভাবকদের হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরেই সেমিনার হলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন তাহলে অভিভাবকরা অন্য কথা বলেছেন কেন? প্রশ্ন পুলিশ না অভিভাবক- কারা সত্য কথা বলেছেন।

৪। FIR দায়েরে দেরি কেন

কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট উভয়ই প্রশ্ন করেছে কেন একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছিল এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন অভিযোগ দায়ের করতে প্রায় ১৪ ঘণ্টা দেরি করল। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় গতকাল বলেছেন, দেহ উদ্ধারের প্রায় ১৪ ঘন্টা পরে এফআইআর দায়ের করা হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে প্রিন্সিপাল কেন আগেই এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিলেন না।

৫। ক্রাইম সিন

সিবিআই-এর বয়ান অনুযায়ী আরজি কর হাসপাতালের ক্রাইম সিন বদল করা হয়েছে। যদিও পুলিশ দাবি করেছেন বেলা সাড়ে ১০টা থেকেই ক্রাইম সিন সুরক্ষিত করা হয়েছে। প্রশ্ন মৃতদেহ উদ্ধারের এতপরে কেন ক্রাইম সিন সুরক্ষিত করা হল। ১৫ অগাস্ট রাতে হাসপাতালে তাণ্ডবের ঘটনা কেন, পুলিশ কেন ক্রাইম সিনে ভাঙচুর করতে দিল- তার উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।