সংক্ষিপ্ত
২০২১ সালে বিশ্বের কনিষ্ঠতম এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বিশ্ব রেকর্ডটি করেছিলেন তিনি। ন্যাশনাল এরোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা NASA থেকে 'সিটিজেন সায়েন্টিস্ট'-এর (NASA Citizen Scientist) স্বীকৃতি পেলেন উজ্জ্বল।
সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম, মফস্বলের সাধারণ স্কুলে পড়াশুনা করেও মহাকাশ ছোঁয়া যায়, পাওয়া যায় নাসার সম্মান! কঠোর পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে এমনটাই প্রমাণ করলেন উত্তর ২৪ পরগনার নিমতার যুবক উজ্জ্বল অধিকারী। ২০২১ সালে বিশ্বের কনিষ্ঠতম এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার (Aerospace Chartered Engineer) হিসেবে বিশ্ব রেকর্ডটি করেছিলেন তিনি। এবার ন্যাশনাল এরোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা NASA-র থেকে 'সিটিজেন সায়েন্টিস্ট'-এর (NASA Citizen Scientist) স্বীকৃতি পেলেন উজ্জ্বল। তাঁর দাবি, এই সম্মান এ বছরে ভারতে সম্ভবত তিনি একাই পেয়েছেন! তাই এই সম্মান একজন ভারতীয় হিসেবেও অত্যন্ত গর্বের।
কীভাবে পেলেন নাসার (NASA)এই খেতাব?
উজ্জ্বল জানান, প্রতি বছরই বিভিন্ন বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ বা কাজ করার অভিজ্ঞতা জানানোর জন্য নাসার (NASA)কাছে আবেদন করা যায়। এই আবেদন করতে পারেন যে কেউ। যে কোনও নাগরিক, গবেষক, বিজ্ঞানী অথবা বিজ্ঞানের ছাত্র-অনুরাগি এই প্রকল্পের আওতায় আবেদন করে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
উজ্জ্বল বলেন, “এই বছর নাসা-র পক্ষ থেকে অ্যাস্টরয়েড (Asteroid) বা গ্রহানু নিয়ে বিশেষ প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল। আমি এই গবেষণায় নতুন তিনটি গ্রহানুর (Asteroid) সন্ধান দিয়েছি নাসাকে। আমার প্রতিবেদনে ওই তিন নতুন গ্রহানুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছিলাম। তবে ভাবিনি NASA-র 'সিটিজেন সায়েন্টিস্ট'-এর জন্য নির্বাচিত হব।”
নিমতার উজ্জ্বল কাজের সূত্রে বর্তমানে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। সেখানেই একটি সংস্থায় বিমানের নকশা তৈরির কাজ করেন তিনি। বরাবরের মেধাবী উজ্জ্বলের স্বপ্ন ছিল মহাকাশ নিয়ে গবেষণা। উজ্জ্বল বলেন, “আমি পেশায় ইঞ্জিনিয়র, শখের সাহিত্যিক। চাকরি করি। নাসা গবেষণার কাজে ডাকলে সেখানেও যাব। তার জন্য চাকরিতে বিশেষ সমস্যা হবে না হয়তো। আমার খুঁজে পাওয়া গ্রহানুগুলিকে নিয়ে নাসার সৌজন্য ভবিষ্যতে হয়তো আরও জানার বা গবেষণার সুযোগ পাব।”
নিজেকে শখের সাহিত্যিক বললেও ইতালির প্যানোরোমা আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছেন উজ্জ্বল। তাঁর ভাগ্যে জুটেছে ভারতভূষণ সম্মান, ডক্টর এপিজে আব্দুল কালাম পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় রত্ন পুরস্কার। এছাড়াও ইন্ডিয়া প্রাইমের বিচারে সেরা ১০০ ভারতীয় লেখকদের তালিকায় তাঁর নাম উঠেছে।
উজ্জ্বল বলেন, “একজন বাঙালি হিসাবে সহজ-সরল ভাষায় বিজ্ঞান চর্চাকে আরও বোধগম্য করে তুলতে, আরও জনপ্রিয় করে তুলতে চাই। ছেলেবেলার চাঁদ-তারা দেখার ভাললাগাটাকে মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি ভালবাসায় রূপান্তরিত করতে চাই ছোটদের জন্য।”